পথরেখা অনলাইন : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ২৭ ডিসেম্বর স্থানীয় একটি হোটেলে তাঁর দলের পক্ষ থেকে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন। ডিজিটাল থেকে স্মার্ট বাংলাদেশে উত্তরণের মাধ্যমে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত স্মার্ট সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয়ে এই নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করা হয়। এই উপলক্ষে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার প্রদত্ত ভাষণের পূর্ণ বিবরণ তুলে ধরা হলো-
“বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
প্রিয় দেশবাসী,
উপস্থিত সুধিম-লী,
আসসালামু আলাইকুম,
আপনাদের সবাইকে বিজয়ের মাসের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাইকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। টেলিভিশন, রেডিও এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সহায়তায় দেশের অভ্যন্তরে এবং বাইরে যাঁরা এই অনুষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন তাঁদেরও শুভেচ্ছা এবং আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
বাংলাদেশের ইতিহাসে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ধারাবাহিকভাবে রাষ্ট্র পরিচালনার একটানা ১৫ বছর পূর্ণ হতে চলেছে। পাঁচ বছর মেয়াদি সংসদীয় সরকার ব্যবস্থা স্থিতিশীল থাকায় আমরা বাংলাদেশের অভূপূর্ব উন্নতি সাধন করতে পেরেছি। বাংলাদেশ আজ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করে। তাঁর স্বপ্ন ছিল ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত-সমৃদ্ধ ‘সোনার বাংলা’ গড়ে তোলা।
যুদ্ধবিধ্বস্ত, ক্ষুধা-দারিদ্র্যে জর্জরিত একটি দেশের শাসনভার তিনি নিয়েছিলেন। তিনি হাতে সময় পেয়েছিলেন মাত্র ৩ বছর ৭ মাস ৩ দিন। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ছিল ৯১ মার্কিন ডলার। জাতির পিতা মাত্র ৩ বছরে ১৯৭৫ সালে তা ২৭৭ মার্কিন ডলারে উন্নীত করেন। প্রবৃদ্ধি ৯ ভাগ অর্জন করেন। এই স্বল্প সময়ে ধ্বংসস্তুপ থেকে টেনে তুলে বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশের মর্যাদায় উন্নীত করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকদের নির্মম বুলেটে জাতির পিতা নির্মমভাবে নিহত হন। সেই সঙ্গে ঘাতকেরা কেড়ে নেয় বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার সব সম্ভাবনাকে, মহান স্বাধীনতার চেতনা ও আদর্শকে।
আমি পরম শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। শ্রদ্ধা জানাই জাতীয় চার নেতার প্রতি। ৩০ লাখ শহিদ ও ২ লাখ নির্যাতিতা মা-বোনকে শ্রদ্ধা জানাই। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জানাচ্ছি সালাম।
অত্যন্ত বেদনার সঙ্গে স্মরণ করছি- আমার মা বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিব, ছোট তিন ভাই- বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন শেখ কামাল, বীর মুক্তিযোদ্ধা লে. শেখ জামাল, আমার দশ বছর বয়সী ছোট্ট ভাই শেখ রাসেল; কামাল ও জামালের নবপরিণীতা বধুঁ সুলতানা কামাল, পারভীন জামাল, আমার একমাত্র চাচা পঙ্গু বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আবু নাসের, রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিব ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জামিল উদ্দীন আহমেদ, পুলিশ কর্মকর্তা এএসআই সিদ্দিকুর রহমানসহ ১৫ আগস্টে নির্মমভাবে নিহত সকল শহিদকে। আমি তাঁদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।
