পথরেখা অনলাইন : ৭৪ দিন পর তালা ভেঙে নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের বন্ধ গেট খুলেছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে ১১ জানুয়ারি ২০২৪ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা ৪২ মিনিটে কার্যালয়ে প্রবেশ করেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। এ সময় তাঁরা সরকারবিরোধী নানা স্লোগান দিতে থাকেন।
কার্যালয়ে প্রবেশ করে রিজভী সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের যুবদলের একজন নেতা ও একজন প্রবীণ সাংবাদিক হত্যার মধ্য দিয়ে এক ভয়াবহ নিপীড়নের তাণ্ডব শুরু হয়। গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশ পণ্ড করে পুলিশ এক নারকীয় তাণ্বড চালিয়ে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তালা লাগিয়ে দিয়েছিল। দুই মাসের অধিক সময় পুলিশ কাউকে এখানে ঢুকতে দেয়নি এবং আশপাশে ভিড়লেও তাদেরকে আটক করে নিয়ে যায়।’
রিজভী আরো বলেন, ‘পুলিশ এই কার্যালয়ের চাবি নিয়ে যায়। কত নাটক করেছে। তারপর গেট বন্ধ করে দিয়ে চলে যায়। সবই গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা দেখেছেন, জানেন। আমরা আমাদের প্রিয় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এখন ঢুকেছি। পুলিশের কাছে চাবি চাওয়ার পরও আমাদেরকে চাবি দেওয়া হয়নি। পরে কর্মীরাসহ তালা ভেঙে এই কার্যালয়ে আমরা প্রবেশ করি।’
রিজভী বলেন, ‘দেশের একটি নিয়মতান্ত্রিক কার্যকর রাজনৈতিক দল বিএনপি। এই দল বারবার রাষ্ট্র পরিচালনা করেছে অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে, দক্ষতার সঙ্গে। সেই দলের প্রধান কার্যালয় একটি মাফিয়াতন্ত্র, একটি মাফিয়া সরকার বন্ধ করে রেখেছে। সুতরাং পুলিশ চাবি না দেওয়াতে তালা ভেঙে আমরা ঢুকেছি।’
বিকেলে সংবাদ সম্মেলন জানিয়ে রিজভী বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন পুরো কার্যালয় কী ভয়ংকর ধুলোবালি জমেছে। এটা এখন আমাদের পরিষ্কার করতে হবে। বিকেল ৩টায় আমাদের দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যগণ এই কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করবেন।’
রিজভী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী গণতন্ত্রের কথা বলেন। নিজেদের মধ্যে নিজেরা নির্বাচন করেন। নিজেদের জয়, নিজেদের পরাজয় এককভাবে ওদের নিজের জয়।’ নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রবেশ করে দেখা গেছে পুরো কার্যালয় ধুলোবালির স্তূপ জমেছে। কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের কক্ষগুলোতে এলোমেলোভাবে পড়ে আছে চেয়ার টেবিল, কাজগপত্র, পত্রিকা।
গত ২৮ অক্টোবর দুপুরে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মহাসমাবেশের আয়োজন করেছিল বিএনপি। এ সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হলে সমাবেশ স্থগিত করে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করে চলে যান বিএনপির নেতাকর্মীরা। দিনভর সংঘর্ষের পর ওই দিন এই কার্যালয় থেকে নেতাকর্মীদের বের করে দিয়ে তালা লাগিয়ে চাবি নিয়ে যায় পুলিশ। এর পর থেকে সিআইডির ‘ক্রাইম সিন’ স্টিকার লাগিয়ে কার্যালয়ের সামনে সবার প্রবেশ বন্ধ করে রাখে এবং সেখান থেকে তারা ১১টি আলামত সংগ্রহ করে।
পথরেখা/আসো