• রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
    ৬ আশ্বিন ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ১৫:১৬

বঙ্গবন্ধুর রক্তের উত্তরাধিকার

  • জাতীয়       
  • ১১ জুলাই, ২০২৪       
  • ৪৯
  •       
  • ১২-০৭-২০২৪, ০০:৩৯:৫১

পথরেখা অনলাইন : বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা ও বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লিগ্যাসি আজ পুরো পৃথিবীকে অবাক করেছে। তাঁর তৃতীয় প্রজন্ম টিউলিপ সিদ্দিক সারা বিশ্বের গণতন্ত্রের মাতৃভূমি খ্যাত ব্রিটেনের পার্লামেন্টের চারবার সদস্য নির্বাচিত হয়ে ব্রিটিশ সরকারের মন্ত্রী নিযুক্ত হয়েছেন। এই গৌরব শুধু বঙ্গবন্ধু পরিবারের নয়- এই গৌরব সমগ্র বাঙালি জাতির- বাংলাদেশ রাষ্ট্রের। বঙ্গবন্ধুর নাতনি টিউলিপ প্রথম বাঙালি ও বাংলাদেশী যিনি বাংলাদেশের বাইরে কোন রাষ্ট্রের মন্ত্রী হয়েছেন।

তিনি এমন এক দেশের মন্ত্রিত্ব লাভ করেছেন যেটি বিশ্বের একমাত্র দেশ যেখানে একাধিকবার গণতান্ত্রিক বিপ্লব সংঘটিত হয়েছিল-যাকে গণতন্ত্রের মাতৃভূমিও বলা হয়।

অন্যভাবে বলতে গেলে, ব্রিটিশরা আমাদের দুইশ বছর শাসন ও শোষণ করেছিল। শুধু এই উপমহাদেশ নয়, পৃথিবীর অধিকাংশ ভূমি তাদের নিয়ন্ত্রণে ছিল- সেখানে শাসন ও শোষণ করেছে। দুটি বিশ্বযুদ্ধ অর্থাৎ প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে তারা বিজয়ী শক্তি। ‌বিশ্বব্যবস্থায় তাদের এখনও প্রভাব রয়েছে। এমন পরাশক্তি রাষ্ট্রে চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে মন্ত্রিত্ব অর্জন নিঃসন্দেহে একটি বিস্ময়কর ঘটনা।

আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে তদানীন্তন বিশ্ব ব্যবস্থার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে দীর্ঘ মুক্তি সংগ্রামের মাধ্যমে বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে সারা পৃথিবীকে অবাক করেছেন।‌ এ রাষ্ট্রকে একটি শক্তিশালী ও টেকসই রাষ্ট্রে তিনি রূপান্তরিত করে গিয়েছেন। তাঁর দ্বিতীয় প্রজন্ম তাঁর জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনা সপরিবারে জাতির পিতার হত্যার পর বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি পিতার হাল ধরেছেন।  পৃথিবীর হাজার বছরের ইতিহাসে তিনি একমাত্র কন্যা যিনি পিতা হত্যার বিচার করেছেন- পিতাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় পুনঃ প্রতিষ্ঠিত করেছেন। মৃত্যুঞ্জয়ী নেতা শেখ হাসিনা জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে বাংলাদেশকে বিশ্বের নেতৃত্বের পর্যায়ে নিয়ে গেছেন। বাংলাদেশকে বিশ্বে উন্নয়নের আদর্শ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তিনি একজন সংগ্রামী নেতা থেকে কালজয়ী রাষ্ট্রনায়ক-রাষ্ট্রনায়ক থেকে বিশ্বনেতায় পরিণত হয়েছেন। আজ শেখ হাসিনা বিশ্বের অন্যতম সফল রাষ্ট্রনায়ক। ‌

