• শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
    ৬ আশ্বিন ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ০৯:৩৯

অনন্য উদ্যোগে শামিল জয়া মিথিলা

পথরেখা অনলাইন : সমাজমাধ্যমে হ্যাশট্যাগে লেখা ‘অড ডট সেল্‌ফি’। বাংলাদেশে নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে চর্চিত এই উদ্যোগে শামিল হয়েছেন একাধিক তারকা। কপালের কেন্দ্রে গোলাকার টিপ যেমন নারী সৌন্দর্যের প্রতীক হতে পারে, তেমনই কেন্দ্র থেকে তার সামান্যতম বিচ্যুতি তাঁর ভাল না থাকার ইঙ্গিতও দিতে পারে। হয়ে উঠতে পারে ‘নির্যাতন’-এর প্রতীক। আর এই টিপকেই নির্যাতনের প্রতিবাদে হাতিয়ার করে নিয়েছেন বাংলাদেশের মহিলা সমাজের একাংশ।
 
বিগত কয়েক দিন সমাজমাধ্যম ঘাঁটলেই চোখে পড়েছে বাংলাদেশি মহিলাদের নিজস্বী (বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সাদা-কালো)। কপালে লাল টিপটি যথাস্থান থেকে একটু সরেছে। সঙ্গে হ্যাশট্যাগ হিসেবে লেখা ‘অড ডট সেল্‌ফি’। সাধারণ মহিলাদের সঙ্গে এই উদ্যোগে শামিল হয়েছেন জয়া আহসান, রাফিয়াত রশিদ মিথিলা ও নুসরত ইমরোজ তিশার মতো সে দেশের অভিনেত্রীরা। সময়ের সঙ্গে এই আন্দোলনে শামিল হয়েছেন সে দেশের একাধিক সমাজমাধ্যম প্রভাবী ও সাধারণ মহিলারা।
 
এই উদ্যোগে যে নিজস্বী সমাজমাধ্যমে পোস্ট করা হচ্ছে, তার সঙ্গে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই লেখা হচ্ছে, ‘বাংলাদেশে প্রতি তিন জনে এক জন নারী ঘরে-বাইরে নানা ভাবে নির্যাতনের শিকার। প্রতি বছর ক্রমেই নারী নির্যাতনের এই হার বেড়ে চলেছে। কিন্তু সেই অনুপাতে সবাই মিলে প্রতিবাদ হচ্ছে না। কারণ, আমাদের সমাজে নারীদের শেখানো হয় চুপচাপ নীরবে সহ্য করতে। কিন্তু এ ভাবে আর কত দিন?’ এই উদ্যোগের নেপথ্যে রয়েছে বাংলাদেশের ‘মঙ্গলদীপ ফাউন্ডেশন’। সম্প্রতি নারী দিবসকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে এই উদ্যোগ।
 
শুধু বাংলাদেশ নয়, জয়ার মতে, ভারতীয় উপমহাদেশে নারীদের উপর খুব ‘বড়’ নির্যাতনের ঘটনা না ঘটলে প্রতিবাদের স্রোত তৈরি হয় না। তিনি বললেন, ‘অন্যথায় যেন ধরে নেওয়া হয় যে, নির্যাতন গা-সওয়া হয়ে গিয়েছে। অনেক সময়ে সংবাদমাধ্যম নীরব থাকে। ফলে আমরাও ভুলে যাই।’ নির্যাতনের প্রতিবাদের ইচ্ছে থাকলেও সমাজের সব মহিলা তা করতে পারেন না বলেই মনে করেন জয়া। তাঁর কথায়, ‘একটা সময় পরিবার ও নির্যাতিতার অসম্মানের ভয়ে শেখানো হত মুখ না খুলতে। কিন্তু এখন সেই দিন আর নেই।’ তবে নির্দিষ্ট কোনও দিন বা ‘নারীবাদ’ নিয়ে আলাদা করে জয়ার কোনও উৎসাহ নেই। বছরের প্রতিটা দিনই তিনি নারীদের জন্য উদ্‌যাপন করতে চান। তাঁর যুক্তি, ‘যার জন্য ৮ মার্চ আমি আলাদা করে কিছু সমাজমাধ্যমে পোস্টও করি না।’
 
