• শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
    ৬ আশ্বিন ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ০৯:৩৭

জীবন যুদ্ধে বিজয়ীনি কালীগঞ্জের রথি কস্তা

পথরেখা অনলাইন প্রতিনিধি, কালীগঞ্জ (গাজীপুর) : পরিবারে চার সদস্য নিয়ে রথি কস্তার সুখের সংসার। দিন দিন তার জনপ্রিয়তা বেড়েই চলেছে। গ্রামের বিভিন্ন প্রান্থ থেকে অনেকেই ঝাল মুড়ি খেতে ও কিনতে ভিড় করছে প্রতিনিয়ত রথি কস্তার ভ্রাম্যমাণ দোকানে। তাইতো রথির দোকানের নাম দিয়েছে ঝাল মুড়ির দোকান। ঝাল মুড়ির দোকান প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, হাসপাতালের গেইট, শপিংমলের সামনে বিক্রি করে থাকে। আনন্দঘন মুহূর্তে ভেসে উঠে ঝাল মুড়ি খেতে আসা ঝাল-মুড়ি প্রেমিরা। আর এই দিকে দোকানের বিভিন্ন রসদ যুগিয়ে যাচ্ছে তার বুদ্ধি প্রতিবন্ধী স্বামী। 
 
সরেজমিনে আড়িখোলা রেলস্টেশনে ঝাল মুড়ি খেতে আসা ক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, রথি কস্তা একজন শ্রমজীবী মানুষ। জীবন যুদ্ধে হার না মানা একজন এক নারী। তার মনের মাধুরি দিয়ে চানাচুর,মুড়ি,কাঁচা মরিচ,পেঁয়াজ,ছোলা,ক্ষিরা সহ বিভিন্ন রকম মসলা দিয়ে অত্যন্ত মুখরোচকভাবে মুড়ি মাখিয়ে গ্রাহকদের মণ আকৃষ্ট করে চলেছে। ঝাল মুড়ি বিক্রি করেই আজ সে স্বাবলম্বী। বর্তমানে সে কালীগঞ্জ পৌর এলাকার উত্তর ভাদার্ত্তী গ্রামের ছোট একটি বাড়িতে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বসবাস করেন। এত কর্মব্যস্ততার পরও মানুষটির মুখে যেন সার্বক্ষণিক আনন্দের ছাপ। রথি কস্তার পিতা প্রভুদাস বাড়ই গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার পৌর এলাকার ২নং ওয়ার্ডের উত্তর ভাদার্ত্তী গ্রামের বাসিন্দা। তার স্বামীর পংকজ কস্তা প্রতিবন্ধী জীবন যাপন করছে।
 
রথি কস্তার সংসারে দুই সন্তান। বড় ছেলে অরেন কস্তা ও ছোট ছেলে অন্তর কস্তা । ছোট ছেলে অস্তর কস্তা বোয়ালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র। উভয়েই মায়ের কাজে সহযোগীতা করে থাকেন। প্রতিবন্ধী স্বামীর আর্থিক সংকটের কারণে ২০০৭ সাল থেকে রেল গাড়িতে চড়ে ঝাল মুড়ি বিক্রি শুরু করে। জীবন-জীবিকার তাগিদে বাড়ির পাশে আড়িখোলা রেলওয়ে স্টেশন থেকে প্রায় ১৭ বছর যাবৎ বিভিন্ন ট্রেনে ঝাল মুড়ি বিক্রি শুরু করে আসছে। এখন ট্রেনে প্রচণ্ড ভিড় ও বয়সের কারনে ট্রেনে উঠতে সাহস পায় না। আড়িখোলা রেল ষ্টেশনই তার নিত্বদিনের ঠিকানা। সেই থেকে আর তাকে পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। বর্তমানে সংসারে স্বামী,দুই ছেল বৃদ্ধ বাবাকে নিয়ে বেশ সুখেই দিন কাটছে তার। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ঝাল মুড়ি বিক্রি করে হাজার থেকে পনেরশত টাকা বেচা-কেনা হয়। সকল খরচ বাদে কমপক্ষে ৬-৮ শত টাকা তার লাভ হয়। সেই আয়েই  তিনি সংসার চালান। স্টেশনে ট্রেন থামতেই তার দোকানে ঝাল মুড়ি প্রেমিদের উপচে পড়া ভিড় জমে। 
 
রথি কস্তার সাথে আলাপকালে প্রতিবেদককে জানান, আমার জন্ম চট্টগ্রামে এক অসহায় পরিবারে। আত্মীয়ের মাধ্যমে ঢাকার মিশনারী স্কুলে ভর্তি হয়ে বটমূল হোস্টেলে থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করি। পরবর্তীতে অসুস্থ আপন খালাকে দেখাশোনা জন্য গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার বক্তারপুর ইউনিয়নের সাতানীপাড়া গ্রামে চলে আসি। দারিদ্রতার কারণে লেখাপড়া করা আর সম্ভব হয়নি। ২০০৪ সালে কালীগঞ্জ পৌর এলাকার দক্ষিণ ভাদার্তী গ্রামের বুদ্ধি প্রতিবন্দি পংকজ কস্তাকে বিয়ে করি। মানুষের কাছে হাত পাতার চাইতে খেটে খাওয়া উত্তম। প্রতিদিন মানুষ আমাকে টাকা দিয়ে সাহায্য করবে না। যে কোন কাজকেই ছোট করে দেখার কোন কারণ নেই। তাই ঝাল মুড়ি বিক্রি আমি পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছি। সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা পেলে আমি নিজেকে সফল উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে পারব।
পথরেখা/আসো

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।