পথরেখা অনলাইন : নিট গার্মেন্টস ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ) এবং নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স থেকে চাঁদা হিসেবে নেওয়া আট লাখ টাকা উদ্ধার হয়েছে। এর মধ্যে তিন লাখ টাকা নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কর্মাস থেকে এবং বাকি পাঁচ লাখ টাকা বিকেএমইএ থেকে চাঁদা হিসেবে নেওয়া হয়েছিল। তবে কে বা কারা এই চাঁদা নিয়েছিল সে বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি।
মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) দুপুরে নগরের চাষাড়াস্থ বিকেএমইএ’র প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে টাকা উদ্ধারের কথা জানান বিকেএমইএ’র সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম। ওই সময় টাকা উদ্ধারে মূখ্য ভূমিকা পালন করা নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মোঃ মাসুদুজ্জামানসহ সংগঠন দু’টির নেতারা ছিলেন।
এর আগে গত ৭ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির নব নির্বাচিত সভাপতি মো. মাসুদুজ্জামান দাবি করেছিলেন, গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের কাছে ১০ লাখ এবং বিকেএমইএ’র কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা চাওয়া হয়। চেম্বার ৩ লাখ এবং বিকেএমইএ ৫ লাখ টাকা দিয়ে চাঁদাবাজদের নিভৃত করে। ওই সংবাদ সম্মেলন থেকে চেম্বার সভাপতি চাঁদা হিসেবে নেওয়া টাকা ফেরত দেওয়ার দাবি জানিয়ে আল্টিমেটাম দেন। তখনও চাঁদাবাজদের নাম প্রকাশ করা হয়নি।
এদিকে মঙ্গলবার দুপুরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, বিকেএমইএ ও চেম্বার থেকে নেওয়া চাঁদার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ চেম্বারের সভাপতি মাসুদুজ্জামানের একক প্রচেষ্টায় এটি সম্ভব হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। চেম্বারের দায়িত্ব নেওয়ার পরেই মাসুদুজ্জামান বলেছিলেন চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে এবং চাঁদার টাকা ফেরত দিতে হবে। তিনি দুই সংগঠনের টাকা উদ্ধার করে তার কথার প্রমাণ রেখেছেন।
চেম্বার সভাপতি মাসুদুজ্জামান বলেন, যারা চাঁদা নিয়েছে তাদের আমি বুঝিয়েছি যে এই জায়গাটা ভালো জায়গা না। তারা বুঝেছে এবং চাঁদার টাকাটা ফেরত দিয়েছে। এটা বাংলাদেশের জন্য একটি শুভ সূচনা। ঝুটের কারণে চেম্বার ও বিকেএমইএ’র উপর বিভিন্ন চাপ দেওয়া হচ্ছে, যাতে আমরা এগুলো বণ্টন করে দেই। আসলে এটা আমাদের কাজ না।
সংবাদ সম্মেলনে চাঁদাবাজদের নাম এবং রাজনৈতিক পরিচয় রয়েছে কিনা জানতে চাইলে বিকেএমইএ এবং চেম্বার নেতারা সেটি চেপে যান।
চাঁদাবাজদের বিষয়ে জানতে নারায়ণগঞ্জ চেম্বারের সভাপতি মাসুদুজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে মাসুদুজ্জামান বলেন, যিনি টাকাটা নিয়েছেন আমি তার সঙ্গে ব্যক্তিগত ভাবে যোগাযোগ করেছি। তাকে আশ্বস্ত করেছি যে তার নাম প্রকাশ করবো না বা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতেও তুলে দেবো না। এই আশ্বাসের প্রেক্ষিতে সে টাকাটা ফেরত দিয়েছে। যেহেতু তাকে কথা দিয়েছি তাই চাঁদাবাজের নাম পরিচয় প্রকাশ করা থেকে বিরত থেকেছি।
তিনি আরও জানান, এর সঙ্গে কোন রাজনৈতিক দল বা নেতা জড়িত নন। যিনি কাজটি করেছেন তিনি ব্যক্তিগত প্রভাব খাটিয়ে এটি করেছেন।
মাসুদুজ্জামানের দাবি, নারায়ণগঞ্জের ইতিহাসে চাঁদাবাজির টাকা ফেরত আনার ঘটনা এটিই প্রথম। অতীতে এটি সম্ভব ছিল না। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ফলে নতুন একটি ধারা সৃষ্টি হওয়াতেই এটি সম্ভব হয়েছে।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহবায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, সংগঠন দু’টির উচিত বিষয়টি পরিষ্কার করা। যাতে করে এ বিষয়ে কোন ভুল ম্যাসেজ না যায়।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেন, তাদের উচিত সত্য প্রকাশ করা। চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িতদের নাম পরিচয় প্রকাশ না করলে তাকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে বলে তিনি মনে করেন।
পথরেখা/এআর