সুধিমণ্ডলী, আজকের এ দিনে আমি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি এই উপমহাদেশের অন্যতম প্রাচীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক, গণতন্ত্রের মানসপুত্র হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মাওলানা আবদুর রশীদ তর্কবাগীশসহ আওয়ামী লীগের প্রয়াত সকল নেতৃবৃন্দকে। মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদা রক্ষার জন্য যাঁরা অকাতরে জীবন দিয়েছেন সেই ভাষা শহিদদের প্রতি আমি গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। স্মরণ করছি, ২০০৪ সালের ২১-এ আগস্টের গ্রেনেড হামলায় নিহত আওয়ামী লীগ নেত্রী আইভী রহমানসহ ২২ জন নেতা-কর্মীকে। স্বাধীনতার পূর্বে এবং স্বাধীনতার পরবর্তীকালে বিভিন্ন গণতান্ত্রিক এবং ভোট ও ভাতের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে যাঁরা নিহত হয়েছেন তাঁদের স্মরণ করছি।
প্রিয় দেশবাসী,
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে জাতির পিতাকে হত্যার সময় আমি এবং আমার ছোটবোন বিদেশে ছিলাম। সে কারণে আমরা প্রাণে বেঁচে যাই। দীর্ঘ ৬ বছর আমরা রিফিউজি হিসেবে প্রবাস জীবন কাটাতে বাধ্য হই। তৎকালীন সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান আমাদের দেশে আসতে বাধা দেয়। ১৯৮১ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও জনগণের সমর্থন নিয়ে আমি দেশে ফিরে আসি। অবৈধভাবে ক্ষমতাসীন সরকার, জাতির পিতার হত্যাকারী ও ষড়যন্ত্রকারী এবং যুদ্ধাপরাধীদের সকল রক্ত চক্ষু উপেক্ষা করেই আমি দেশে ফিরে আসি। শুরু করি জনগণের ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম। এজন্য বার বার আমার উপর আঘাত এসেছে। জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের লক্ষে সামরিক শাসকের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি, বার বার গ্রেফতার হয়েছি। আমাকে অন্তত ১৯ বার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু আমি দমে যাইনি। অবশেষে মানুষের ভোটের অধিকার জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিতে সক্ষম হই। ১৯৭৫ সালের বিয়োগান্তক ঘটনার ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালের ১২ জুনের সাধারণ নির্বাচনে বিজয়লাভের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। অবসান হয় হত্যা, ক্যু ও সামরিক শাসনের।
১৯৯৬ সালের ২৩ জুন থেকে ২০০১ সালের ১৫ জুলাই - এই ৫ বছর পূর্ণ করে ২৬ বছর পর আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বপ্রথম শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করে। ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে আমরা ধান ও দানাদার শস্য উৎপাদন বৃদ্ধি করে দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করি। স্বাক্ষরতার হার বৃদ্ধি, বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি গ্রহণ, বয়স্ক, বিধবা, স্বামী নিগৃহীতা ও প্রতিবন্ধী ভাতা প্রবর্তন এবং বর্গাচাষীদের বিনা জামানতে কৃষি ঋণ প্রদান করি।
