পথরেখা অনলানইন : ভারতের ফৌজদারি দণ্ডবিধিতে ব্যাপক পরিবর্তন এনে বিল পেশ করেছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। প্রস্তাবিত এ আইনে ভারতের সার্বভৌমত্ব বা অখণ্ডতাকে বিপন্ন করলে সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে। এছাড়া গণপিটুনি ও নাবালিকা ধর্ষণে জড়িত অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হতে পারে। শুক্রবার (১১ আগস্ট) দেশটির লোকসভায় (সংসদের নিম্নকক্ষ) এ শাস্তিগুলোর বিষয়ে প্রস্তাব তুলে ধরেন অমিত শাহ। এবার থেকে হত্যার অপরাধে মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ যেমন দেওয়া যাবে সেইসঙ্গে, ধর্ষণের ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের ন্যূনতম ১০ বছরের কারাদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে। অন্যদিকে, গণধর্ষণে কমপক্ষে ২০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হবে।
কেন্দ্রের নতুন এ বিলে বলা হয়েছে, ধর্ষণের পর যদি নির্যাতিতার মৃত্যু হয় তবে দোষী ব্যক্তিকে সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হবে। যার মেয়াদ ২০ বছরের কম হবে না। তবে তা আরও বৃদ্ধি করা যেতে পারে। নাবালিকাকে (১২ বছরের কম বয়সী) ধর্ষণ করার অভিযোগে দোষী সাব্যস্তকে সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হবে। যা কোনোভাবেই ২০ বছরের কম হবে না। লোকসভায় পেশ করা বিলগুলোর মধ্যে ছিল, ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (বিএনএস) বিল ২০২৩, ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা (বিএনএসএস) বিল ২০২৩, এবং ভারতীয় সাক্ষ্য (বিএস) বিল ২০২৩ যা যথাক্রমে ভারতীয় দণ্ডবিধি ১৮৬০, ফৌজদারি কার্যবিধি আইন ১৮৯৮ এবং ভারতীয় সাক্ষ্য আইন ১৮৭২-কে প্রতিস্থাপন করবে।
এদিন অমিত শাহ বিল পেশের সময় সংসদে জানান, বিএনএস বিলে রাষ্ট্রদ্রোহ বাতিল করার বিধান রয়েছে। গণপিটুনি এবং নাবালিকাদের ধর্ষণের মতো অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে। সরকার রাষ্ট্রদ্রোহের বিধান বাতিল করার প্রস্তাব করলেও তা ভিন্নভাবে নিয়ে আসা হবে বলেও জানান তিনি। প্রস্তাবিত আইন অনুসারে কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে, জেনেশুনে, শব্দ দ্বারা, কথায়, লিখিত বা চিহ্ন দ্বারা, ইলেকট্রনিক যোগাযোগের মাধ্যমে, আর্থিক উপায়ে এবং সশস্ত্রভাবে উত্তেজিত করার চেষ্টা করে বিদ্রোহ, ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ বা বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যকলাপের মতো ঘটনাকে উৎসাহিত করলে তা ভারতের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতাকে বিপন্ন করার সামিল। এ ধরনের কোনো কাজে লিপ্ত বা সংঘটিত হলে ওইসব ব্যক্তিদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা সাত বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হবে। রাষ্ট্রদ্রোহ সংক্রান্ত বর্তমান আইন অনুযায়ী, কেউ এ অপরাধে জড়িত থাকলে তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।
পথরেখা/অআ