পথরেখা অনলাইন : পেঁয়াজের অস্বাভাবিক ঝাঁঝের অস্থিরতা কমাতে এবার স্বপ্ন দেখাচ্ছে গ্রীষ্মকালীন জাত এন-ফিফটি থ্রি। আগাম ও ফলন দ্বিগুণ হওয়ায় সরকারি প্রণোদনায় দেয়া এই জাত আবাদ করে লাভবান হচ্ছেন উৎপাদকরা। কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বলছেন, আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে স্থানীয় উৎপাদনের মাধ্যমে দেশীয় চাহিদা মেটাতে সরকারের এই উদ্যোগ।
দিগন্তজোড়া মাঠে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিচ্ছে গ্রীষ্মকালীন রেড এন-৫৩ জাতের পেঁয়াজ। পরিপক্ব হওয়ায় তা সংগ্রহ করছেন কৃষকরা। এই দৃশ্য চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্ন এলাকার।
চাষিরা বলছেন, বিঘাপ্রতি এই পেঁয়াজের গড় ফলন ৮০-১০০ মণ। যেখানে প্রচলিত জাত থেকে পাওয়া যায় মাত্র ৪০-৫০ মণ। একদিকে উৎপাদন বেশি, অন্যদিকে খরচও কম। সবমিলিয়ে লাভের গুড় মেলায় খুশি তারা।
কৃষকরা আরও জানান, নতুন জাতটি রোপণের মাত্র ৩ মাসেই তোলা যাচ্ছে গোলায়। আবার রোগবালাই তুলনামুলকভাবে কম হওয়ায় কমেছে বালাইনাশকের খরচও। এমন অবস্থায় পেঁয়াজটি চাষাবাদে আগ্রহী এলাকার চাষিরা।
এক চাষি বলেন, ৩ মাসের মধ্যেই উত্তোলন সম্ভব। এই পেঁয়াজের আকার অনেক বড়। ৫ থেকে ৭টিতেই ১ কেজি হয়ে যায়। আরেক চাষি বলেন, সরকার এই বীজ সরবরাহ করছে। সেই সঙ্গে সারও দিচ্ছে। তাই এটি চাষ করে আমরা লাভবান হয়েছি।
উচ্চফলনশীল জাতটি বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) মাধ্যমে কৃষক পর্যায়ে প্রণোদনার মাধ্যমে বিতরণ করা হয়। উদ্দেশ্য অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত পেঁয়াজের যে সংকট তা দূর করা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ ড. পলাশ সরকার বলেন, গ্রীষ্মকালীন ভালো কোনও জাত আমাদের দেশে নেই। এক্ষেত্রে এটি আশার আলো দেখাচ্ছে। সরকার এই বীজ ভারত থেকে এনে সরবরাহ করছে। এর ফলনও অনেক ভালো।
আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে দেশেই আবাদ বাড়িয়ে পেঁয়াজের বাজার স্থিতিশীল করতে সরকারের এমন উদ্যোগ বলে দাবি স্বয়ং কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাকের। তিনি বলেন, এটি গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ। গত বছর তা চাষ করেছিলাম, এবারও করেছি। ৩২ কোটি টাকার বীজ দিয়েছি কৃষকদের। অন্যান্য প্রণোদনাও দেয়া হয়েছে। যাতে তারা জাতটি চাষ করেন। তাদের মধ্যে অনেকে বলেছে, ১ বিঘা থেকে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত আয় করেছেন।
পথরেখা/অআ/