২০০১ সালের ১লা আক্টোবরে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক সম্পদ গ্যাস বিক্রির প্রতিশ্রুতি দিয়ে এবং নানা চক্রান্তের ফসল হিসেবে বিএনপি জামাত-জোট ক্ষমতার মসনদে আরোহন করে। ক্ষমতায় বসেই চরম দুর্নীতি, দুঃশাসন, হত্যা, নারী ধর্ষণ, হিন্দু-মুসলমান-খ্রিস্টান-বৌদ্ধসহ আওয়ামী লীগের অগণিত নেতাকর্মীর উপর আমানবিক নির্যাতন, লাশ গুমসহ সমগ্র দেশে হত্যা, ত্রাস ও গুমের রাজত্ব কায়েম করে।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে গ্রেনেড হামলা করে ২২ নেতা-কর্মীকে হত্যা এবং ৫০০’র বেশি মানুষকে আহত করে। জেলায় জেলায় বোমা হামলা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অস্ত্রের ঝনঝনানি, সেসন জট, ছাত্রছাত্রীদের অনিশ্চিত জীবন ছিল বিএনপি-জামাত জোট সরকারের সময়কার সাধারণ চালচিত্র। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, অস্ত্র চোরাকারবারি, মানি লন্ডারিং, ব্যাংকের টাকা আত্মসাৎ, হাওয়া ভবনের দ্বৈত শাসনে জনজীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠেছিল। মেয়াদ শেষে ২০০৬ সালে ক্ষমতা হস্তান্তর করে নির্বাচন দেওয়ার কথা থাকলেও বিএনপি-জামাত জোট ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করতে নানা ছলচাতুরির আশ্রয় নিতে থাকে। নির্বাচনে কারচুপির উদ্দেশ্যে ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটারসমেত ভোটার তালিকা প্রণয়ন এবং আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন গঠন করে। তাদের এসব কর্মকা- বাংলাদেশকে অন্ধকারের পথে ধাবিত করে। যার ফলে দেশে জরুরি অবস্থা জারি হয়। সামরিক বাহিনী অন্তরালে থেকে ক্ষমতা দখল করে। ইয়াজুদ্দীন, ফখরুদ্দীন, মইনুদ্দীনের এই সরকার জনগণের অধিকার হরণ করে তাঁদের উপর স্টিমরোলার চালানো শুরু করে। প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলগুলোকে ভেঙে ফেলার উদ্যোগ নেয়। আমাকে এবং আমার দলের বহু নেতাকর্মীসহ অন্যান্য দলের নেতাকর্মীদের বন্দি করা হয়। ভিন্ন দল গঠন করার চেষ্টা করে নির্বাচন অনুষ্ঠানের উদ্যোগ নেয়।
কি
ন্তু তাদের এই চক্রান্তের বিরুদ্ধে সচেতন দেশবাসী ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়ায়। জনগণের আন্দোলনের মুখে তারা ৯ম সংসদ নির্বাচন দিতে বাধ্য হয়। তবে নির্বাচন সংস্কারের যে দাবি আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট উপস্থাপন করেছিল সেগুলি থেকে তারা কিছু বিষয় কার্যকর করে- যেমন: ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন, ১ কোটি ২৩ লাখ ভূয়া ভোটার লিস্ট বাতিল, এবং স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স ব্যবহার। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করে। আওয়ামী লীগ এককভাবে ২৩৩টি আসনে বিজয়ী হয়। আর বিএনপি এককভাবে মাত্র ৩০টি আসনে জয়ী হয়। বাকি আসনগুলি উভয় জোটের শরিকেরা পায়।
প্রিয় দেশবাসী,
২০০৮ সালের নির্বাচনি ইশতেহারে আমরা রূপকল্প-২০২১-এর ঘোষণা দিয়েছিলাম। দিন বদলের সনদ হিসেবে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করি। এরপর শত বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে ২০১৪ ও ২০১৮ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়লাভ করে আমরা সফলভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করে আসছি।
গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের রূপান্তর ঘটেছে। আজকের বাংলাদেশ দারিদ্র্যক্লিষ্ট, অর্থনৈতিকভাবে ভঙ্গুর বাংলাদেশ নয়। আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে পারি, আজকের বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। সম্ভাবনার হাতছানি দেওয়া দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলা দুরন্ত বাংলাদেশ। ছোটখাট অভিঘাত আজ আমাদের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না। করোনা মহামারিসহ নানা অভিঘাত মোকাবিলা করে সেই প্রমাণ আমরা রেখেছি। করোনা মহামারির মধ্যেই আমরা ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী এবং ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করেছি। এ সময়ই জাতিসংঘ বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এনপি-জামাত জোট সরকারের শেষ বছর ২০০৬ সালে বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক সূচকে বাংলাদেশ কোথায় ছিল আর আজ বাংলাদেশ কোথায় অবস্থান করছে তার সংক্ষিপ্ত একটি তুলনামূলক চিত্র আমি আপনাদের সামনে তুলে ধরতে চাই:
