পথরেখা অনলাইন : খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া, আমানত ও তারল্য সঙ্কট, বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ পরিস্থিতি ও ডলারের বিনিময় হারসহ ব্যাংকিংখাতের বিদ্যমান সমস্যাসমূহ নিরসনে সরকারকে সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নের জোর সুপারিশ করেছেন বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইন্সটিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর।তিনি বলেন,‘অবস্থার উন্নয়নে সংস্কারের কোন বিকল্প নেই। সেই সংস্কারে থাকতে হবে রাজনৈতিক সদিচ্ছার প্রতিফলন।’
শনিবার অর্থনৈতিক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকনোমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত ‘বাংলাদেশে ব্যাংকিং খাতে দুরবস্থার কারণ’ শীর্ষক আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর পল্টনে ইআরএফ কার্যালয়ে সংগঠনটির সভাপতি মোহাম্মদ রেফায়েত উল্লাহ মীরধার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম। অনুষ্ঠানে ব্যাংক খাতের বর্তমান অবস্থার ওপর একটি উপস্থাপনা তুলে ধরেন সমকালের বিশেষ প্রতিনিধি ওবায়দুল্লাহ রনি ও প্রথম আলোর সিনিয়র রিপোর্টার সানাউল্লাহ সাকিব।
আহসান এইচ মনসুর বলেন, ১৯৮০ দশকেও খেলাপি ঋণ ছিলো। কিন্তু ৯০ এর প্রথমদিকে ব্যাংকিংখাতে সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়ন খুব সফল হয়েছিলো। এর ভাল সুফল পাওয়া গিয়েছিলো বলে তিনি মন্তব্য করেন।তিনি আরও বলেন, আউট অব দ্য বক্স দিয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ হবে না। সাধারণ নীতি মানতে হবে। দেরিতে হলেও সুদহার বাজারভিত্তি করা হয়েছে। বিনিময়হার কিছুটা হলেও বাজারভিত্তিক করা হয়েছে। এটা ভালো খবর যে সদ্য বিদায়ী অর্থবছরে সরকার টাকা ছাপিয়ে ধার করেনি। বরং আগের নেয়া ধারের কিছু টাকা পরিশোধ করেছে। এই নীতির ধারাবাহিকতা রাখতে হবে। নীতি সুদহার আরও বাড়িয়ে সাড়ে ৮ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নিতে হবে। তবে সবকিছুর পেছনে যদি রাজনৈতিক সদিচ্ছা না থাকে এসব সম্ভব হবে না।
আহসান এইচ মনসুর বলেন, টাকা ছাপিয়ে অচল ব্যাংক সচল রাখার দরকার নেই। আবার রেমিট্যান্সে প্রণোদনা বন্ধ করতে হবে। তা না হলে মূল্যস্ফীতি কমবে না। ডলারের দর বাজারভিত্তিক হয়েছে, সুদহার বেড়েছে। ফলে এখন আর প্রণাদনার দরকার নেই। রেমিট্যান্সের প্রণোদনা দুবাই ভিত্তিক স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী খেয়ে যাচ্ছে। আবার ইসলামী ব্যাংকগুলো উদ্ধারের নামে যদি টাকা ছাপানো অব্যাহত থাকে তাতেও মূল্যস্ফীতি কমবে না। এছাড়া ধার করে রিজার্ভ সাময়িক বাড়ানো যাবে। তবে এটা স্থায়ী সমাধান না। বরং সঠিক নীতির মাধ্যমে রিজার্ভ বাড়াতে হবে। তা না হলে ১৩ বিলিয়ন রিজার্ভ দিয়ে সাড়ে ৪শ’ বিলিয়ন জিডিপির দেশ ঠিক রাখা যাবে না।
ব্যাংকসহ আর্থিক এবং কৃষিখাতে ভুল ডাটা দেয়া হচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
পথরেখা/এআর