• সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
    ৯ পৌষ ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ০৮:২৩
হাইকমিশনে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান

সংখ্যালঘু সুরক্ষার দাবীতে কানাডায় মানব বন্ধন

  • আন্তর্জাতিক       
  • ০৫ অক্টোবর, ২০২৪       
  • ২৫৫
  •       
  • ০৬-১০-২০২৪, ০০:০৮:০৫

মৃণাল বন্দ্য, কানাডা থেকে : বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নির্যাতন বন্ধ, মন্দির ও প্রতিমা ভাংচুর, বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, লুটপাট, চাঁদাবাজি, প্রকাশ্যে দেশ ছাড়ার হুমকির প্রতিবাদে কানাডার রাজধানী অটোয়াস্থ ফেডারেল পার্লামেন্ট ভবনের সামনে বিশাল সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। কানাডা প্রবাসী বাংলাদেশি হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায় এই কর্মসূচির আয়োজন করে। এসময় ভেতরে পার্লামেন্টের অধিবেশন চলছিল।
 
সরকারী ও বিরোধী দলের বহু সংসদ সদস্য বাইরে এসে সমাবেশে অংশগ্রহনকারীদের কথা শোনেন এবং বক্তব্য রাখেন। সমাবেশ আয়োজনকারী নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নিপীড়ন নির্যাতনের বিষয়ে কানাডা সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এব্যাপারে উপযুক্ত ভূমিকা রাখার আহবান জানান। সরকার ও বিরোধী দলীয় নেতৃস্থানীয় প্রায় দশ জন সংসদ সদস্য দীর্ঘক্ষণ মানববন্ধন কর্মসূচিতে উপস্থিত থাকেন। তাঁরা বিষয়টি গুরুত্বের সাথে সংসদে উত্থাপন করবেন বলে জানান।
 
তাঁদের কাছে কানাডা সরকার ও বিরোধী দল বরাবর স্মারকলিপিও প্রদান করা হয়। একই দিন অটোয়াস্থ বাংলাদেশ হাই কমিশনেও একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা, নির্যাতনের দ্রুত সুষ্ঠু বিচার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা ও নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করার দাবীতে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর এই স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
 
টরন্টো, মন্ট্রিয়ল সহ কানাডার অন্যান্য শহর থেকে প্রচুর সংখ্যক অংশগ্রহনকারীরা ঐদিন সকালে অটোয়া এসে পৌঁছান। দূর দূরান্ত থেকে আসা প্রবাসী বাংলাদেশী হাজারো মানুষের সমাগম ঘটে। পার্লামেন্ট ভবনের পুরো এলাকা যেন তখন বাংলাদেশের একটি অংশ হয়ে ওঠে। সকল ধর্মের মানুষের উপস্থিতি ছিল উল্লেখ করার মত।
 
তাঁদের হাতে ছিল ব্যানার, ফেস্টুন। দুপুরে কর্মসূচি শুরু করা হয় বাংলাদেশ ও কানাডার জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে। কয়েক ঘন্টা ব্যাপী সমাবেশে শ্লোগানের ফাঁকে ফাঁকে সমবেত কন্ঠে দেশাত্মবোধক গান করেন তাঁরা। এসময় বাংলাদেশে স্বজন পরিজনদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন এখানকার হিন্দু বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, আদিবাসী, পাহাড়ি সকলের গগনবিদারী শ্লোগানে পার্লামেন্ট চত্বর উত্তাল হয়ে ওঠে। প্রতিবাদ সমাবেশে মূলধারার লোকজনও এসে সংহতি প্রকাশ করেন।
 
 
সমাবেশের আয়োজকরা বাংলাদেশে নির্বাচন ও যেকোনো রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের ঘটনা একটি নিয়মিত বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে উল্লেখ করে এর তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এ ব্যাপারে সরকারগুলোর নীরব ভূমিকা দুর্বৃত্তদের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ মদদ হিসেবেই গণ্য করা যায় বলে অভিযোগ করেন সমাবেশে আগত লোকজন। তাঁরা বলেন, বাংলাদেশে সংঘটিত একটি সাম্প্রদায়িক নির্যাতনের ঘটনারও বিচার হয়নি। বরং মিথ্যা, সাজানো ঘটনা ঘটিয়ে গ্রামের পর গ্রাম হিন্দু বাড়ি আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে, নিরীহ হিন্দুদের মামলা দিয়ে কারান্তরিন করা হয়েছে। সংখ্যালঘুদের জমি জমা দখল, হত্যা, ধর্ষণ, মূর্তি ভাঙ্গা, জোর পূর্বক ধর্মান্তরিত করণের ঘটনা ঘটছে। তাঁরা বলেন, এখন বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের সরকারী কর্মকর্তাদেরও সরিয়ে দেয়া হচ্ছে। বাধ্যতামূলক অবসরে অথবা চাকুরীচ্যূত করা হচ্ছে।
 
বাংলাদেশকে ধর্মীয় সংখ্যালঘু শূন্য করার চক্রান্ত হচ্ছে দাবী করে তাঁরা অনেক ঘটনা মিডিয়ায়ও আসতে পারছে না বলে অভিযোগ করেন। তাঁরা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাসহ অন্য উপদেষ্টা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবর্গ দেশে যেকোনো মূল্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার যে ‘অভয়’ দিয়ে যাচ্ছেন, বাস্তবে তা প্রতিফলিত হচ্ছে না অভিযোগ করে বলেন, যদি মনে প্রাণে সেটি ধারণ করেন তাহলে প্রকৃত অর্থে দ্রুতই তা দৃশ্যমান হওয়ার কথা। তাঁরা অন্তর্বতী সরকারের কাছে সকল নাগরিকের সমঅধিকার নিশ্চিত করার আহবান জানান। সমাবেশে এসব নির্যাতনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন ও প্রভাবশালী বিশ্বনেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণে পদক্ষেপ গ্রহণেরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
 
একই দিন অটোয়াস্থ বাংলাদেশ হাই কমিশনেও একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা, নির্যাতনের দ্রুত সুষ্ঠু বিচার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা ও নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করার দাবীতে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর এই স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।