পথরেখা অনলাইন : নিবিড় চাষাবাদ ও আবহাওয়াজনিত কারণে আমন ধানে পোকামাকড়ের আক্রমণ দেখা দিতে পারে। পোকামাকড়ের প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে দমনের ব্যবস্থাপনা নিতে হবে। প্রধান প্রধান ক্ষতিকর পোকার আক্রমণ দমন করলে রোপা আমন মৌসুমে শতকরা ১৮ ভাগ ফলন বেশি পাওয়া যায়।
এলাকাভেদে আমন ধানের মুখ্য পোকাগুলো হলো-
মাজরা পোকা, বাদামি গাছ ফড়িং, পাতা মোড়ানো পোকা, চুংগি পোকা, সাদা পিঠ গাছ ফড়িং, সবুজ পাতা ফড়িং, গান্ধি পোকা, শীষকাটা লেদা পোকা ইত্যাদি।
পোকামাকড় দমনে জৈবিক ব্যবস্থাপনা
ধান ক্ষেতে ক্ষতিকারক পোকা দেখা গেলে এর সাথে বন্ধু পোকা, যেমন- মাকড়সা, লেডি বার্ড বিটল, ক্যারাবিড বিটল সহ পরজীবী ও পরভোজী পোকামাকড় সংরক্ষণ করতে হবে। ধানক্ষেতে ডালপালা পুতে দিয়ে মাজরা পোকা ও পাতা মোড়ানো পোকার আক্রমন অনেকাংশে কমানো যায়। আলোক ফাঁদ/সোলার লাইট ট্রাপের সাহায্যে মাজরা পোকা, পাতা মোড়ানো পোকা, সবুজ পাতা ফড়িং ও গান্ধি পোকার আক্রমন কমানো যায় । জমি থেকে পানি বের করে দিয়ে চুংগি পোকা, বাদামি গাছ ফড়িং এবং সাদা পিঠ গাছ ফড়িং পোকার আক্রমণ কমানো যায়।
পোকামাকড় দমনে রাসায়নিক ব্যবস্থাপনা
মাজরা পোকাঃ ধানের জমিতে শতকরা ১০-১৫ ভাগ মরা ডিগ অথবা শতকরা ৫ ভাগ মরা শীর্ষ পাওয়া গেলে অনুমোদিত মাত্রায় কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে।
গান্ধি পোকাঃ ধানের প্রতি গোছায় ২-৩টি গান্ধি পোকা দেখা দিলে অনুমোদিত মাত্রায় কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে। কীটনাশক বিকাল বেলায় প্রয়োগ করতে হবে।
পাতা মোড়ানো পোকা ও চুংগি পোকাঃ শতকরা ২৫ ভাগ পাতা ক্ষতিগ্রস্ত হলে অনুমোদিত মাত্রায় কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে।
শীষকাটা লেদা পোকাঃ ধানের ক্ষেতে প্রতি ১০ বর্গমিটারে ২-৫টি কীড়া পাওয়া গেলে কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে।
সবুজ পাতা ফড়িংঃ হাতজালের প্রতি টানে যদি একটি সবুজ পাতাফড়িং পাওয়া যায় এবং আশেপাশে টুংরো রোগাক্রান্ত গাছ থাকে তাহলে বীজতলা ও ধানের জমিতে অনুমোদিত কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে।
বাদামি গাছ ফড়িংঃ শতকরা ৫০ ভাগ ধান গাছে ২-৪টি ডিমওয়ালা স্ত্রী পোকা অথবা ১০টি বাচ্চা পোকা প্রতি গোছায় পাওয়া গেলে অনুমোদিত কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে।
শীষকাটা লেদা পোকাঃ ধানের ক্ষেতে প্রতি ১০ বর্গমিটারে ২-৫টি কীড়া পাওয়া গেলে কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে।
পোকার আক্রমন বেশি হলে মাজরা পোকা, পাতা মোড়ানো পোকা ও চুংগি পোকা দমনের জন্য সানটাপ ৫০ পাউডার প্রতি বিঘায় ১০ গ্রাম হারে ব্যবহার করতে হবে। মাজরা পোকা ও পাতা মোড়ানো পোকা দমনের জন্য ভিরতাকো ৪০ ডব্লিউজি প্রতি বিঘায় ১০ গ্রাম হারে ব্যবহার করতে হবে। বাদামি গাছ ফড়িং ও সাদা পিঠ গাছ ফড়িং দমনের জন্য মিপসিন ৭৫ পাউডার প্রতি বিঘায় ১৭৫ গ্রাম, পাইমেট্রোজিন ৪০ ডব্লিউজি ৬৭গ্রাম, ডার্সবান ২০ ইসি ১৩৪ মিলি হারে ব্যবহার করতে হবে।
তবে সঠিকভাবে পোকামাড় দমনের জন্য অবশ্যই নিকটস্থ কৃষি অফিসে যোগাযোগ করতে হবে।
পথরেখা/রাসু