- |
- |
- জাতীয় |
- আন্তর্জাতিক |
- বিনোদন |
- ক্রীড়া |
- মত-দ্বিমত |
- শিক্ষা-স্বাস্থ্য |
- বিজ্ঞান-প্রযুক্তি |
- কৃষি বার্তা |
- অর্থ-বাণিজ্য-উন্নয়ন |
- সাহিত্য-সংস্কৃতি-সংগঠন |
- সারাদেশ |
পথরেখা অনলাইন : চতুর্থ মেয়াদে সরকার গঠনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফরে আজ নয়াদিল্লি সফরে যাচ্ছেন। দুদিনের সংক্ষিপ্ত সফরে কাল শনিবার দিল্লির হায়দরাবাদ হাউসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে একান্ত বৈঠকে বসবেন তিনি। বৈঠকের পর বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে একাধিক চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার কথা রয়েছে। দুই নেতার আলোচনায় আঞ্চলিক নিরাপত্তার বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব পাবে বলে জানা গেছে। বিশেষ করে
মিয়ানমার পরিস্থিতি, রোহিঙ্গা ও মনিপুরে সংকট এবং এই অঞ্চলে চীনের প্রভাবসহ সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে আলোচনা হবে।
কূটনৈতিক সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফরে ১২ থেকে ১৪টির মতো চুক্তি ও সমঝোতা সইয়ের কথা রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, যেগুলো নবায়ন হতে পারে। নতুন চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকের (এমওইউ) মধ্যে আছেÑ ভারতের ঋণচুক্তি বাস্তবায়নে গতি আনতে নতুন রূপরেখা চুক্তি, বাংলাদেশে যে কোনো পরিস্থিতি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য একটি এমওইউর মতো বিষয়।
সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এবারের দ্বিপক্ষীয় সফরটি হবে অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত। আগামীকাল মোদির সঙ্গে বৈঠকে উঠে আসবে তিস্তাসহ বাংলাদেশে ও ভারতের মধ্যে ৫৩টি অভিন্ন নদীর প্রসঙ্গ। নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা, যোগাযোগ, অভিন্ন নদীগুলোর পানিবণ্টন, স্থল ও সমুদ্র সীমায় বিরোধ নিরসন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সহযোগিতা ইত্যাদি নানা বিষয়ে আলোচনা হবে দুই নেতার। জানা গেছে, এই বৈঠকে বেশি গুরুত্ব পাবে নিরাপত্তার বিষয়টি। মিয়ানমার পরিস্থিতি, রোহিঙ্গা ও মনিপুরে সংকট, এই অঞ্চলে চীনের প্রভাবসহ সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে আলোচনা হবে।
শেখ হাসিনা ও মোদির শাসনামলে দুই দেশ ‘সম্পর্কের নতুন উচ্চতায়’ পৌঁছেছে বলে দুই পক্ষ থেকেই বার্তা এসেছে। শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির মধ্যে বৈঠকে ভবিষ্যতের সম্পর্কের রূপরেখাও ঠিক করবেন দুই নেতা। এক দেশের ভেতর অন্য দেশের ছিটমহল বিনিময়ের পর দুই দেশের স্থলসীমানা নির্ধারিত হয়েছে। অমীমাংসিত আরও অনেক সমস্যার সমাধানে দুই পক্ষ কাছাকাছি এসেছে। তবে আগের তুলনায় কমলেও সীমান্তে বিএসএফের ?গুলিতে হত্যা শূন্যে নামিয়ে আনার প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন হয়নি। ফলে সীমান্ত বিরোধ মিটলেও সীমান্তে পাচার ও হত্যাকাণ্ড নিয়ে অস্বস্তি যেমন রয়ে গেছে, তেমনি এক যুগ পেরিয়ে গেলেও তিস্তাচুক্তির জট খোলা যায়নি।
অন্যদিকে চীন ইতোমধ্যে তিস্তা নদীর উন্নয়নে ১ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছে এবং এটি সীমান্ত এলাকা হওয়ায় ভারত এতে নিরাপত্তা উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তিস্তা ঘিরে উন্নয়ন প্রকল্প বা সংরক্ষণের বিষয়ে সম্প্রতি ভারত আগ্রহ দেখাচ্ছে। তিস্তা প্রকল্পে অর্থ বিনিয়োগ করতেও আগ্রহী ভারত। দুই দেশের শীর্ষ নেতার বৈঠকে ভারতের পক্ষ থেকে তিস্তার ব্যাপারে নতুন একটি প্রস্তাব দেওয়া হতে পারে বলে জানা গেছে। এ ছাড়া ২০২৬ সালের ডিসেম্বরে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে গঙ্গাচুক্তির মেয়াদও শেষ হচ্ছে। বিষয়টিও উঠতে পারে আলোচনায়।
সম্প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির শপথ অনুষ্ঠান উপলক্ষে গত ৮-১০ জুন প্রধানমন্ত্রী ভারত সফর করেন। রাষ্ট্রাচারের ফাঁকে একান্ত বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও শেখ হাসিনা। নিজেদের মধ্যে কুশল বিনিময়ের পাশাপাশি একে অপরকে সুবিধাজনক সময়ে সফর করার আমন্ত্রণ জানান। ফলে সহসাই প্রধানমন্ত্রীর দ্বিপক্ষীয় ভারত সফর হচ্ছে না বলে খবর আসে। অন্যদিকে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরের খবরও ডালপালা মেলে। কিন্তু সব কিছু অবসান করে অবশেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফরে যাচ্ছেন।
সফরসূচি অনুযায়ী, আজ শুক্রবার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে দিল্লি যাবেন শেখ হাসিনা। আজ সন্ধ্যায় দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। শনিবার শেখ হাসিনাকে দিল্লির রাষ্ট্রপতি ভবনে আনুষ্ঠানিক সংবর্ধনা দেওয়া হবে। এর পর তিনি রাজঘাটে অবস্থিত মহাত্মা গান্ধীর সমাধিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও পরিদর্শন বইয়ে স্বাক্ষর করবেন। তারপর দিল্লির হায়দরাবাদ হাউসে তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। সেখানেই প্রতিনিধি পর্যায়ে আলোচনা এবং দুই দেশের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত এবং চুক্তি বিনিময় হবে। সেদিন বিকালে ভারতের উপরাষ্ট্রপতির সচিবালয়ে আসবেন হাসিনা। তারপর তিনি আবার যাবেন রাষ্ট্রপতি ভবনে। শনিবার রাতেই ঢাকা ফিরবেন তিনি।
পথরেখা/এআর
পথরেখা : আমাদের কথা