পথরেখা অনলাইন : নারীর রুচির বহিঃপ্রকাশ তার পোশাকে। চলমান ফ্যাশনের বাজারে এখন চলছে কোমর থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত ছড়ানো একটি পোশাক। গাউন! সাধারণত এ পোশাক খ্রিস্টান নারীদের বিয়ের পোশাক। তবে বর্তমানে তা আর সেখানে নেই। যেকোনো অনুষ্ঠানে কিংবা বিশেষ কোনো আয়োজনে এখন হরহামেশাই গাউনের চল। পোশাকটির মধ্যে থাকা রুচির পরিচয় তো রয়েছে একই সঙ্গে রয়েছে আরামদায়কতা। শরতে আচমকা বৃষ্টি বা ভয়াবহ গরমেও গাউনের আরামদায়কতা এড়ানো যায় না। গাউনের কিছু ভাগ রয়েছে ফ্রক স্টাইল, ওয়েস্টার্ন ও সালোয়ার কামিজের স্টাইল। এখন নারীরা রঙের ওপর নির্ভর করে গাউন বানিয়ে থাকেন। লং গাউন এমনিতেই বহুদিন ধরে জনপ্রিয়। তরুণীরা আরো অনেক ক্ষেত্রেই লং গাউন বেছে নিচ্ছেন। কারণ, স্বাচ্ছন্দ্য আর স্টাইল দুটোই পাওয়া যায় লং গাউনে।
গড়ন উপযোগী গাউন বাংলাদেশের মেয়েদের গড়ন একটু ভারী হওয়ায় কাটিংয়ে পরিবর্তন এনে গাউনের হচ্ছে নতুন একধরন। নিকট অতীতে গাউনের ঘের শুরু হতো কোমর থেকে। ভারী গড়নের অনেকেই আগে এই জাতীয় পোশাক এড়িয়ে চলেছেন। তবে সময় পাল্টেছে। গাউনের প্রতি আকর্ষণ বেড়ে গেছে নারীদের। অধিকাংশ ফ্যাশন হাউজ এখন বিশেষ আয়োজনে গাউন তৈরি করছে। এক্ষেত্রে আনজারার নাম উল্লেখ করতেই হয়। তারা হাজির করেছেন অপু বিশ্বাস ও বুবলিকে। বাংলাদেশের চলচ্চিত্র অঙ্গনে অপু বিশ্বাস-বুবলি জনপ্রিয় দুই নাম। সম্প্রতি এই দুজনের চলচ্চিত্র মুক্তি পেয়েছে। টানাপোড়েন পেছনে ফেলে দুজন আবার এগিয়ে যাচ্ছে আপন গতিতে। পেশাদার জীবনের এই ছোঁয়া তাদের করেছে উজ্জ্বল। যেমনটি করেছে গাউন।
সচরাচর শাড়ি বা এথনিক পোশাকে শবনম বা বুবলি বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে থাকেন। এবার আনজারা লাইফস্টাইল আনল বদল। তাদের লাক্সারি লেবেল আনজারার গাউনে হাল আমলের এই দুই অভিনেত্রীর ফটোশ্যুট সবার নজর কেড়েছে। দুজনকেই আলাদা আলাদা ফটোতে দেখা গেছে। আনজারা ফ্যাশনের ফটোশ্যুটে এই দুই নায়িকা চমকে দিয়েছেন। গাউনে মুক্তির আকারের বা ফো পার্লের লহর বসানো কারুকাজ? গাউনের ওপরের অংশে শিয়ার ফেব্রিক, উঁচু নেকলাইন। কারসাজি সব বুকের জায়গায় আর কাঁধে। এক কাঁধে স্ট্রাকচারড ফেব্রিক এক্সটেনশন আর আরেক দিকে কাঁচুলি ঘরানার অংশে সেই মুক্তার লহর।এক্সটেনশন থেকে কোমরে জড়ো হয়েছে। সেটিরও আলাদা নান্দনিকতা রয়েছে। অপুর হাতে মুক্তার মালা পেঁচিয়ে রাখা। কানে ময়ূরকণ্ঠী নীল আর সাদা পাথরের ঝোলানো দুলটিও গাউনের সঙ্গে মানানসই। চুল সিঁথি ছাড়া, টেনে পেছনে বাঁধা। উইং দেওয়া আইলাইনার আর বোল্ড ম্যানিকিওর চোখে পড়ছে। বেশ রাজসিক ভাব ফুটিয়ে তোলা হয়েছে সাজে।
অপরদিকে বুবলি সেজেছেন আরো ভিন্ন-সাজে। এটিও আনজারার। কফিরঙা সাটিন গাউনটিতে স্ট্রাকচারড প্যাটার্ন দেখা যাচ্ছে। এক কাঁধের নিখুঁত বর্ণনামূলক কাজে। আর অন্য দিকের হাতায় একই সাটিন ফেব্রিকের রাফল দেওয়া লেয়ার যেটি কটিদেশ পর্যন্ত নেমে এসেছে। সেখান থেকেই লেয়ারের এক্সটেনশন নেমেছে নিচ পর্যন্ত। নেকলাইনের দিকে তাকান। ঠিক সংলগ্ন বুকের জায়গায় শিয়ার ফেব্রিকের ব্যবহারটিরও তাত্পর্য রয়েছে। গাউনের ঘেরে ঘন প্লিটস।
বাদামি এক্সটেনশন রেখেছেন চুলে বুবলি। আর মাঝসিঁথি করে দুই দিকে স্ট্র্যান্ডস করেছেন। ম্যাচিং বাদামি পাথরের দুল আর লকেট দেওয়া নেকপিস, নীলচে কন্টাক্ট লেন্স আর গোলাপি ঠোঁটে বুবলিকে দারুণ লাগছে। বুবলী ও অপুর দুই আলাদ, সুন্দর রূপ। অধিকাংশ ফ্যাশন হাউজ চলতি ফ্যাশনের কথা মাথায় রেখে বিশেষ নক্সায় নতুন বৈচিত্র্যের গাউন তৈরি হচ্ছে যার ঘের বুকের নিচ থেকে হয়। অন্য দিকে গাউনের দুই দিক একটু ফিটেড দেখানোর জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে গাঢ় রঙের কাপড়। এছাড়া যেকোনো গড়নের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার জন্য বাজারে এসেছে মারমেইড কিংবা ফিশ শেপের গাউন। এ ধরনের নকশায় হাঁটু থেকে পা পর্যন্ত থাকছে নেটের কুল। গতানুগতিক ধারা থেকে সরে এসে নতুনত্ব আনতে দেখা যায় সামনের দিকে ওড়নার স্টাইলের কুচি দিয়ে জুড়ে দেওয়া হচ্ছে কাপড়। বাজারে এখন বিভিন্ন ধরনের গাউন পাওয়া যাচ্ছে। পোশাক হিসাবে গাউন খুবই সুন্দর। আর অনিন্দ্যসুন্দর দুই নায়িকা যখন গাউন পরে তখন তা হয়ে ওঠে আরো অসাধারণ।
পথরেখা/আসো