• মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪
    ১০ পৌষ ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ২৩:২৪

ঢাকে কাঠি ষষ্ঠীপূজার মধ্য দিয়ে দুর্গোৎসব শুরু

  • জাতীয়       
  • ০৯ অক্টোবর, ২০২৪       
  • ৩৬
  •       
  • ০৯-১০-২০২৪, ২১:১৫:২১

পথরেখা  অনলাইন : গ্রীষ্মের অভিঘাত ও বর্ষার দুঃস্বপ্নের পর উমা এলেন জগতকে নির্মল আনন্দে ভরিয়ে দিতে এবং সুর ও অসুরের মঞ্চ থেকে অসুরকে সংহার করতে। মহালয়ার পর থেকে ক্ষণগণনার পর ইতিমধ্যে ঢাকে কাঠি পড়েছে, ষষ্ঠীপূজার মধ্য দিয়ে শুরু হলো সনাতন সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। আনন্দ, আয়োজন, উদযাপনে সর্বজনীন এই উৎসবে মাততে প্রস্তুত দেশ।

বুধবার বোধনের পর দেবীর অধিবাস। বেল তলায় দেবীর আরাধনা। গণেশ, কার্তিক, লক্ষ্মী, সরস্বতী-সপরিবারে একরাত সেখানেই থাকবেন মা দুর্গা। সপ্তমীর সকালে পা দেবেন বাপের বাড়িতে।

এ বছর দুর্গার আগমন ও গমন

এই বছর দুর্গার আগমন দোলা বা পালকিতে। আর মা দুর্গা পুত্র-কন্যা নিয়ে কৈলাশে ফিরে যাবেন গজ বা হাতির পিঠে আসীন হয়ে।

শাস্ত্রমতে, দুর্গা যদি পালকিতে করে আসেন, তাহলে ফল ‘দোলায়াং মকরং ভবেৎ’ অর্থাৎ মহামারী, ভূমিকম্প, খরা, যুদ্ধ ও অতিমৃত্যু। যাতে বিপুল প্রাণহানি অনিবার্য। দেবী ফিরবেন গজ বা হাতিতে, শাস্ত্র মতে যা দেবীর উৎকৃষ্টতম বাহন। দেবীর আগমন বা গমন হাতিতে হলে মর্ত্যলোক ভরে ওঠে সুখ-শান্তি-সমৃদ্ধিতে। পূর্ণ হয় ভক্তদের মনোবাঞ্ছা। পরিশ্রমের সুফল পায় মর্তলোকের অধিবাসীগণ। অতিবৃষ্টি বা অনাবৃষ্টি নয়, ঠিক যতটা প্রয়োজন ততটা বর্ষণ।

বোধন

পুরাণ মতে, সূর্যের উত্তরায়ণ হচ্ছে দেবতাদের দিন। সূর্যের এই গমনে সময় লাগে ছয় মাস। এই ছয় মাস দেবতাদের একদিনের সমান। আর দিনের বেলায় দেবতারা জেগে থাকেন। তাই শাস্ত্র মতে দিনেই দেবতাদের পূজা করা হয়।

আবার সূর্যের দক্ষিণায়ন হলো দেবতাদের রাত। সূর্যের এই গমনকালে ছয় মাসকে দেবতাদের এক রাত ধরা হয়।  আর রাতে দেবতারা পূজার জন্য ‘অকাল’। কিন্তু দেবীর পূজা করতে হলে তো তার বোধন অর্থাৎ জাগরিত করতে হবে।  

তবে রামচন্দ্রের আগে প্রথম আদ্যাশক্তি মহামায়ার পূজা করেছিলেন রাজর্ষি শুঁঠ। আর তার সঙ্গী ছিলেন সমাধি বৈশ্য। সেই পূজাকে আমরা বর্তমানে বাসন্তী পূজা নামে জানি।

