পথরেখা অনলাইন : নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী আজ ৫ জুন মঙ্গলবার ঢাকায় বাংলাদেশ শিশু একাডেমী মিলনায়তনে নৌ নিরাপত্তা সপ্তাহ- ২০২৪ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্হিত ছিলেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকার নিরাপদ নৌযান ও দূষণমুক্ত নদী গড়ার লক্ষ্যে আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। দেশপ্রেম না থাকলে, দেশের জন্য কাজ না করলে এগিয়ে যাওয়া যায় না।’
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সার্বিক তত্ত্বাবধানে দুর্ঘটনামুক্ত নৌ চলাচল ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে প্রতি বছরের মত এ বছরও “নৌ নিরাপত্তা সপ্তাহ ২০২৪’’ পালিত হচ্ছে। এবারের প্রতিপাদ্য “দূষণমুক্ত নদী ও নিরাপদ নৌযান, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে রাখবে অবদান”।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, দূষণমুক্ত নদী ও নিরাপদ নৌযান এ লক্ষ্যে আমরা এখনো পৌঁছতে পারি নাই। কিছুটা ঘাটতি, দুর্বলতা রয়েছে। যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা ‘দূষণমুক্ত নদী ও নিরাপদ নৌযান’ এ লক্ষ্যে পৌঁছতে না পারবো ততদিন আমরা “দূষণমুক্ত নদী ও নিরাপদ নৌযান, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে রাখবে অবদান” এ প্রতিপাদ্যটি ব্যবহার করব। বিশ্বের অনেক বড় বড় নদী টেমস, হাইমস, রাইন, হান নদী একসময় দূষিত ছিল; এখন সেখানকার পানি পান করা যায়। তিনি জানান, ‘বিশিষ্ট পানি সম্পদ বিশেষজ্ঞ ড. আইনুল নিশাত বলেছেন, একসময় তারা বুড়িগঙ্গার পানি পান করেছেন।’
২০১৯ সালে নদী দখলমুক্ত করার অনেক চ্যালেঞ্জ ছিল-উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাহস দিয়েছেন। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) নদী নিয়ে ভাবেন, নদীর প্রবাহ নিশ্চিত করার কথা বলেন। আওয়ামী লীগ গত তিন মেয়াদে ৪০টি ড্রেজার সংগ্রহ করেছে। আরো ৩৫টি ড্রেজার সংগ্রহের কাজ চলমান রয়েছে। নদী দূষণমুক্ত করতে গ্র্যাপ ড্রেজার, হোপার ড্রেজার সংগ্রহের টেন্ডার চলমান রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার কথা বলেছেন। আমরা অঙ্গীকার করছি- ২০৪১ সালের আগেই দূষণমুক্ত নদী ও নিরাপদ নৌযান করতে পারি তাহলেই এই দিবস পালনের স্বার্থকতা হবে।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার প্রসঙ্গ টেনে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ৭৫ এর ১৫ আগস্ট এর পর সবকিছু হারিয়ে যেতে শুরু করে। তখনকার সরকার ক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্য রাষ্ট্রকাঠামো ভেঙ্গে ফেলেছিল। বুড়িগঙ্গাসহ নদ-নদী খাল-বিল সবকিছু দূষিত করা হয়েছে। কারণ বাংলাদেশকে তুলে দেয়া হয়েছিল অপরাধীদের হাতে। ১৯৯৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নদীর নাব্যতা, দখল ও দূষণমুক্ত রাখার কথা বলেন। ২০১৯ সালে নদী তীরের অবৈধ দখল মুক্ত করার জন্য পদক্ষেপ নেয়া হয়েছিল। ম্যানমেইড বর্জ্য, শিল্প-কারখানার বর্জ্য দূষণমুক্ত করতে কাজ করছি।
নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমডোর এম মাকসুদ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মাহফুজুর রহমান এমপি, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোস্তফা কামাল, বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান ড. এ কে এম মতিউর রহমান, বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফা, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌচলাচল (যাপ) সংস্থার সাবেক প্রধান উপদেষ্টা গোলাম কিবরিয়া টিপু এমপি, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌচলাচল (যাপ) সংস্থার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুব উদ্দিন বীরবিক্রম, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ট্যাংকার ওনার্স এসোসিয়েশনের সভাপিত খন্দকার মশিউজ্জামান (রোমেল), বাংলাদেশ কোস্টাল শিপ ওনার্স এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. মেহবুব কবির, বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মো. শাহা আলম ও বাংলাদেশ নৌ পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি জাহাঙ্গীর বেপারী।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নৌপরিবহন অদিপ্তরের চীফ ইঞ্জিনিয়ার এন্ড শিপ সার্ভেয়ার মনজুরুল কবীর।
পথরেখা/রাসু