পথরেখা অনলাইন : কোরবানির ঈদে মাংস যদি হয়ে থাকে একটু ভিন্ন স্বাদের, তবেই জমে ওঠে ঈদের খাবারের পরিপূর্ণতা। কোরবানির সময় মাংসের সঙ্গে কিন্তু কম-বেশি সবাই গরু বা খাসির কলিজা পেয়ে থাকেন। আজ থাকছে গরুর কলিজা রান্নার একটি চমৎকার রেসিপি। খাসির কলিজা রান্না করতেও এই রেসিপি ব্যবহার করতে পারেন।
বাড়িতে যদি সিম্পল সাদা পোলাও বা পোলাও এর চাল দিয়ে খিচুড়ি রান্না করা হয়। তাহলে রান্না করা কলিজা ভুনা দিয়ে খেতে অসাধারণ লাগবে। এর সঙ্গে যদি একটু শশা বা টমেটোর সালাদ থাকে তবে তো কথাই নেই। ঈদের দুপুরে জম্পেশ ভুরিভোজ। খেতে দারুণ স্বাদের এই রেসিপি দিয়েছেন মোর্শেদা শারমিন।
উপকরণ :
গরুর কলিজা ৭৫০ গ্রাম (ছোট টুকরা করে কাটা), গরুর মাংস ২৫০ গ্রাম (ছোট টুকরা করে কাটা), আলু মাঝারি আকারের ৫টি (ছোট টুকরা করে কাটা), পেঁয়াজ মাঝারি আকারের ১০টি (কুচি করে কাটা), ছেঁচে নেওয়া রসুন (৩ পিস), পেঁয়াজ বাটা (আধা কাপ), রসুন বাটা (৪ টেবিল চামচ), আদা বাটা (২ টেবিল চামচ), জিরা বাটা (দেড় টেবিল চামচ), ধনে বাটা (১ টেবিল চামচ), কাজু বা কাঠ বাদাম বাটা (১০০ গ্রাম), হলুদ গুঁড়া (১ চা চামচ), মরিচ গুঁড়া (২ চা চামচ), গরম মসলার গুঁড়া (১ চা চামচ), আস্ত সবুজ এলাচি (৫ পিস), কালো বড় এলাচি (এক পিস), দারুচিনি মাঝারি আকারের (৩ পিস), লবঙ্গ (৫ পিস), তেজপাতা (২ পিস), টক দই (আধা কাপ), সরিষার তেল পৌনে এক কাপ, কাঁচা মরিচ (৪ থেকে ৫ পিস), লবণ স্বাদমতো।
প্রণালী :
প্রথমে একটি হাঁড়িতে ১ লিটার পরিমাণ পানি সামান্য লবণ দিয়ে চুলায় বসিয়ে দিন। পানি ফুটে উঠলে গরুর কলিজা তাতে দিয়ে দিন। একে একে তিনবার বলক এলে চুলা থেকে হাড়ি নামিয়ে ফেলুন। এরপর কলিজার ওপর যে সাদা একটা পর্দার মতো থাকে সেটি তুলে ফেলুন। এতে গরু বা কলিজা থেকে যে একটা গন্ধ আসার সম্ভাবনা থাকে তা কমে যাবে। পরে কলিজা ছোট টুকরা করে কেটে ভালোভাবে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে ফেলুন।
এরপর আলাদা হাড়িতে তেল গরম করে তাতে পেঁয়াজ কুচি দিয়ে দিন। পেঁয়াজ হালকা ভাজা ভাজা হলে কিছুটা তুলে রাখুন। হাঁড়িতে থাকা বাকি পেঁয়াজের সঙ্গে বাটা পেঁয়াজ দিয়ে দিন। এ সময় সামান্য লবণ দিয়ে দিলে পেঁয়াজ পুড়ে যাবে না। একটু নেড়ে নিয়ে যখন পেঁয়াজ কুচিগুলো নরম হয়ে আসবে একে একে সবুজ এলাচি, কালো এলাচি, দারুচিনি, তেজপাতা, লবঙ্গ দিয়ে দিন।
ভাজা গরম মসলাগুলো নেড়ে নিয়ে তা থেকে সুগন্ধ এলেই এতে আদা, রসুন বাটা দিয়ে দিন। একটু নেড়ে নিয়ে এর সঙ্গে জিরা ও ধনে বাটাও দিয়ে দিন। এরপর সামান্য গরম পানি দিয়ে এক এক করে হলুদ, মরিচ ও গরম মসলার গুঁড়া দিয়ে দিন। ভালোমতো সময় নিয়ে মসলার মিশ্রণ কষিয়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে সামান্য গরম পানি দিন। হাঁড়িতে ঢাকনা দিয়ে মসলা কষিয়ে নিলে ভাল হয়।
আরেকটি ফ্রাইং প্যানে সামান্য হলুদ ও লবণ দিয়ে আলুগুলো ভেজে নিন। এবার হাড়ির মসলা কষানো হয়ে গেলে তাতে আগে থেকে ধুয়ে ও পানি ঝরিয়ে রাখা গরুর মাংস দিন। ১০ মিনিট পর্যন্ত হাই হিটে মাংস কষিয়ে নিয়ে তাতে পানি ঝরিয়ে রাখা কলিজা দিন। এরপর হাঁড়িতে ঢাকনা দিয়ে মাংস ও কলিজা একসঙ্গে কষিয়ে নিন আরও ১৫ মিনিট।
এর মধ্যে ব্লেন্ডারে টক দই, আলাদা করে রাখা ভাজা পেঁয়াজ ও বাদাম বাটা একসঙ্গে নিয়ে ব্লেন্ড করে নিন। ১৫ মিনিটের মধ্যেই ছেঁচে রাখা রসুন ও ব্লেন্ডেড পেস্টটা দিয়ে দিন। এরপর পরিমাণ মতো লবণ দিয়ে ৩০ থেকে ৪০ মিনিট লো হিটে রান্না করুন। মাঝে যদি পানি কমে যায়, আধা কাপ পরিমাণ পানি দিয়ে হাড়ি ঢেকে দিন। তবে, বারবার কমে গেলেও এক একবার আধা কাপের চেয়ে বেশি পানি নয়।
খেয়াল রাখবেন, পানি অবশ্যই গরম হতে হবে। ২৫ মিনিটের মাথায় ভেজে রাখা আলু হাঁড়িতে দিন। ৪০ মিনিট পর মাংস, কলিজা ও আলু টেস্ট করে দেখতে হবে সিদ্ধ হয়েছে কিনা। যদি সিদ্ধ না হয়, তাহলে লো হিটে আরও ৫ থেকে ৭ মিনিট রান্না করে নিতে হবে। এরপর চুলা থেকে ওঠানোর আগে ভাজা জিরার গুঁড়া, গরম মসলার গুঁড়া ও ৪ থেকে ৫টি আস্ত কাঁচা মরিচ দিয়ে নামিয়ে ফেলুন।
পথরেখা/এআর