• শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
    ৬ আশ্বিন ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ০৯:২৮

কালীগঞ্জে বিলের শাপলা বিক্রির আয়ে চলে সংসার

পথরেখা অনলাইন  প্রতিনিধি, কালীগঞ্জ (গাজীপুর) : গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জের বেলাই বিলের শাপলা যাচ্ছে রাজধানী ঢাকায়। বর্ষাকালে বিলের বিস্তীর্ণ ধানী এলাকা পানিতে ডুবে যায়। বিস্তীর্ণ এ ডুবো জমিতে এ সময় প্রচুর পরিমাণে লাল, সাদা ও হালকা গোলাপী রংয়ের শাপলা ফুল ফুটে। এক সময়ের মূল্যহীন এ শাপলা এখন বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি হচ্ছে। তাই প্রতিদিন সকালে সূর্য ওঠার আগেই বিস্তীর্ণ বেলাই বিলে ডিঙি নৌকা নিয়ে শাপলা কুড়াতে বেরিয়ে পড়েন স্থানীয় প্রায় শতাধিক পরিবারের সদস্য। কুড়ানো শাপলার বিক্রির আয়ে চলছে তাদের জীবন ও জীবিকা, ছেলে মেয়েদের লেখাপড়া।
 
ভরা বর্ষা মৌসুমে উপজেলার বিভিন্ন বেলাই বিলে প্রাকৃতিকভাবেই অসংখ্য শাপলা জন্মে। এই বিলে জেলেরা মাছ শিকারের পাশাপাশি দিনের কয়েক ঘণ্টা শাপলা কুড়িয়ে আয় করছেন অতিরিক্ত টাকা। কুড়িয়ে আনা শাপলা স্থানীয় ভাবে সংগ্রহ করে পাইকাররা রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন পাইকারি সবজির বাজারগুলোয় বিক্রি করছেন। প্রতিদিন এ অঞ্চল থেকে অন্তত মাঝারি সাইজের ৭/৮টি পিকআপ ভ্যান শাপলা নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছে। শাপলা সবজি হিসেবে সুস্বাদু হওয়ায় বাজারে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কর্মহীন বেকার, কৃষি শ্রমিক ও জেলে শাপলা কুড়িয়ে অর্থ উপার্জন করতে পারছেন।
 
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার বক্তারপুর, জাঙ্গালিয়া, নাগরী, তুমলিয়া ও জামালপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন বেলাই বিল এখন বর্ষার পানিতে টইটম্বুর। বিলের বিভিন্ন স্থান থেকে ছোট নৌকা, কোসা, ডিঙ্গিতে করে অসংখ্য শাপলা কুড়িয়ে আনা হচ্ছে স্থানীয় সড়কের পাশে। সেখানে পিকআপ নিয়ে অপেক্ষায় থাকা পাইকাররা দরদাম ঠিক করে শাপলার আঁটি গুনে গুনে পিকআপে তুলছেন।
 
বক্তারপুর এলাকার মুরাদ, নুর হোসেন, আমির হোসেন, শাজাহান, দেলোয়ার, বলাই রাম জানান, বিলে এখন পানির গভীরতা প্রায় ৬ থেকে ৮ হাত। বৃষ্টি কম হওয়ায় এ বছর বিলে শাপলার পরিমাণ তুলনামূলক ভাবে কম। পানি বৃদ্ধি পেলে শাপলার উৎপাদনও বৃদ্ধি পাবে। আমাদের এলাকায় এসময় তেমন কাজ থাকে না। তাই প্রতিদিন ভোরে বিল থেকে শাপলা তুলে বিক্রি করছি। চার পাঁচটি শাপলা দিয়ে তৈরী এক আটি ৬ টাকা দরে আমরা পাইকারদের কাছে বিক্রি করি। এতে একেক জনের প্রতিদিন প্রায় ৬শ থেকে ৮শ টাকা কামাই হচ্ছে। এ টাকায় তারা সংসারের খরচ মিটিয়ে সন্তানদের লেখাপড়ার খরচও বহন করতে পারছেন। কার্তিক মাস পর্যন্ত বেলাই বিলে শাপলা কুড়াবেন তারা। 
 
বক্তারপুর এলাকার শিক্ষক আবুল কালাম খান জানান, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির কারণে এখন শহুরে বাজারে শাপলা সহজলভ্য ও জনপ্রিয় সবজি। সকালে নৌকা থেকে শাপলা সংগ্রহ করে পাইকাররা ঢাকার মোহাম্মদপুর, রায়েরবাজার, কারওয়ান বাজার ও মহাখালী কাঁচা বাজারসহ বিভিন্ন সবজির পাইকারি বাজারে নিয়ে বিক্রি করছেন। দামে কম ও সুস্বাদু হওয়ায় গ্রামগঞ্জে কিংবা শহরের মানুষের কাছে শাপলা সবজি হিসেবে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বর্ষায় প্রাকৃতিক ভাবেই শাপলা ফোটে। ঠিক মতো সংগ্রহ করে বাজারজাত করতে পারলে এটিও আয়ের ভালো উৎস হতে পারে।
 
শাপলা একটি পুষ্টিগুণ সম্পন্ন সবজি। সাধারণ শাক-সবজির চেয়ে এর পুষ্টিগুণ অনেক বেশি। শাপলাতে থাকা গ্যালিক এসিড এনজাইম ক্যানসার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। শাপলা ফুল ইনসুলিনের স্তর স্থিতিশীল রেখে রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখে। হৃদযন্ত্রের কার্যকারিতা বাড়ায় ও পিপাসা দূর করে। শাপলায় রয়েছে প্রচুর ক্যালসিয়াম, যা আলুর চেয়ে সাত গুণ বেশি। শাপলা চর্ম ও রক্ত আমাশয়ের জন্য উপকারী। এটি শরীরে কোলেষ্টেরলের মাত্রা কমায়। ডায়াবেটিক রোগীদের জন্যেও শাপলা অত্যন্ত উপকারী। শরীরকে শীতল রাখতে শাপলার জুড়ি মেলা ভার। 
পথরেখা/আসো
 

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।