অর্থনীতি
ক্রম খাত ২০০৬ বিএনপি-জামাত জোট ২০২৩ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মন্তব্য
১ প্রবৃদ্ধি ৫.৪০ শতাংশ ৭.২৫ শতাংশ
২ মাথাপিছু আয় (নমিনাল) ৫৪৩ মার্কিন ডলার ২ হাজার ৭৯৩ মার্কিন ডলার ৫ গুণ বৃদ্ধি
৩ মাথাপিছু আয় (পিপিপি) ১ হাজার ৭২৪ মার্কিন ডলার ৮ হাজার ৭৭৯ মার্কিন ডলার ৫ গুণ বৃদ্ধি
৪ বাজেটের আকার ৬১ হাজার কোটি টাকা ৭ লক্ষ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা ১২ গুণ বৃদ্ধি
৫ জিডিপি’র আকার ৪ লক্ষ ১৫ হাজার ৭২ কোটি টাকা ৫০.৩১ লক্ষ কোটি টাকা ১২ গুণ বৃদ্ধি
৬ বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি ২১ হাজার ৫ শত কোটি টাকা ২ লক্ষ ৭৪ হাজার ৬৭৪ কোটি টাকা ১৩ গুণ বৃদ্ধি
৭ রপ্তানি আয় ১০.০৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ৫২.৯৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ৫ গুণ বৃদ্ধি
৮ বার্ষিক রেমিটেন্স আয় ৪.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ২৪.০৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার
৬ গুণ বৃদ্ধি
৯ আমদানি ব্যয় ১৪.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ৮২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রায় ৬ গুণ বৃদ্ধি
১০ বিনিয়োগ (জিডিপি’র হারে) ২২.৭৮ শতাংশ ৩২.০৫ শতাংশ প্রায় দেড় গুণ বৃদ্ধি
১১ বার্ষিক রাজস্ব আয় ৩৭ হাজার ৮৭০ কোটি টাকা ৫ লক্ষ কোটি টাকা ২০২৩-২৪ অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রা।
মানুষের জীবনমান উন্নয়ন
ক্রম খাত ২০০৬ বিএনপি-জামাত জোট ২০২৩ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মন্তব্য
১ দারিদ্র্যের হার ৪১.৫১ শতাংশ ১৮.৭ শতাংশ অর্ধেক কমেছে
২ অতি দারিদ্র্যের হার ২৫.১ শতাংশ ৫.৬ শতাংশ প্রায় ৫ গুণ কমে এসেছে।
৩ মানুষের গড় আয়ু ৫৯ বছর ৭২.৮ বছর
৪ নিরাপদ খাবার পানি ৫৫ শতাংশ ৯৮.৮ শতাংশ ২ গুণ বৃদ্ধি
৫ সেনিটারি ল্যাট্রিন ৪৩.২৮ শতাংশ ৯৭.৩২ শতাংশ ২ গুণের বেশি বৃদ্ধি
৬ শিশু মৃত্যুর হার
(প্রতি হাজারে) ৮৪ জন ২১ জন ৪ গুণ কমেছে
৭ মাতৃমৃত্যু হার
(প্রতি লাখে) ৩৭০ জন ১৬১ জন প্রায় আড়াই গুণ কমেছে।
বিদ্যুৎ
ক্রম খাত ২০০৬ বিএনপি-জামাত জোট ২০২৩ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মন্তব্য
১ বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ৩ হাজার ৭৮২ মেগাওয়াট ২৮ হাজার ৫৬২ মেগাওয়াট ৮ গুণ বৃদ্ধি
২ বিদ্যুৎ সুবিধাভোগীর হার মোট জন সংখ্যার ২৮ শতাংশ মোট জনসংখ্যার ১০০ শতাংশ প্রায় ৪ গুণ বৃদ্ধি
স্বাস্থ্য
ক্রম খাত ২০০৬ বিএনপি-জামাত জোট ২০২৩ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মন্তব্য
১ সরকারি হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা ৩৩ হাজার ৫৭৯ ৭১ হাজার ২ গুণ বৃদ্ধি
২ সরকারি ডাক্তারের সংখ্যা ৯ হাজার ৩৩৮
জন ৩০ হাজার ১৭৩ জন ৩ গুণ বৃদ্ধি
৩ সরকারি নার্সের সংখ্যা ১৩ হাজার ৬০২ জন ৪৪ হাজার ৩৫৭ জন প্রায় ৩ গুণ বৃদ্ধি
৪ মেডিক্যাল টেকনোলজিস্টের সংখ্যা ১ হাজার ৯৯৮ জন ৪৪ হাজার ৩৫৭ জন ৩ গুণ বৃদ্ধি
৫ নার্সিং কলেজ অ্যান্ড ইন্সটিটিউটের সংখ্যা ৩১টি ৯৯টি ৩ গুণ বৃদ্ধি