সম্প্রতি বাংলাদেশে হাতিদের উপর নির্যাতনের প্রতিবাদে আদালতে একটি মামলা করেছিলেন জয়া। আদালত তাঁর আবেদনের পক্ষেই রায় দিয়েছে। তবে ‘অড ডট সেল্‌ফি’ প্রসঙ্গে জয়া বললেন, ‘আমার মনে হয়েছে নারীদের ক্ষমতায়নের জন্যই এ রকম একটা উদ্যোগে অংশ নেওয়া যেতে পারে। তাঁদের সঙ্গে একাত্ম হওয়ার একটা প্রকাশ মাত্র। তবে বিষয়টা নিয়ে আলাদা কোনও প্রচার আমি করতে চাই না।’ জয়ার আশা, আগামী দিনে এই উদ্যোগটি বাংলাদেশের সীমা অতিক্রম করে ভারত, পাকিস্তান-সহ পড়শি দেশেও ছড়িয়ে পড়বে। নারীর পাশে দাঁড়াতে জয়া কিন্তু পুরুষদের ব্রাত্য করতে রাজি নন। তাঁর স্পষ্ট উত্তর, ‘আমি কিন্তু কোনও ভাবেই পুরুষবিদ্বেষী নই। আমি দু’জনের সমানাধিকারে বিশ্বাসী।’ অভিনেত্রী মনে করেন, নারী-পুরুষ উভয়ই হাতে হাত মিলিয়ে এগোলে তবেই সমাজ সার্বিক ভাবে সুন্দর হয়ে উঠবে।
 
বিভিন্ন সমীক্ষা বলছে বাংলাদেশে প্রতি তিন জন মহিলার মধ্যে এক জন নির্যাতনের শিকার। নারী নির্যাতনের পরিসর শুধুই বাংলাদেশ নয়, পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তেই রয়েছে বলে মনে করেন মিথিলা। তিনি বললেন, ‘নির্যাতনের কোনও ঘটনা প্রকাশ্যে এলে কত জন তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেন? প্রাথমিক ভাবে হলেও পরে আমরা ভুলে যাই। তার পর আরও একটা হিংসার খবর প্রকাশ্যে আসে। নির্যাতন অবিলম্বে বন্ধ হওয়া উচিত।’ একই সঙ্গে মিথিলা স্মরণ করিয়ে দিতে চাইলেন পুরুষদের উপর নির্যাতনের প্রসঙ্গ। তাঁর কথায়, ‘কিন্তু সমীক্ষা বলছে পুরুষদের তুলনায় নারীদের উপর নির্যাতনের হার অনেক বেশি।’
 
নারীদের উপর নির্যাতন যে শুধুমাত্র ‘গার্হস্থ্য হিংসা’র মধ্যে আটকে থাকে না, তা মনে করিয়ে দিতে চাইছেন মিথিলা। বললেন, ‘রাস্তায় বা গণ পরিবহনেও তো নারীদের নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে। তার থেকেও বড় কথা এখন সমাজমাধ্যমে তাদের উপর অসম্মানের হার ক্রমশ বাড়ছে।’ বিভিন্ন সময়ে সমাজমাধ্যমে কটাক্ষের শিকার হতে হয়েছে মিথিলাকে। এই প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ‘বিষয়টা এখন আর শুধুই তারকাদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। আমাদের চারপাশে অধিকাংশ মহিলাকেই এই ধরনের আক্রমণের শিকার হতে হচ্ছে। ’
 
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে নারী নির্যাতনের খবরকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু মিথিলা মনে করেন, এই ধরনের খবরের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি করা উচিত। ফলে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সর্বত্র সচেতনতা বৃদ্ধি পাবে। তাঁর কথায়, ‘পাশাপাশি প্রশাসনকেও আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। নির্যাতিতা যেন চুপ না থেকে অভিযোগ জানাতে পারেন, সেটাও দেখতে হবে।’ মিথিলা নিজে এক জন সমাজকর্মী। ব্যক্তিগত স্তরেও বিভিন্ন সময়ে মিথিলা নারী ক্ষমতায়নের পক্ষে সমাজমাধ্যমে বার্তা দেন। বললেন, ‘নারী এবং শিশুদের নিয়েই যে হেতু প্রতি দিন আমাকে কাজ করতে হয়, তাই সব সময়েই তাঁদের উন্নতি সাধনের চেষ্টা করি।’
পথরেখা/আসো
 

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।