থরেখা অনলাইন : বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজিত ১২ দিনব্যাপী পঞ্চদশ জাতীয় শিশু-কিশোর ও যুব নাট্যেৎসবের সমাপ্তি হয়েছে। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ও পিপলস থিয়েটার এসোসিয়েশন যৌথভাবে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩ মার্চ পর্যন্ত জাতীয় শিশু-কিশোর ও যুব নাট্যোৎসব আয়োজন করে।
শিল্প সংস্কৃতি ঋদ্ধ সৃজনশীল মানবিক বাংলাদেশ গড়ার অভিলক্ষ্যে অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় শিল্প নিয়ে পৌঁছে যাবো আমারা উন্নতির শিখরে’ এই প্রতিপাদ্যে শিল্পের সকল শাখার সমন্বয়ে বৈচিত্র্যময় ও সাংস্কৃতিক প্রভাব সৃষ্টিকারী কর্মসূচিগুলো দেশব্যাপী বাস্তবায়ন করছে বাংলাদশে শিল্পকলা একাডেমি। ১০ হাজার শিশুর মিলনমেলায় প্রতিদিন বিভিন্ন জেলা থেকে আগত নাট্যদলের বৈচিত্র্যময় পরিবেশনায় জমে ওঠেছিল এ উৎসব।
দেশের কাঙ্খিত সামগ্রিক উন্নয়নের টেকসই রূপায়নে সকল শ্রেণী, সম্প্রদায়ের শিশু-কিশোর ও যুবকদের সম্পৃক্ত ও অনুপ্রাণিত করতে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ও পিপলস থিয়েটার এসোসিয়েশন যৌথভাবে দেশের শিশু-কিশোর ও যুবকদের ১০০টি নাট্য প্রযোজনা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনা নিয়ে এবার পঞ্চদশ জাতীয় শিশু-কিশোর ও যুব নাট্যোৎসব আয়োজন করেছে। এই উৎসবে জেলা শিল্পকলা একাডেমির ৬৪টি ও পিপলস থিয়েটার এসোসিয়েশনের সদস্য সংগঠনের ৩৬টি প্রযোজনা মঞ্চস্থ হয়। আজ সমাপনী দিনে একাডেমির ৪টি মিলনায়তনে নাটক পরিবেশন করা হয়। জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে বিকাল ৫টায় সুনীল বিশ্বাসের রচনা ও নির্দেশনায় এবং প্রতীক লিটল থিয়েটার, হবিগঞ্জ এর পরিবেশনায় ‘নতুন কুড়িদের গল্প’ নাটক মঞ্চন্থ হয়। সন্ধ্যা ৬টায় পিপল্স লিট্ল থিয়েটার, ঢাকা এর পরিবেশনায় সমাপনী অনুষ্ঠিত হয়। সমাপনী ঘোষণা করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী।
এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে বিকাল ৫টায় কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মূলগল্প অবলম্বনে ইনসুফ হাসান অর্ক এর নাট্যরূপ, কামরান হাসার এর নির্দেশনায় এবং জেলা শিল্পকলা একাডেমি ফেনী এর পরিবেশনায় ‘তোতা কাহিনী’ নাটক মঞ্চস্থ হয় এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে। সন্ধ্যা ৬টায় মো: সোহেল রানার রচনায় এবং জেলা শিল্পকলা একাডেমি রাঙ্গামাটি এর পরিবেশনায় ‘দূরন্তপনা’ নাটক মঞ্চস্থ হয়। সন্ধ্যা ৭টায় কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর রচনায় কামরুল হাসান রিপনের নির্দেশনায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি, যশোর এর পরিবেশনায় ‘ডাকঘর’ নাটক মঞ্চস্থ হয়। রাত ৮টায় স্বপন ভট্টাচার্য্যের নাট্যরূপ, আনোয়ার হোসেন আলমের নির্দেশনায় এবং ভিক্টোরিয়া কলেজ থিয়েটার, কুমিল্লা এর পরিবেশনায় ‘যখন বৃত্তের বাইরে’ নাটক মঞ্চস্থ হয়। স্টুডিও থিয়েটার হলে ৫টায় ইফসুফ ইকবাল দীপু এর রচনায়, টিংকু রঞ্জণ মল্লিক এর নির্দেশনায় এবং জেলা শিল্পকলা একাডেমি, লক্ষীপুর এর পরিবেশনায় ‘প্রকৃতি পাঠ’ নাটক মঞ্চস্থ হয়। সন্ধ্যা ৬টায় ফারহান কবীর সিফাত এর পরিকল্পনা ও নাট্যরূপ, শেখ আবদুস সবুরের নির্দেশনায় এবং জেলা শিল্পকলা একাডেমি, গোপালগঞ্জের পরিবেশনায় ‘যান্ত্রিক যন্ত্রণা’ নাটক মঞ্চস্থ হয়। সন্ধ্যা ৭টায় খন্দকার ইমু কামাল এর নাট্যরূপ, জিহাদুল রহমানের নির্দেশনায় এবং স্বদেশ নাট্যাঙ্গন, রাজবাড়ী এর পরিবেশনায় ‘মহেশ’ নাটক মঞ্চস্থ হয়। রাত ৮টায় বাংলা কলেজ যুব থিয়েটার এর পরিবেশনায় ‘জাগরণী’ নাটক মঞ্চস্থ হয়।
জাতীয় সঙ্গীত ও নৃত্যকলা মিলনায়তনে বিকাল ৫টায় মো. মাইন উদ্দীন এর রচনা ও নির্দেশনায় এবং জেলা শিল্পকলা একাডেমি, খাগড়াছড়ি এর পরিবেশনায় ‘বৈখরী বদল (ত্রিপুরা ভাষা)’ নাটক মঞ্চস্থ হয়। সন্ধ্যা ৬টায় সংগৃহীত রচনায়, বাপ্পী পোদ্দারের নির্দেশনায় এবং কিশোর থিয়েটার, ফেনী এর পরিবেশনায় ‘টকশো’ নাটক মঞ্চস্থ হয়। সন্ধ্যা ৭টায় দীপংকর দাস রতনের রচনা ও নির্দেশনায় এবং তির্ষক যশোর, যশোর এর পরিবেশনায় ‘উচ্চারণ বিভ্রাট’ নাটক মঞ্চস্থ হয়। রাত ৮টায় জসীম উদ্দিন এর রচনায় এলাহী হোসেন জীবন এর নির্দেশনায় এবং জেলা শিল্পকলা একাডেমি, নড়াইল এর পরিবেশনায় ‘নকশি কাঁথার মাঠ’ নাটক মঞ্চস্থ হয়।
এই উৎসবে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের ডাকঘর থেকে শুরু করে শরৎচন্দ্র চট্টপাধ্যায়ের মহেশ, একই সাথে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি সম্প্রদায়ের ভাষায় নাট্যরচনা থেকে বর্তমান প্রযুক্তির যুগে বাবা মায়ের সাথে শিশুদের মোবাইল আসক্তি, নানান শিক্ষা সচেতনতামূলক গল্পে অভিনয়ের মাধ্যমে সমাজ সংস্কারের বার্তা দিয়েছে শিশুরা।
পথরেখা/আসো