৬ কমিউনিটি ক্লিনিকের সংখ্যা আওয়ামী লীগ সরকার কর্তৃক ১৯৯৮-২০০১ মেয়াদে মোট ১০ হাজার ৭২৩টি কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ করা হয়। কিন্তু ২০০১ সালে বিএনপি এসে সকল ক্লিনিকের কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে। ১৪ হাজার ৯৮৪টি। কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র হতে বিনামূল্যে ৩০ প্রকার ঔষধ প্রদান করা হয়।
শিক্ষা
ক্রম খাত ২০০৬ বিএনপি-জামাত জোট ২০২৩ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মন্তব্য
১ স্বাক্ষরতার হার ৪৫ শতাংশ ৭৬.৮ শতাংশ ২ গুণ বৃদ্ধি
২ প্রাথমিক শিক্ষায় মেয়েদের অংশগ্রহণ ৫৪ শতাংশ ৯৮.২৫ শতাংশ ২ গুণ বৃদ্ধি
৩ কারিগরী শিক্ষায় ভর্তির হার ০.৮ শতাংশ ১৭.৮৮ শতাংশ ২২ গুণ বৃদ্ধি
৪ মাধ্যমিক পর্যায়ে নারী শিক্ষকের সংখ্যা ৫৯ হাজার ৫৫ জন ১ লক্ষ ১ হাজার ৮২৮ জন ২ গুণ বৃদ্ধি
৫ প্রাথমিক বিদ্যালয় সংখ্যা ৬৫ হাজার ৬৭২টি ১ লক্ষ ১৮ হাজার ৮৯১টি প্রায় ২ গুণ বৃদ্ধি
৬ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সংখ্যা ৩ লক্ষ ৪৪ হাজার ৭৮৯ জন ৬ লক্ষ ৫৭ হাজার ২০৩ জন প্রায় ২ গুণ বৃদ্ধি (২০০৯ হতে ২০২২ পর্যন্ত মোট ২ লক্ষ ৩৮ হাজার ৩১১ জন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।)
৭ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মহিলা শিক্ষক সংখ্যা ১ লক্ষ ৫৩ হাজার ৪১ জন ৪ লক্ষ ৩ হাজার ১৯১ জন ৩ গুণ বৃদ্ধি
৮ কারিগরী প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি) ৯টি ১৬৬টি ১৮ গুণ বৃদ্ধি
কৃষি
ক্রম খাত ২০০৬ বিএনপি-জামাত জোট ২০২৩ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মন্তব্য
১ দানাদার শস্যের উৎপাদন ১ কোটি ৮০ লক্ষ মেট্রিক টন ৪ কোটি ৯২ লক্ষ ১৬ হাজার মেট্রিক টন ৪ গুণ বৃদ্ধি
২ সেচের আওতাভুক্ত কৃষি জমি ২৮ লক্ষ হেক্টর ৭৯ লক্ষ হেক্টর ৩ গুণ বৃদ্ধি
৩ মোট মৎস্য উৎপাদন ২১.৩০ লক্ষ মে. টন ৫৩.১৪ লক্ষ মে.টন ২.৫ গুণ বৃদ্ধি
৪ গবাদি পশুর সংখ্যা ৪ কোটি ২৩ লক্ষ ১ হাজার ৭ কোটি ৯৮ লক্ষ ৭৮ হাজার প্রায় ২ গুণ বৃদ্ধি
৫ পোল্ট্রি সংখ্যা ১৮ কোটি ৬ লক্ষ ২২ হাজার ৫২ কোটি ৭৯ লক্ষ ১৯ হাজার ৪ গুণ বৃদ্ধি
৬ চা উৎপাদন ৩.৯ কোটি কেজি ৮.১০ কোটি কেজি ২ গুণ বৃদ্ধি
৭ লবণ উৎপাদন ৮.৫৪ লক্ষ মে.টন ২৩.৪৮ লক্ষ মে.টন ৩ গুণ বৃদ্ধি
৮ কৃষিখাতে ভর্তুকির পরিমাণ ১ হাজার ১৭০ কোটি টাকা ২৬ হাজার ৫৫ কোটি টাকা
৯ সারে ভর্তুকির পরিমাণ
(২০২২-২৩) - ২৫ হাজার ৭৬৬ কোটি টাকা
ভূমিহীন-গৃহহীনমুক্ত রাষ্ট্র নির্মাণ
ক্রম খাত ২০০৬ বিএনপি-জামাত জোট ২০২৩ বাংলাদেশ
আওয়ামী লীগ মন্তব্য
১ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার পুনর্বাসন ০ ৮ লক্ষ ৪৭ হাজার ৭১৪ পরিবার (নভেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত)
ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ
ক্রম খাত ২০০৬ বিএনপি-জামাত জোট ২০২৩ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মন্তব্য
১ মোট জনগোষ্ঠীর ইন্টারনেট ব্যবহার ০.২৩ শতাংশ জনগোষ্ঠী ৭৮.৫৫ শতাংশ জনগোষ্ঠী ৩৪২ গুণ বৃদ্ধি
২ সক্রিয় মোবাইল ফোন সিম সংখ্যা ১ কোটি ৯০ লক্ষ ১৮ কোটি ৮৬ লক্ষ ৪০ হাজার ১০ গুণ বৃদ্ধি
৩ ডিজিটাল সেবা সংখ্যা (সরকারি সংস্থা কর্তৃক ) ৮টি ৩ হাজার ২০০+টি ৪০০ গুণ বৃদ্ধি
৪ ওয়ান স্টপ সেন্টারের সংখ্যা ২টি ৮ হাজার ৯২৮টি সাড়ে ৪ হাজার গুণ বৃদ্ধি
৫ সরকারি ওয়েবসাইটের সংখ্যা ৯৮টি ৫২ হাজার ২০০+টি ৫৩৩ গুণ বৃদ্ধি
৬ আইসিটি রপ্তানির পরিমাণ ২১ মিলিয়ন ডলার ১.৯ বিলিয়ন ডলার ৯ গুণ বৃদ্ধি
৭ আইটি ফ্রি- ল্যান্সার সংখ্যা ২০০ জন ৬ লক্ষ ৮০ হাজার জন সারা বিশ্বে বাংলাদেশ ২য় স্থানে রয়েছে।
সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি
ক্রম খাত ২০০৬ বিএনপি-জামাত জোট ২০২৩ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মন্তব্য
১ সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ ২ হাজার ৫০৫ কোটি টাকা (মোট বাজেটের ৪.০১%) ১ লক্ষ ২৬ হাজার ২৭২ কোটি টাকা (মোট বাজেটের ১৬.৫৮%) ৫০ গুণ বৃদ্ধি
২ সামাজিক সুরক্ষা সেবার আওতাভুক্ত মোট উপকারভোগীর সংখ্যা ২১ লক্ষ জন ১০ কোটি ৬১ লক্ষ ১৪ হাজার জন ৫০ গুণ বৃদ্ধি
৩ উপবৃত্তি কার্যক্রমের সুবিধাভোগী (শিক্ষা ক্ষেত্রে উপবৃত্তি, বৃত্তি, উচ্চশিক্ষা সহায়তা কার্যক্রমে উপকারভোগীর সংখ্যা) ০ ৩ কোটি ৯৪ লক্ষ ১০ হাজার ৭৫৬ শিক্ষার্থী
৪ বয়স্ক, বিধবা ও স্বামী নিগৃহিতা এবং প্রতিবন্ধী ভাতা প্রাপ্ত উপকারভোগীর সংখ্যা ২১ লক্ষ ১৭ হাজার জন ১ কোটি ১৩ লক্ষ ১০ হাজার জন ৫ গুণের বেশি বৃদ্ধি
৫ বিদেশ ফেরৎ প্রবাসী কর্মীদের প্রদত্ত অনুদান (বার্ষিক) ১ কোটি ৩৪ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা
২১১ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা
১৫৭ গুণ বৃদ্ধি
৬ খাদ্য নিরাপত্তা ও কর্মসংস্থানমূলক কার্যক্রমের উপকারভোগী (ভিজিএফ, ভিজিডি, ভিডব্লিউবি, টিআর, জিআর, কাবিখা, কাবিটা, ইজিপিপি, ও এমএস খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি কার্যক্রমের সুবিধাভোগী) ৪ লক্ষ ৩০ হাজার জন ৪ কোটি ৬১ লক্ষ ১৫ হাজার জন ১০০ গুণ বৃদ্ধি
৭ হিজড়া জনগোষ্ঠীর উপকারভোগী ১ হাজার ১২ জন ৬ হাজার ৮৮৪ জন ৬ গুণ বৃদ্ধি
যোগাযোগ অবকাঠামো
ক্রম খাত ২০০৬ বিএনপি-জামাত জোট ২০২৩ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মন্তব্য
১ জেলা, আঞ্চলিক ও জাতীয় মহাসড়ক ১২ হাজার ১৮ কিলোমিটার ৩২ হাজার ৬৭৮ কিলোমিটার প্রায় ৩ গুণ বৃদ্ধি
২ গ্রাম্য সড়ক ৩ হাজার ১৩৩ কিলোমিটার ২ লক্ষ ৩৭ হাজার ৪৪৬ কিলোমিটার প্রায় ৭৬ গুণ বৃদ্ধি
৩ মোট রেলপথ ২ হাজার ৩৫৬ কিলোমিটার ৩ হাজার ৪৮৬ কিলোমিটার দেড় গুণ বৃদ্ধি
৪ বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সক্ষমতা ১১টি বিমান ২১টি বিমান ২০০৬ সালে প্রায় সকল বিমান ছিল অতি পুরাতন ও জরাজীর্ণ, বর্তমানে সেগুলো অত্যাধুনিক বিমান দ্বারা প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।
শূন্য থেকে শুরু
ক্রম খাত ২০০৬ বিএনপি-জামাত জোট ২০২৩ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মন্তব্য
১ ভূমিহীন-গৃহহীনমুক্ত জেলা ০ ৩২টি
(নভেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত)
২ ভূমিহীন-গৃহহীনমুক্ত উপজেলা ০ ৩৯৪টি
(নভেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত)
৩ ডিজিটাল সেন্টারের সংখ্যা ০ ৮ হাজার ৯৭২টি
৪ ইউনিয়ন পর্যায়ে উচ্চগতির ব্রডব্যান্ড সংযোগ ০ ২ হাজার ৬০০টি ইউনিয়ন
৫ দেশে উৎপাদিত মোবাইল ফোন ব্র্যান্ডের সংখ্যা ০ ১৫টি ব্র্যান্ড
৬ হাইটেক পার্ক, সফটওয়ার টেকনোলজি পার্ক এবং শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার ০ ১০৯টি
৭ ফ্যামিলি কার্ড ভিত্তিতে খাদ্য সহায়তা প্রাপ্ত উপকারভোগী (টিসিবি কর্তৃক প্রদত্ত) ০ প্রায় ৫ কোটি মানুষ
৮ মা ও শিশু সহায়তা কর্মসূচির উপকারভোগীর সংখ্যা ০ ৮৪ লক্ষ জন
৯ কৃষকদের প্রদানকৃত কৃষি কার্ডের সংখ্যা ০ ২ কোটি ৬২ লক্ষ কৃষক
১০ খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় উপকারভোগীর সংখ্যা ০ ৫১ লক্ষ জন
১১ ‘বর্গা চাষীদের জন্য কৃষিঋণ’ কর্মসূচির আওতায় উপকারভোগীর সংখ্যা ০ ২৮ লক্ষ বর্গা চাষী
১২ সর্বজনীন পেনশন স্কিমের সুবিধাভোগী ০ ৮ কোটি ৫০ লক্ষ জন
বিবিধ
