পথরেখা অনলাইন : পঞ্চগড়ে কুকুরের কামড়ে হাসপাতালের নার্সসহ অন্তত ১৪ জন আহত হয়েছেন। আহতরা পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিয়েছেন। বেশিরভাগ মানুষের পায়ে কামড় দিয়েছে কুকুর। কারও হয়েছে গভীর ক্ষত। যদিও এখন পর্যন্ত কোনো কুকুর শনাক্ত বা আটক করা যায়নি।
আক্রমণের শিকার কয়েকজন জানান, বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টার দিকে জেলা শহরের ফায়ার সার্ভিস এলাকায় প্রথম এক যুবক কুকুরের কামড়ের শিকার হন। পরে শহরের মিঠাপুকুর, ডোকরোপাড়া, ইসলামবাগ ও ধাক্কামারাসহ বিভিন্ন এলাকায় আরও ১৩ জন কুকুরের কামড়ের শিকার হন।
আহতরা হলেন- পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স জয়তুন বেগম (২৮), জেলা শহরের মিঠাপুকুর এলাকার আতাউর রহমান (৫৯) ও নজরুল ইসলাম (৫৫), লিচুতলা এলাকার রাজু (৪৫), ডোকরোপাড়া এলাকার কামরুজ্জামান (৫৫), ধাক্কামারা এলাকার আবুল কালাম (৬৬), কামাতপাড়া এলাকার জাবেদ আলী (২৬), মাগুরা খালপাড়া এলাকার নাইম (২২), গলেহা কান্তমনি এলাকার রনি (২৫), জগদল এলাকার ফেরদৌস আলী (২৬), অমরখানা এলাকার আবু মুসা (২২), দোমনি এলাকার আইনুল হক (৬০), দর্জিপাড়া এলাকার সিদ্দিকুল ইসলাম (২১), ময়দানদিঘী এলাকার বাঁধন (২০)।
আক্রমণের শিকার হওয়াদের মতে, হালকা হলুদ গলায় সাদা রঙের এবং কালো সাদা রঙের দুটি কুকুর রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে এভাবেই মানুষদের কামড় দিচ্ছে। কুকুরগুলো শনাক্ত করে ব্যবস্থা না নেওয়া হলে আরও অনেকেই কুকুরের কামড়ের শিকার হতে পারেন বলে আশঙ্কা করছেন তারা।
এদিকে কুকুর দুইটিকে শনাক্ত করে ধরতে পৌরসভার পক্ষ থেকে একটি দল মোতায়েন করা হয়েছে। তারা বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ করছেন বলে জানা গেছে।
পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স জয়তুন বেগম বলেন, ডিউটি শেষে আমি বাড়ি ফিরছিলাম। হুনডা শো-রুমের সামনে পৌঁছালে পেছন দিক থেকে একটি কুকুর আমাকে কামড় দেয়। কামড়ে অনেক বড় ক্ষত হয়েছে। হাসপাতালে ভ্যাকসিন ও চিকিৎসা নিয়েছি।
কুকুরের আক্রমণের শিকার ফেরদৌস আলী বলেন, আমি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গেটের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। এ সময় হালকা হলুদ ও গলায় সাদা রঙের একটি কুকুর আমার পায়ে কামড়ে ধরে। আমি পড়ে যাই। পরে আমার সাথে থাকা আমার স্যার আমাকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন।
আক্রমণের শিকার রাজু ইসলাম বলেন, আমি নামাজ পড়ে জেলা শহরের ন্যাশনাল ব্যাংকের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। হঠাৎ একটি কালো সাদা রঙের কুকুর এসে আমার পায়ে কামড় দেয়।
প্রত্যক্ষদর্শী স্বপন দাস বলেন, আমার সামনেই দু’জন মানুষকে কুকুরটি কামড় দিয়েছে। যেখানে যাকে পাচ্ছে কামড় দিচ্ছে। আর কামড় দিয়ে এক সেকেন্ডও দেরী করছে না, দৌড়ে পালিয়ে যাচ্ছে। কুকুরটিকে শনাক্ত করে ধরতে না পারলে আরও অনেকে আক্রমণের শিকার হবে।
পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. তৌহিদুল ইসলাম ভুঁইয়া বলেন, এখন পর্যন্ত পুকুরের কামড়ে আক্রান্ত হয়ে ১৪ জন চিকিৎসা ও ভ্যাকসিন নিয়েছে। কারো কারো গভীর ক্ষত থাকায় বাড়তি চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
পঞ্চগড় পৌরসভার প্রশাসক আব্দুল কাদের বলেন, আমরা বিষয়টি জানার পর কুকুরটি শনাক্ত করে ধরতে একটি টিম গঠন করেছি। তারা জেলা শহরের বিভিন্ন এলাকায় কুকুরটির খোঁজ করছে। এ বিষয়ে আমরা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ও সিভিল সার্জনের সাথে কথা বলেছি। তবে আমাদের কুকুর ধরার আধুনিক জিনিসপত্র নেই।
পথরেখা/এআর