• শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪
    ১৪ পৌষ ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ০৮:১১

ঢাকা-দিল্লী সম্পর্ক আরও জোরদারে শেখ হাসিনা-মোদির ঐকমত্য

  • আন্তর্জাতিক       
  • ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩       
  • ১৬৮
  •       
  • ০৯-০৯-২০২৩, ০১:১৫:৪৪

পথরেখা অনলাইন : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৮ সেপ্টেম্বর একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে উভয় দেশের মধ্যে বিদ্যমান গভীর সম্পর্কে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন এবং একই সঙ্গে উভয়ে সম্পর্ককে আরও জোরদার করতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে সম্মত হয়েছেন। দুই প্রধানমন্ত্রীর দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের ফলাফল সম্পর্কে ব্রিফিংকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, “উভয় প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিদ্যমান গভীর সম্পর্কের বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন এবং এই সম্পর্ককে আরও জোরদার করতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে সম্মত হয়েছেন।” তিনি বলেন, মোদি আলোচনার মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে অমীমাংসিত সমস্যা সমাধানের ওপরও জোর দিয়েছেন। মোমেন বলেন, “ভারতের প্রধানমন্ত্রী তার দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বিদ্যমান শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতি নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদানের জন্য তার প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।” এখানে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে, নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে জি-২০ সম্মেলনে যোগ দিতে বিকেলে এখানে পৌঁছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
 
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উল্লেখ করেছেন যে গত বছরের ৪ থেকে ৮ সেপ্টেম্বর ভারতের নয়াদিল্লিতে তাঁর সফল রাষ্ট্রীয় সফরের পর দ্বিপাক্ষিক স্বার্থের বিভিন্ন ক্ষেত্রে দৃশ্যমান অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। এই প্রসঙ্গে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘দুই প্রধানমন্ত্রী এতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।’  বৈঠকে শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অর্জিত সাফল্যের কথা জানান। মোমেন যোগ করেন, “ভারতের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের অসাধারণ অগ্রগতির জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বের প্রশংসা করেন।” তিনি বলেন, ভারত বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার হওয়ায় ভারত থেকে আমাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করতে শেখ হাসিনা ভারত সরকারকে অনুরোধ করেন। তিনি বলেন, ‘উভয় প্রধানমন্ত্রীই রেল ও সড়ক যোগাযোগসহ ভারতের সাথে আমাদের দ্বিপাক্ষিক এবং আঞ্চলিক সংযোগ বাড়ানোর জন্য আমাদের চলমান প্রচেষ্টা এবং কার্যক্রমকে ত্বরান্বিত করতে সম্মত হয়েছেন।’ শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসনে নরেন্দ্র মোদির সহযোগিতাও কামনা করেন। মোমেন বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি যে অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে এই ফলপ্রসূ ও উন্মুক্ত আলোচনা দুই পক্ষের মধ্যে অমীমাংসিত সমস্যাগুলোর নিষ্পত্তিকে ত্বরান্বিত করবে এবং উভয় দেশের জনগণ এর দ্বারা উপকৃত হবে।” তিনি দ্বিপাক্ষিক বৈঠককে ফলপ্রসূ আখ্যায়িত করে বলেন, এটি অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। তিনি বলেনর, ‘এই সময় উভয় প্রধানমন্ত্রী দ্বিপাক্ষিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং উভয় সরকারপ্রধান একান্ত বৈঠকেও মিলিত হন।’ শেখ হাসিনা ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদানের কথাও স্মরণ করেন।
 
তিনি ‘জি-২০ নেতাদের’ শীর্ষ সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য নরেন্দ্র মোদির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বিশ্বের অনুন্নত অংশের স্বার্থ রক্ষায় প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। জি-২০ বৈঠকে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণের জন্য বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক টুইট বার্তায় বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। তার সরকারের বিগত ৯ বছরে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের অগ্রগতি অত্যন্ত সন্তোষজনক। আমাদের আলোচনায় যোগাযোগ, বাণিজ্যিক সংযোগ এবং আরও অনেক কিছু নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’ ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় টুইট বার্তায় উল্লেখ করেছে যে ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার বৈচিত্র আনতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে ফলপ্রসূ আলোচনা করেছেন। তারা কানেকটিভিটি ও সংস্কৃতির পাশাপাশি জনগণের মধ্যে মানুষে মানুষে পারস্পরিক বন্ধন-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সম্পর্ক জোরদার করতে সম্মত হয়েছেন।’
 
জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের বিভিন্ন অধিবেশনে যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য ‘এক পৃথিবী, এক পরিবার, এক ভবিষ্যত’-এর ওপর দ’ুটি ভাষণ দেবেন। ‘এক পৃথিবী’ এবং ‘এক পরিবার’ অধিবেশন চলাকালীন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জলবায়ু পরিবর্তন, কোভিড মহামারীর পরে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার, ইউরোপে যুদ্ধের ফলে খাদ্য, সার এবং জ্বালানির মতো প্রয়োজনীয় পণ্যগুলির বৈশ্বিক সরবরাহের মারাত্মক ব্যাঘাতের মতো চ্যালেঞ্জগুলো কীভাবে মোকাবেলা করা যায় তা নির্দেশ করবেন। এছাড়া বর্তমান সরকারের মেয়াদে বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অভাবনীয় সাফল্যের অভিজ্ঞতাও প্রধানমন্ত্রী অংশগ্রহণকারী বিশ্বনেতাদের কাছে তুলে ধরবেন। 
 
ভারতের জি-২০ সভাপতিত্ব ২০২২ সালের ডিসেম্বরে শুরু হয়েছিল এবং এই সভাপতিত্বের মেয়াদে ভারত বাংলাদেশসহ মোট নয়টি দেশের সবক’টিকে জি-২০ সম্মেলনে যোগদানের জন্য আমন্ত্রণ জানায়। দেশগুলো হলো-বাংলাদেশ, মিশর, মরিশাস, নেদারল্যান্ডস, নাইজেরিয়া, ওমান, সিঙ্গাপুর, স্পেন ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের সমাপনী পর্বে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী পর্যায়ের এবং ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে আলোচিত এবং সম্মত হওয়া অগ্রাধিকারগুলোর প্রতি নেতৃবৃন্দের প্রদত্ত প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে একটি জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের ঘোষণা গৃহীত হবে। গ্রুপ অফ টুয়েন্টি (জি২০) হল আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সহযোগিতার প্রধান ফোরাম। এটি সমস্ত প্রধান আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ইস্যুতে বৈশ্বিক স্থাপত্য এবং শাসন শক্তিশালীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ১৯৯৯ সালে এশীয় আর্থিক সংকটের পরে অর্থমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরদের বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ও আর্থিক সমস্যা নিয়ে আলোচনার জন্য জি২০ একটি ফোরাম হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
 
জি-২০ ১৯টি দেশ (আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, কানাডা, চীন, ফ্রান্স, জার্মানি, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ইতালি, জাপান, কোরিয়া প্রজাতন্ত্র, মেক্সিকো, রাশিয়া, সৌদি আরব, দক্ষিণ আফ্রিকা, তুরস্ক, যুক্তরাজ্য এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। জি-২০ সদস্য দেশগুলো বিশ্বব্যাপী জিডিপির প্রায় ৮৫ শতাংশ, বিশ্ব বাণিজ্যের ৭৫ শতাংশের বেশি এবং বিশ্বের জনসংখ্যার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশের প্রতিনিধিত্ব করে।
পথরেখা/আসো
 

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।