পথরেখা অনলাইন : গত ৪ বছর ধরে ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কে যে শীতলতা চলছে, তার অবসান চান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। দুই দেশের পারস্পরিক সম্পর্কের মধ্যে যেসব সমস্যা রয়েছে, সেগুলো আলোচনার ভিত্তিতে সমাধান সম্ভব বলেও মনে করেন তিনি। মঙ্গলবার রাজধানী ইসলামাবাদে ‘পাকিস্তান মিনারেল সামিট’ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেহবাজ শরিফ বলেন, ‘আমরা সবার সঙ্গেই আলোচনা করতে প্রস্তুত, এমনকি আমাদের প্রতিবেশীর সঙ্গেও। প্রতিবেশীর উদ্দেশ্য আমি বলতে চাই, যেসব গুরুতর সমস্যা আমাদের সম্পর্কে কাঁটা বিছিয়েছে— আলোচনার টেবিলে সেগুলোর সমাধান সম্ভব। যুদ্ধ কোনো সমস্যার সমাধান হতে পারে না।’
‘কারণ এ পর্যন্ত আমরা যত যুদ্ধ করেছি, সেসব কেবল দুই দেশের দারিদ্র্য, বেকারত্ব ও ক্ষয়ক্ষতি বাড়িয়েছে। ফলে আমরা শিক্ষা-স্বাস্থ্য ও দারিদ্র্য সূচকে কোনো উন্নতি করতে পারিনি।’ ১৯৪৭ সালের আগস্টে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে স্বাধীনতা লাভের পর থেকে দুই প্রতিবেশী দেশ ভারত ও পাকিস্তানের সম্পর্ক কখনও উষ্ণ- আন্তরিক ছিল না। গত ৭৬ বছরে ৩ বার বড় ধরনের যুদ্ধে জড়িয়েছে এই দু’দেশ। এই টানাপোড়েনের প্রধান কারণ জম্মু ও কাশ্মির। ভারত এবং পাকিস্তান— উভয়ই জম্মু ও কাশ্মিরকে সম্পূর্ণ নিজেদের বলে দাবি করে আসছে স্বাধীনতার পর থেকেই। ‘ভূ-স্বর্গ’ নামে পরিচত এই রাজ্যের তিন ভাগের এক ভাগ এখনও পাকিস্তানের দখলে রয়েছে।
২০১৯ সালে ভারতের পার্লামেন্ট লোকসভায় সংবিধান থেকে স্বায়ত্বশাসিত রাজ্যের মর্যাদা বিলোপ করে সরাসরি কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করা হয় জম্মু ও কাশ্মিরকে। কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপির উদ্যোগেই এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল। এই ঘটনার পর থেকে চরম তিক্ততা শুরু হয় পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে। পাকিস্তান বেশ কয়েক বার জম্মু ও কাশ্মিরকে ফের স্বায়ত্বশাসিত রাজ্যের মর্যদা ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানালেও ভারত তাতে কর্ণপাত করেনি। মঙ্গলবারের বক্তব্যে জম্মু ও কাশ্মির ইস্যুটি সরাসরি না আনলেও ফের ভারতের উদ্দেশে একই দাবি জানিয়েছেন শেহবাজ শরিফ। শেহবাজ বলেন, ‘আমরা প্রতিবেশীর সঙ্গে সম্পর্কের উন্নয়ন করতে চাই— এটি যেমন সত্য, তেমনি আরও একটি সত্য হলো, যেসব অস্বাভাবিকতা আমাদের সম্পর্কের মধ্যে কাঁটা হয়ে বিঁধে আছে, সেগুলো অপসারণ করা জরুরি। নইলে আমরা প্রতিবেশীর সঙ্গে স্বাভাবিক হতে পারব না এবং আলোচনার ভিত্তিতে পারস্পরিক সমস্যার সমাধানের পথও বন্ধ থাকবে।’
পথরেখা/অআ