ক্রম খাত ২০০৬ বিএনপি-জামাত জোট ২০২৩ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মন্তব্য
১ কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ৬ কোটি ৭৮ লক্ষ জন ১২ কোটি ৩৩ লক্ষ জন স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও জীবনমান বৃদ্ধির কারণে কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী প্রায় ২ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
২ ওয়ার্কিং ফোর্সে মহিলাদের অংশগ্রহণ ২১.২% ৪৩.৪৪% ২ গুণের বেশি বৃদ্ধি।
৩ বেকারত্বের হার ৬.৭৭% ৩.৪১% অর্ধেক হয়েছে
৪ দেশে মোট কর্মসংস্থান ৪ কোটি ৩০ হাজার জন ৭ কোটি ৭ লক্ষ ৩০ হাজার জন ২ গুণ বৃদ্ধি
৫ শ্রমিকদের নি¤œতম মজুরি মাসিক ১ হাজার ৪৬২ টাকা মাসিক ১২ হাজার ৫০০ টাকা ১২ গুণ বৃদ্ধি
৬ ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট (ভিডব্লিউবি) কার্যক্রমের উপকারভোগী ৩ লক্ষ ৭০ হাজার নারী ১৮ লক্ষ ২০ হাজার নারী ৫ গুণ বৃদ্ধি
৭ জয়িতা ফাউন্ডেশন গ্রাম পর্যায়ে জয়িতা ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে নারী উদ্যোক্তা সৃষ্টি ও অনলাইন ব্যবসা প্রশিক্ষণ প্রদান।
সুধিবৃন্দ,
দ্বাদশ নির্বাচনকে সামনে রেখে আমরা আবারও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। অতীতের ধারাবাহিকতায় এবারও আমরা সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে একটি বাস্তবায়নযোগ্য নির্বাচনী ইশতেহার তৈরি করেছি। ২০০৮, ২০১৪ এবং ২০১৮-এর নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষিত দীর্ঘমেয়াদি কর্মপরিকল্পনাগুলির ধারাবাহিকতা দ্বাদশ নির্বাচনী ইশতেহারেও রক্ষিত হয়েছে।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দ্বাদশ নির্বাচনী ইশতেহার পুস্তিকা আকারে প্রকাশ করা হয়েছে। এখানে এই স্বল্প সময়ে তা সবিস্তারে তুলে ধরা সম্ভব নয়। আমি সংক্ষিপ্তাকারে কয়েকটি বিষয় আমার লিখিত বক্তব্যে আপনাদের সামনে তুলে ধরেছি।
৩.১ ডিজিটাল থেকে স্মার্ট বাংলাদেশে উত্তরণ
চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে বিশ্ব প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য প্রযুক্তি সক্ষমতা একান্ত প্রয়োজন। এজন্য আমরা ‘স্মার্ট নাগরিক’, ‘স্মার্ট সরকার’, ‘স্মার্ট অর্থনীতি’ ও ‘স্মার্ট সমাজ’ - এই চারটি স্তম্ভের সমন্বয়ে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার ঘোষণা দেই। স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নে আমরা প্রতিটি ক্ষেত্রে কাজ করছি। আমরা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হলে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত স্মার্ট সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলবো, ইনশাআল্লাহ।
৩.২ সুশাসন
ক) গণতন্ত্র, নির্বাচন ও কার্যকর সংসদ
গণমানুষের দল আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই-সংগ্রাম করে আসছে। মানুষের মৌলিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিতে আমরা সদা তৎপর। গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় নির্বাচনের মাধ্যমে একটি কার্যকর সংসদই পারে কেবল জনগণের স্বার্থ রক্ষা করতে।
আমরা নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করলে রাষ্ট্র পরিচালনার সকল ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, সুশাসন ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের চর্চা আরও সুদৃঢ় করবো।
খ) আইনের শাসন ও মানবাধিকার সুরক্ষা
