পথরেখা অনলাইন : নড়াইলের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে আবাদ হয়েছে সরিষার। সরিষা ঘরে তোলার আগেই মধু সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন স্থানীয় ও বাইরের এলাকা থেকে আগত চাষিরা। নড়াইল সদর, কালিয়া ও লোহাগড়া উপজেলার বিভিন্ন মাঠে শতাধিক চাষি মধু সংগ্রহ করছেন। শীতের এই মৌসুমে মাঠ জুড়ে যেমন থাকে হলুদ সরিষা ক্ষেত তেমনি এই সরিষা ফুল থেকে মধু আহরণ করে একটি বড় বাণিজ্যে পরিণত হয়েছে। বছরের এই সময়ে মোটা দাগের মধু সংগ্রহের মৌসুম। জানা গেছে, বড় খামারিরা এই মৌসুমে ৮ থেকে ১০ টন মধু সংগ্রহ করবেন এবং মাঝারী বা ছোট খামারিরা ২ থেকে ৫ টন পর্যন্ত মধু সংগ্রহের আশা করছেন।
বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে হলুদ সরিষা ক্ষেত। ঘন হলুদে চোখ জুড়ানো প্রকৃতি চলছে। সরিষা ক্ষেতের এই ফলনে দিনদিন মধু চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। প্রত্যেক সরিষা মাঠের পাশেই বসানো হয়েছে মৌচাষের বাক্স। মৌমাছি ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে বাক্সে ভরছে। এই দৃশ্য এখন সরিষা ক্ষেতের সবজায়গায়। মধু সংগ্রহ করতে আসা চাষিরা জানান, আবহাওয়া ভালো থাকলে আশানুরূপ মধু সংগ্রহ করতে পারবেন।
নড়াইল সদরের রগুনাথপুর গ্রামের খামারি মোহাম্মাদ নাছির উদ্দিন জানান, আমরা অনেকেই মধু সংগ্রহ করি ইতোমধ্যে আমরা ১ টন মধু সংগ্রহ করেছি। মধু চাষে আমরা যথেষ্ট লাভবান হচ্ছি। এছাড়া মধু চাষের ফলে সরিষার ফলন বৃদ্ধি পায় এবং পোকা মাকড় আক্রমণ কম করে।
মাগুরা জেলা থেকে আসা সাইফুল ইসলাম নামে এক খামারি তুলারামপুর মিতনা মাঠে ২শত মধুর বাক্স স্থাপন করেছেন। তিনি জানান, এ মৌসুমে আমাদের ২০০ বাক্স আছে। আমরা আশা করছি ৪ টন মধু পাব। আবহাওয়া যদি অনুকূলে থাকে আমাদের আশা পূরণ হবে এই মাঠ থেকে। উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রিপন বিশ্বাস জানান, আমরা মধু চাষিদের সরিষার জমিতে মধু সংগ্রহের উৎসাহিত করে থাকি, এর ফলে সরিষার পরাগায়ন যেমন ভালো হয়, এতে করে তেলের উৎপাদন বাড়ে পাশাপাশি মধুর বাজার মূল্যে ভালো হওয়ায় চাষিরা লাভবান হবে। এবং আমাদের দেশের মধুর চাহিদা পূরণ হয়।
নড়াইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক দীপক কুমার রায় বলেন, এবারে নড়াইল জেলায় এবছর জেলায় ১২ হাজার ৮’শ ৮৮ হেক্টর জমিতে এ বছর সরিষার আবাদ হয়েছে। প্রায় একশ মৌচাষি এখান থেকে ১’শ টন মধু আহরণ করতে পারবে। সরিষা ক্ষেতে মধু বাক্স স্থাপনের ফলে সরিষার ফলন ১০ থেকে ১৫ পার্সেন্ট ফলন বৃদ্ধি পাবে। পাশাপাশি ব্যাপক ভাবে মধু আহরিত হবে। এর ফলে আর্থ সামাজিক উন্নয়নে এবং পুষ্টিতে বিশেষ অবদান রাখবে।
পথরেখা/আসো