• বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
    ১০ আশ্বিন ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ০৩:১৭

কুমিল্লার তিন উপজেলায় এখনো লক্ষাধিক মানুষ পানি বন্দি

  • সারাদেশ       
  • ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪       
  •       
  • ২৫-০৯-২০২৪, ২১:৪৮:৩৮

পথরেখা অনলাইন : জেলার বন্যা পরিস্থিতি সার্বিকভাবে উন্নতি হলেও কুমিল্লার দক্ষিণ অঞ্চলের তিন উপজেলা লাকসাম, মনোহরগঞ্জ ও নাঙ্গলকোটের বন্যার পানি যেন নামছে না।এ তিন উপজেলায় লক্ষাধিক মানুষ এখনো পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। ভয়াবহ বন্যায় কুমিল্লার ১৭টি উপজেলার মধ্যে ১৪টিই আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে বন্যাকবলিত এলাকা থেকে পানি নামতে শুরু করেলেও অন্য উপজেলাগুলোর তুলনায় লাকসাম মনোহরগঞ্জ ও নাঙ্গলকোটের বানের পানি কম হারে নামছে। এসব এলাকায় এখনো পানিবন্দি লক্ষাধিক মানুষ। এতে বানভাসি মানুষের ভোগান্তি রয়েই গেছে। এখনও অনেকের বাড়িতে পানি রয়েছে। মনোহরগঞ্জের বেশির ভাগ রাস্তাঘাট ডুবে আছে। ফলে জেলার দক্ষিণাঞ্চলের এ তিন উপজেলায় দীর্ঘমেয়াদি জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভারত থেকে নেমে আসা ঢল ও টানা বৃষ্টিতে লাকসামে একটি পৌরসভা ও ৭টি ইউনিয়নে পানিবন্দি হয়ে পড়েছিলেন দুই লাখের বেশি মানুষ নাঙ্গলকোট ও মনোহরগঞ্জ উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে পানিবন্দি হয়ে পড়েছিলেন আরও দুই লাখের বেশি মানুষ উপজেলা পানি বন্দি মানুষ  ১৭২টি সরকারি আশশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেন বন্যাকবলিত ৪৫ হাজার মানুষ।

সরেজমিনে তিন উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে, লাকসাম পৌরসভা ও মনোহরগঞ্জ ও নাঙ্গলকোটের উপজেলা সদরের মানুষের বাড়িঘর, রাস্তাঘাট থেকে পানি নামতে শুরু করলেও উপজেলা তিনটি প্রত্যন্ত অঞ্চলের গ্রামে রাস্তাঘাট, বাড়িঘরে এখনো পানি রয়েছে। টানা ৩৭ দিন ধরে আশ্রয়কেন্দ্রে আছেন কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার উত্তর হাওলা গ্রামের রিকশা চালক আকু মিয়া (৪০)। বুধবার সকালে বাড়িতে গিয়ে দেখেন এখনো উঠানের ওপরে পানি। বসতঘর থেকেও পানি নামেনি। দুই দিন আগে পানি যা দেখেছেন, আজও তেমন দেখেছেন। পানি যেন কমছেই না। শুধু আকু মিয়া নন, কুমিল্লার বন্যাকবলিত লাকসাম মনোহরগঞ্জ ও নাঙ্গলকোট উপজেলার হাজার হাজার পরিবারের দুশ্চিন্তা এখন একটাই, কবে বন্যার পানি কমবে। কবে তাঁরা বাড়ি ফিরে যাবেন।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার বন্যাকবলিত ১৪ উপজেলায় এখনো প্রায় ২ লাখ মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। যা গত সপ্তাহে ছিল ৬ লাখ ২২ হাজারের বেশি। বন্যার পানি না কমার কারনে আশ্রয়কেন্দ্রগুলো থেকে অনেক মানুষ এখনো বাড়ি ফিরতে পারছেন না। লাকসাম উপজেলার মোহাম্মদপুর গ্রামের প্রবীণ বাসিন্দা আবুল মিয়া  বলেন, এ জীবনে কখনো এত পানি দেখি নাই। আমার বাপের কাছেও শুনি নাই। ৩৬ থেকে ৩৭ দিন ধরে আবুল মিয়ার  এলাকার অনেক বাড়িঘরের বিভিন্ন অংশ পানির নিচে তলিয়ে আছে। চারদিকে তাকালে দেখা যায় মানুষের দুর্ভোগ। তবে যেভাবে পানি কমছে, তাতে এ দুর্ভোগ সহজে শেষ হবে না বলে মনে করেন এই বৃদ্ধ। সার্বিকভাবে কুমিল্লার বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির দিকে। অনেক স্থান দখল ও ভরাটের কারনে পানি নামার পথ সংকুচিত হয়ে গেছে। বিভিন্ন স্থানে নদী ও খাল অবৈধভাবে ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানি নামতে সমস্যা হচেছ। জেলার দক্ষিণাঞ্চলের পানি ডাকাতিয়া নদীর মাধ্যমে নাঙ্গলকোট, লাকসাম, মনোহরগঞ্জ পাশ^বর্তী জেলা চাঁদপুরে গিয়ে মেঘনা নদীতে মেশে। ধীরগতির কারনে এসব এলাকায় পানি নামতে সময় লাগছে।

কুমিল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালিউজ্জামান  বলেন, সার্বিকভাবে কুমিল্লার বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির দিকে। অনেক স্থান দখল ও ভরাটের কারনে পানি নামার পথ সংকুচিত হয়ে গেছে। অবাধে নদী ও খাল দখল এবং ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানি নামতে সমস্যা হচ্ছে। জেলার দক্ষিণাঞ্চলের পানি ডাকাতিয়া নদীর মাধ্যমে নাঙ্গলকোট, লাকসাম, মনোহরগঞ্জ ধীরগতির কারনে এসব এলাকায় পানি নামতে সময় লাগছে।

মনোহরগঞ্জ উপজেলার নাঘের পেটুয়া এলাকার বাসিন্দা অধ্যাপক সাইদুর রহমান বলেন, তাঁদের গ্রামের ভেতরের প্রতিটি বাড়ির আঙিনায় এখনো বন্যার পানি। গত কয়েক দিন বৃষ্টিপাত না হওয়ায় প্রথম দিকে পানি কমার প্রবণতা দেখা যায়। কিন্তু গত দুই দিন পানি একটুও কমেনি। এ পরিস্থিতিতে চলাচলে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। কথা হয় লাকসাম উপজেলার মুদাফরগঞ্জ গ্রামের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, তাঁর বাড়িতে এখনো হাঁটুর ওপরে বন্যার পানি। বসতঘরের ভেতরও হাঁটুর কাছাকাছি পানি। গত দুই দিনে একটুও পানি কমেনি। এ বিষয়ে মনোহরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উজালা রানী চাকমা বলেন, নদী-খাল দখল ও বাঁধ দিয়ে মাছ শিকারের কারনে পানি নামতে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে, এটা সত্য কথা। তবে আমরা প্রতিটি খাল ও নদীতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা অব্যাহত রেখেছি। এখন পর্যন্ত অর্ধশতাধিক বাঁধ অপসারণ করে পানির প্রভাব স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। কয়েক দিন ধরে বৃষ্টি নেই, পরিস্থিতি এমন থাকলে দ্রুতই বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে আশা করছি।
পথরেখা/এআর

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।