জাতির পিতার তৃতীয় প্রজন্মের এই বিশ্ব‌জয়ের একটা ঐতিহাসিক পটভূমি আছে- বিশেষভাবে তার দৌহিত্রীর ব্রিটিশ রাজনীতিতে এরকম  বীরত্বপূর্ণ অবস্থান করে নেয়ার ক্ষেত্রে। তার এই সাফল্যের পটভূমি সৃষ্টি করেছেন স্বয়ং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু। পঞ্চাশের দশকে বঙ্গবন্ধু এই যুক্তরাজ্যের‌ দক্ষিণাঞ্চলের বন্দরনগরী পোর্টসমাউথের এক রেস্টুরেন্টে বসে বাংলাদেশ স্বাধীন করার স্বপ্নের কথা ব্যক্ত করেছিলেন। পরবর্তীতে যুক্তরাজ্যের জনগণ এবং প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সাথে বঙ্গবন্ধু নিবিড় সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন। ১৯৬৯ সালে বঙ্গবন্ধু লন্ডনে গিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন করার লক্ষ্যে গেরিলা যুদ্ধের পরিকল্পনা করেছিলেন। ১৯৬৯ আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় তৎকালীন সময়ের খ্যাতিমান ব্রিটিশ আইনজীবী স্যার টমাস উইলিয়ামস এমপি বঙ্গবন্ধুর পক্ষে আইনী লড়াই করেছিলেন। তার প্রতিদান হিসেবে পরের বছর ১৯৭০ সালে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট নির্বাচনে স্যার টমাস উইলিয়ামসের সংসদীয় আসনে অবস্থানরত সমগ্র বাঙালি ও ভারতীয় কমিউনিটি তথা গণতন্ত্রকামী মানুষ তাকে বিপুলভাবে নির্বাচিত করেছিল।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সমকালীন যুক্তরাজ্যের দুই প্রধানমন্ত্রী স্যার এডওয়ার্ড হীথ এবং হ্যারল্ড উইলসন এর সাথে নিবিড় বন্ধুত্ব স্থাপন করেছিলেন যারা যুক্তরাজ্যের প্রধান দুই দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন। এছাড়া বেশ কিছু ব্রিটিশ রাজনীতিবিদ এবং বুদ্ধিজীবী ও পেশাজীবীর সাথে বঙ্গবন্ধুর নিবিড় সম্পর্ক স্থাপিত হয়েছিল। ১৯৭১ সালে জাতির পিতার নেতৃত্বে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ব্রিটিশ জনগণ ও রাজনৈতিক নেতৃত্ব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। ব্রিটিশ পার্লামেন্টের‌‌ ভূমিকা এক্ষেত্রে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। মুক্তিযুদ্ধ শেষে পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে বঙ্গবন্ধু যুক্তরাজ্য হয়ে দেশে ফেরার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছিলেন। ১৯৭৫ এ সপরিবারে জাতির পিতা হত্যার পর বৃটেনের অনেক রাজনীতিবিদ ও বুদ্ধিজীবী এ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ করেছিল-হত্যার বিচারের উদ্যোগ গ্রহণ করেছিল।

ব্রিটিশ রাজনৈতিক মহল এটি সবসময়ই বিশ্বাস করতেন যে, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার পুনঃপ্রবর্তন শেখ হাসিনার হাত দিয়েই হবে। ১৯৯৬ সালের ১২ জুনের নির্বাচনে একুশ বছর পর বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ জয়লাভ করার পর ঢাকায় সফররত প্রবীণ ব্রিটিশ রাজনীতিবিদ স্যার পিটার শোর এর সাক্ষাৎকার শুনে আমার এটিই মনে হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর তৃতীয় প্রজন্ম টিউলিপ সিদ্দিকের ব্রিটিশ রাজনীতিতে এই শক্ত ও মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানের একটি অন্যতম কারণ হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক নেতৃত্ব এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিশেষভাবে ব্রিটেনে তাঁর মর্যাদা ও‌ গুরুত্ব এবং তাঁর প্রতি ব্রিটিশ জনগণ ও রাজনীতিবিদদের ভালোবাসা। এটি বঙ্গবন্ধুর লিগ্যাসি-রক্তের উত্তরাধিকার।

বঙ্গবন্ধুর তৃতীয় প্রজন্মের উত্তরাধিকার সজীব ওয়াজেদ জয়, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি সবাই স্ব স্ব ক্ষেত্রে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইতোমধ্যে অসাধারণ সফলতা দেখিয়েছেন।
পথরেখা/এআর

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।