অকাল বোধন

মহাদেবের বর পেয়েছিলেন রাবণ। আর দেবী দুর্গা বিভিন্ন রূপের একনিষ্ঠ সাধকও ছিলেন মহাদেবে। কিন্তু রামের হাতে রাবণের বধ ছিল দৈববাণী। তাই রাম-রাবণের যুদ্ধ যখন অবশ্যম্ভাবী, সেই সময় প্রজাপতি ব্রহ্মার দ্বারস্থ হলেন দেবতারা।

কিন্তু দেবী তখন নিদ্রিতা। দেবতাদের অনুরোধে স্বয়ং ব্রহ্মা দেবীর পূজা করে তাকে তুষ্ট করার উপায় জিজ্ঞাসা করলেন। দেবী বললেন, যদি রামচন্দ্র তার বোধন করেন, তবেই তিনি রাবণ বধে তাকে সাহায্য করবেন। রামচন্দ্র লঙ্কা অভিযানের আগে তাই করেছিলেন। সেজন্যই বিশেষ করে শরৎকালের এই দুর্গা পূজা অকাল বোধন নামেও পরিচিত।

বেল গাছের নিচে কেন একদিন থাকবেন দুর্গা

রামকে দেবীর নির্দেশের কথা জানিয়ে দেন প্রজাপতি ব্রহ্মা ও দেবরাজ ইন্দ্র। যেহেতু সময়টা ছিল শরৎকাল, তাই রামচন্দ্র নিজ হাতে দেবীর মূর্তি গড়ে তার আরাধনার প্রস্তুতি নিলেন। সেই সময় ধ্যানে বসে  ব্রহ্মা দেখলেন বেল গাছের নিচে একটি ৮-১০ বছরের বালিকা খেলা করছে। ব্রহ্মা বুঝলেন তিনিই দেবী।

তারপরেই প্রজাপতি স্থির করলেন দেবীর বোধনের পুজো হবে ওই বেল গাছের নিচেই। সেই কারণে প্রথা মেনে আজও বোধনের আগে বেল গাছের পূজা করে তা প্রতিষ্ঠিত করা হয় দেবীর ঘটে। তারপরেই শুরু হয় বোধন, শুরু হয় দেবীর আরাধনা।

ইতিমধ্যে ষষ্ঠীর সকাল থেকেই শুরু হয়েছে ঠাকুর দেখা, নতুন জামা, নতুন জুতো পড়ে হৈ-হুল্লোড়, খাওয়া-দাওয়া। বাড়ির পুজোগুলোর সাবেকিয়ানা, বারোয়ারীর নান্দনিকতায় মিলে-মিশে রঙিন উদযাপন শুরু হয়েছে দেশের পাড়ায় পাড়ায়। তবে এখন চলছে একেবারে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। বিশেষ করে বারোয়ারী মণ্ডপগুলোতে দম ফেলার সময় নেই প্রতিমার কারিগরসহ সাজসজ্জার কাজ করা মানুষগুলোর।

দুর্গোৎসব মূলত পাঁচ দিনের হলেও এর শেষ হয় কোজাগরি লক্ষ্মীপূজায় গিয়ে। টানা এই লম্বা সময় নানা আনন্দ, উপাচারে মেতে থাকেন সনাতনীরা।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের তথ্য বলছে, গতবারের তুলনায় ঢাকা মহানগরে মণ্ডপের সংখ্যা বাড়লেও, সারাদেশে এই সংখ্যা কমেছে। দেশের ৩১ হাজার ৪৬১টি মন্দির ও মণ্ডপে এবার পূজা হবে। গত বছর এই সংখ্যা ছিল ৩২ হাজার ৪০৮টি ।

দুর্গার আগমনে জীবনের সব হতশ্রী দূর হোক। আর দুর্গোৎসবের স্মৃতিগুলো ঝরে পড়ুক শিউলি আর ছাতিম হয়ে।
পথরেখা/এআর

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।