• সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
    ৯ পৌষ ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ০০:০৬

পানি থেকে ক্ষতিকারক প্লাস্টিক সরিয়ে ফেলায় গবেষকদের সাফল্য

পথরেখা অনলাইন : পানি থেকে মাইক্রোপ্লাস্টিক ও ন্যানোপ্লাস্টিক সরিয়ে ফেলার নিরাপদ পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের একদল গবেষক। নিরাপদ ও সস্তা প্রাকৃতিক তরল উপাদান ব্যবহার করে সাধারণ এবং লবণাক্ত পানির মধ্যে থেকে প্রায় ৯৮ শতাংশ ন্যানোস্কোপিক পলিস্টাইরিন কণা অপসারণ করতে সক্ষম হয়েছেন মিসৌরি বিশ্ববিদ্যালয়ের এই গবেষকরা।

গবেষকরা যে সলভেন্ট বা দ্রাবক তৈরি করেছেন, তা পানির পৃষ্ঠে তেলের মতো ভাসে। তরলটি পানির মধ্যে একবার মিশ্রিত হলে এটি আণুবীক্ষণিক প্লাস্টিক সংগ্রহ করে এবং পৃষ্ঠে নিয়ে আসে। এরপর পাইপেট (সাধারণত কাচ বা প্লাস্টিকের তৈরি এক ধরনের টুল) দিয়ে পানির ওপরের স্তরটি শুষে নিয়ে দূষিত পানির নমুনাগুলো থেকে প্রায় সব ন্যানোপ্লাস্টিক কণা অপসারণ করতে সক্ষম হয়েছে গবেষক দলটি। লবণাক্ত পানিতে এই পদ্ধতি ৯৯.৮ শতাংশ পলিস্টাইরিন দূষণ অপসারণ করতে পেরেছে। গবেষণাটি ‘এসিএস অ্যাপ্লায়েড ইঞ্জিয়ারিং ম্যাটরিয়াল’ পাবলিকশনে প্রকাশিত হয়েছে।

খাবার ও শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে প্রতিদিন মানুষের শরীরে ঢুকছে মাইক্রোপ্লাস্টিক বা ন্যানোপ্লাস্টিক (এক মাইক্রোমিটারের ছোট আকারের প্লাস্টিক)। এটি দীর্ঘ মেয়াদে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি, এমনকি ক্যানসারেরও কারণ হতে পারে। তাই, বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন গবেষক ও চিকিৎসকরা।

মাইক্রোপ্লাস্টিক ও ন্যানোপ্লাস্টিক সরিয়ে ফেলার প্রক্রিয়াটিকে সাশ্রয়ী ও টেকসই সমাধান হিসেবে দাবি করেছেন মিসৌরি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। ভবিষ্যতে আরও গবেষণার মাধ্যমে এই পদ্ধতি ব্যবহার করে পানি থেকে অন্যান্য দূষকও (যেমন চিরস্থায়ী রাসায়নিকগুলো) দূর করা যেতে পারে।

পূর্ববর্তী গবেষণায় দেখা গেছে যে, কলের পানি ও বোতলজাত পানিতে প্রচুর পরিমাণে মাইক্রোস্কোপিক প্লাস্টিক, বিশেষ করে ন্যানোপ্লাস্টিক রয়েছে। এক লিটার বোতলজাত পানিতে গড়ে প্রায় ২ লাখ ৪০ হাজার ন্যানোপ্লাস্টিক কণা থাকে।

ন্যানোপ্লাস্টিকের কণাগুলো কখনও ইচ্ছাকৃতভাবে তৈরি করা হয় এবং কখনও মাইক্রোপ্লাস্টিকগুলোর ভাঙনের মাধ্যমে তৈরি হয়। নদী বা ড্রেনেজ নেটওয়ার্কের অথবা টায়ারের ঘর্ষণ, কৃষি রানঅফ বা বর্জ্য জল পরিশোধন পরিকল্পনার মাধ্যমে এগুলো প্রাকৃতিক পরিবেশে সহজেই প্রবাহিত হয়। বর্তমানে ন্যানোপ্লাস্টিক বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন জলাশয়ে পাওয়া যায়। এমনকি মহাসাগরের গভীরতম স্থান—আর্কটিক এবং পাহাড়ি হ্রদেও পাওয়া যায়।

 গবেষকদলের রসায়নবিদ পিয়ুনি ইস্টাওয়েরা বলেছেন, ‘ন্যানোপ্লাস্টিকগুলো জলজ পরিবেশকে বিঘ্নিত করতে পারে এবং খাদ্যশৃঙ্খলে প্রবাহিত হতে পারে, যা বন্যপ্রাণী ও মানুষের জন্য বিপজ্জনক।’

 ক্ষতিকারক রসায়নিক পদার্থ, যেমন: ভারী ধাতু বা ফ্লেম রিটার্ডেন্টস (আগুন প্রতিরোধক রাসায়নিক পদার্থ) ন্যানোপ্লাস্টিকের পৃষ্ঠে লেগে থাকতে পারে। ন্যানোপ্লাস্টিকের সঙ্গে মিশে গিয়ে মানুষের ঝিল্লি বা কোষের বাইরের স্তরের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। এই ধরনের ক্ষুদ্র দূষকগুলো পরিবেশ থেকে অপসারণ করা সহজ কাজ নয়।

সম্প্রতি চীনের গবেষকরা পর্যবেক্ষকেরা দেখেন যে, কলের পানি ফুটিয়ে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত ন্যানো ও মাইক্রোপ্লাস্টিক দূর করা সম্ভব। এটি পানির দূষকগুলো অপসারণের একটি সহজ উপায় হতে পারে। কিন্তু, বড় জলাশয়ের ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি কার্যকর নয়। তবে, নতুন প্রযুক্তিটি বড় জলাশয় থেকে ন্যানোপ্লাস্টিক দূর করার জন্য অনেক বেশি কার্যকর হতে পারে।

গবেষক গ্যারি বেকার বলেন, ‘আমাদের কৌশলে ছোট পরিমাণ সলভেন্ট ব্যবহার করে অনেক বেশি পরিমাণ পানি থেকে প্লাস্টিকের কণা শোষণ করা যায়। তবে, এই সলভেন্টগুলোর ধারণক্ষমতা এখনো ভালোভাবে বোঝা যায়নি। ভবিষ্যতে সলভেন্টের সর্বাধিক ধারণক্ষমতা নির্ধারণের জন্য কাজ করব ও সলভেন্টগুলো পুনঃব্যবহারযোগ্য করতে বিভিন্ন গবেষণা করব।’
পথরেখা/এআর   

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।