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আইনের শাসন ও মানবাধিকারের সপক্ষে সবসময়ই সোচ্চার। সামাজিক বৈষম্য নিরসন করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের কাঙ্খিত শোষণমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করাই আমাদের লক্ষ্য। যেখানে আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্য, স্বাধীনতা এবং সুবিচার নিশ্চিত হবে।
বিচার বিভাগের স্বাধীনতা সংরক্ষণ ও মর্যাদা সমুন্নত রাখা হবে। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের স্বাধীনতা এবং কার্যকারিতা সুনিশ্চিত করার ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে।
গ) গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও অবাধ তথ্যপ্রবাহ
আওয়ামী লীগ সরকার অবাধ তথ্যপ্রবাহ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছে। ১৯৯৬ মেয়াদে আমরাই প্রথম বেসরকারি খাতে টেলিভিশন ও রেডিও উন্মুক্ত করি। বিগত ১৫ বছরে গণমাধ্যমের ব্যাপক বিকাশ ঘটেছে। দেশে পত্রিকার সংখ্যা ৩ হাজার ২৪১টি। ৩৩টি বেসরকারি টিভি চ্যানেল, ২৩টি এফএম বেতার এবং ১৮টি কমিউনিটি বেতার কেন্দ্র বর্তমানে সম্প্রচার কার্যক্রম পরিচালনা করছে। সাংবাদিকগণ যাতে নির্যাতন, ভয়ভীতি-হুমকি, মিথ্যা মামলার সম্মুখীন না হন তার ব্যবস্থা করা হবে। ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন, ২০২৩’ অনুযায়ী ব্যক্তির গোপনীয়তা ও তথ্য সংরক্ষণ করা হবে এবং অপব্যবহার রোধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ অব্যাহত থাকবে। সাংবাদিকদের জন্য দশম ওয়েজবোর্ড গঠনের প্রক্রিয়া চলমান। সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের আওতায় সাংবাদিকদের আর্থিক ও চিকিৎসা সহায়তাকে আরও সম্প্রসারণ করা হবে।
ঘ) জনকল্যাণমুখী, জবাবদিহিমূলক, দক্ষ ও স্মার্ট প্রশাসন
নাগরিককেন্দ্রিক, স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক, জ্ঞানভিত্তিক, কল্যাণমুখী, সমন্বিত দক্ষ স্মার্ট প্রশাসন গড়ার মাধ্যমে জনগণকে উন্নত ও মানসম্মত সেবা প্রদান ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ অঙ্গীকারবদ্ধ। মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের মাধ্যমে দক্ষ, উদ্যোগী, তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর, দুর্নীতিমুক্ত দেশপ্রেমিক ও জনকল্যাণমুখী প্রশাসনিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রচেষ্টা চলমান থাকবে।
ঙ) জনবান্ধব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গড়ে তোলা
আওয়ামী লীগ সরকার সবসময়ই তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর, উন্নত, মানবিক ও জনবান্ধব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গঠনের লক্ষ্যে কাজ করেছে। ফলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সক্ষমতা বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। স্মার্ট বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে স্মার্ট ও আধুনিক হিসেবে গড়ে তোলা হবে।
চ) দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ
আওয়ামী লীগ দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে সমাজ থেকে দুর্নীতির মূলোৎপাটন করতে কাজ করে যাচ্ছে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে দুর্নীতিবিরোধী মনোভাব গড়ে তোলার জন্য পাঠ্যক্রমে দুর্নীতির কুফল ও দুর্নীতি রোধে করণীয় বিষয়ে অধ্যায় সংযোজন করা হবে।
ছ) সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িকতা
আওয়ামী লীগ সন্ত্রাস দমন, সকল নাগরিকের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা ও জনগণের জীবনমান উন্নয়নে প্রতিশ্