পথরেখা অনলাইন প্রতিনিধি, শেকৃবি : প্রাণবন্ত পরিবেশে বাংলাদেশের পাবলিক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে— ‘ক্যাবি-র প্লান্ট ক্লিনিক ও ডিজিটাল ট্যুলস্ অর্ন্তভূক্তি’ শীর্ষক ৪ দিন ব্যাপি এক প্রশিক্ষণ কর্মশালা ৩০ আগস্ট শেষ হয়েছে। শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব বিভাগ এই কর্মশালার আয়োজন করে। এই কর্মশালায় প্রায় ৫০জন প্রশিক্ষণার্থী সরাসরি অংশ নিয়েছেন।
২৭ আগস্ট শুরু হওয়া এই আয়োজনে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ, কৃষি তথ্য সার্ভিস ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের রপ্তানীযোগ্য আম উৎপাদন প্রকল্পের কর্মকর্তাবৃন্দ এবং ই-কৃষি ক্লিনিকের সেচ্ছাসেবক শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেছেন। এই আয়োজনে প্রধান প্রশিক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভারতের ক্যাবি কর্মকর্তা ড. মালভিকা চৌধুরী ও ড. মাঞ্জু ঠাকুর। এছাড়া বিশেষ প্রশিক্ষক হিসেবে সম্পৃক্ত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ কীটতত্ত্ব বিভাগের প্রফেসর ড. মোহাম্মদ সাইফ উল্লাহ এবং শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ রোগতত্ব বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর আবু নোমান ফারুক আহম্মেদ ।
৩০ আগস্ট সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শেকৃবির ভাইস চ্যান্সেলর (চলতি দায়িত্ব) প্রফেসর ড. অলক কুমার পাল। বিশেষ অতিথি ছিলেন শেকৃবি’র ট্রেজারার প্রফেসর ড. মো. নজরুল ইসলাম। প্রফেসর ড. মো. রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই আয়োজনে আরো উপস্থিত ছিলেন সাউরেসের ডিরেক্টর প্রফেসর ড. মো. আসাদুজ্জামান খান, পোস্ট গ্রাজুয়েট স্টাডিজের ডিন প্রফেসর ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক এবং প্রফেসর ড. সালাহউদ্দিন মাহমুদ চৌধুরী। ক্যাবি বাংলাদেশ প্রতিনিধি ড. মো. সালেহ আহমেদ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন। প্রধান অতিথি প্রফেসর ড. অলক কুমার পাল বলেন, ‘কর্মশালায় ক্যাবি’র ডিজিটাল ট্যুলস্সমূহের ব্যবহার সর্ম্পকে হাতে কলমে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে কিভাবে এগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষণ কার্যক্রমে ব্যবহার করা যায়; তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আমার মনে হয়েছে প্রশিক্ষণ কর্মশালাটি প্রশিক্ষণার্থীদের কর্মযজ্ঞে কার্যকর ও ফলপ্রসু ভূমিকা রাখবে।’
প্রশিক্ষণার্থীদের উদ্দেশ্যে বক্তারা বলেন, ‘প্লান্ট ডিজিজ ক্লিনিক ফসলের রোগসংক্রান্ত সমস্যার দ্রুত ও কার্যকরভাবে সমাধান দেওয়ার একটি ডিজিটাল প্রয়াস। এই প্ল্যাটফর্মে কৃষকের পাঠানো ছবি দেখে ফসলের রোগসংক্রান্ত যেকোন সমস্যা চিহ্নিত করা হয়। নিরীক্ষাপূর্বক চিহ্নিত সমস্যার সমাধানও দেওয়া হয় ডিজিটালি। এই প্রক্রিয়ায় সমস্যা সম্বলিত ছবিতে ক্লিক করলেই সমাধান পাওয়া যাবে। ব্যবহারকারীরা এ ক্ষেত্রে যে কোন মতামতও দিতে পারবেন। অর্থাৎ দেশের তৃণমূলের একজন কৃষক-খামারী তার কৃষিজ পণ্যের রোগের ছবি পাঠিয়ে সহজেই সমাধান পেয়ে যাবেন।’
সেন্টার ফর এগ্রিকালচার অ্যান্ড বায়োসায়েন্স ইন্টারন্যাশনাল [ক্যাবি] একটি অলাভজনক আন্তঃসরকারি উন্নয়ন ও তথ্য সংস্থা। এই প্রতিষ্ঠান উন্নয়নশীল দেশে কৃষি ও পরিবেশগত সমস্যার সমাধান নিয়ে কাজ করে। উদ্ভিদ রোগের সৃষ্টি, নিরাময় এবং বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের প্রসারে ক্যাবির বিজ্ঞানীরা বিশ্বে ৪০টিও বেশি দেশে কাজ করছে। তারা মূলত কৃষি এবং পরিবেশের সমস্যা সমাধান করে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রাকে উন্নত করতে নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করছে। সাধারণভাবে উদ্ভিদ রোগের কারণে ফসলের ক্ষতি, কৃষিজ উৎপাদন এবং জীববৈচিত্র্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। ক্যাবির গবেষকরা এই সমস্যা সমাধানের পথ বাতলে দেন।
পথরেখা/আসো