• বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪
    ১১ পৌষ ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ১১:২৩

বেনাপোল-খুলনা ও বেনাপোল-ঢাকা ট্রেন চোরাচালানীদের প্রধান রুট

  • সারাদেশ       
  • ১৯ অক্টোবর, ২০২৪       
  • ২৬
  •       
  • ১৯-১০-২০২৪, ২২:১৭:৪৩

পথরেখা অনলাই : চলছে তীব্র গরম। আর এই গরমে প্রতিদিন শত শত শীতের কম্বল, বিভিন্ন চকলেট, প্রসাধনী দ্রব্যাদি সীমান্তের অবৈধ পথে চোরাকারবারিরা নিয়ে আসছে বেনাপোল চেকপোস্ট এলাকা থেকে। পরে এসব পণ্য যশোর, খুলনা, নোয়াপাড়া, দৌলতপুর ও খুলনা থেকে আসা শতাধিক নারী পুরুষ মহিলা চোরাকারবারিরা বেনাপোল-খুলনা-মোংলাগামী কমিউটার ট্রেন ‘বেতনা এক্সপ্রেস’ ও বেনাপোল-ঢাকাগামী ‘বেনাপোল এক্সপ্রেস’ এ করে নিয়ে যাচ্ছে তাদের গন্তব্যে।

প্রতিদিনের দৃশ্য এটা বেনাপোল রেলস্টেশনে। রেল পুলিশ, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী, আনসার সদস্য ও থানা পুলিশের আদায়কারী দালালের সহযোগিতায় প্রতিদিন এ কারবার চলছে। আইন প্রয়োগকারী বিভিন্ন সংস্থার সদস্যদের চোখের সামনে এ ব্যবসা চললেও তারা এ ব্যাপারে নিরব ভূমিকা পালন করে থাকে। এসব ট্রেনে কোন তল্লাশি চালানো হয় না। যাত্রীদের সামনেই চোরাচালানীদের কাছ থেকে প্রকাশ্যে টাকা নিতে দেখা যায় এ সব বাহিনীর লোকদের। মাঝে মধ্যে বিজিবি সদস্যরা এসে ঘুরে ফিরে চলে যায়।

সড়ক পথে বেনাপোল চেকপোস্ট সীমান্ত পার হলে ঢাকা-বেনাপোল সড়কের আমড়াখালি নামক স্থানে বিজিবি চেকপোস্ট, বেনাপোল বন্দর থানা, নাভারণ হাইওয়ে ফাঁড়ি, শার্শা থানা, ঝিকরগাছা থানা অতিক্রম করা ঝুঁকিপুর্ণ। অথচ ট্রেনের চোরাই পণ্য পরিবহন অনেক সহজলভ্য ও খরচ কম। বেনাপোল থেকে যশোর, খুলনা আর কোথাও বাধা নেই, নেই কোথাও বিজিবি বা পুলিশ। তাই অধিকাংশ চোরাকারবারীরা বেনাপোল থেকে ছেড়ে যাওয়া বেতনা ও বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেন দুইটিকে তাদের মালামাল পাচারের নিরাপদ বাহন হিসাবে ব্যবহার করছে। ট্রেনের মধ্যে দায়িত্বে নিয়োজিত রেলওয়ে পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নির্দিষ্ট হারে টাকা পেয়ে এসব চোরাকারবারী পণ্যকে বৈধ্যতা দিচ্ছে। আর নির্দিষ্ট থানা পার হতে চোরাকারবারীরা থানার দালালদের দিচ্ছে টোপলা প্রতি একটি অংকের টাকা। যখনি কোন চোরকারবারী এসব দালালদের টাকা দিতে অস্বীকার করেন তখনি দালাল ও চোরাকারবারীদের মাঝে তুলকালাম শুরু হয়। অকথ্য ভাষায় চলে চোরকারবারী মহিলাদের গালিগালাজ।এভাবেই চলছে বেনাপোল থেকে খুলনাগামী ও ঢাকাগামী ট্রেনের যাত্রী সেবা।

বেতনা এক্সপ্রেস ট্রেনটি প্রতিদিন বেনাপোল থেকে সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে ও বিকেল ৫টায় দুইবার যাওয়া আসা করে থাকে। আর বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনটি দুপুর একটায় ছেড়ে যায় বেনাপোল থেকে। এসব ট্রেনে কম্বল এর সাথে মাদক, থ্রি-পিস, চকলেট, বিভিন্ন ব্র্যান্ডের প্রসাধনী সামগ্রী, ইমিটেশন গহনা, সিগারেট, মোবাইল, কাপড়, কিসমিস, নিম্নমানের চা পাতা, আমদানি নিষিদ্ধ ওষুধসহ বড় বড় চালান নির্বিঘ্নে নিয়ে যাচ্ছে যশোর খুলনাসহ বিভিন্ন স্থানে। যার ফলে সরকার হারাচ্ছে লাখ লাখ টাকার রাজস্ব। এসব পণ্য আগে বৈধ পথে আমদানি হয়ে আসলেও এখন সবই আসছে চোরাই পথে।

নতুন করে গজিয়ে উঠা বেনাপোল চেকপোস্ট এলাকার বিভিন্ন দোকানসহ আশেপাশের গ্রামে বিক্রি হচ্ছে এসব পণ্য। সকালের ট্রেনে শত শত মহিলা চোরাকারবারী চলে আসে বেনাপোল রেলস্টেশনে। সেখানে নেমে ইজিবাইকে করে চলে যায় চেকপোস্টসহ বিভিন্ন এলাকায়। সেখান থেকে চোরাই মালামাল কিনে আবরো ইজিবাইক ভর্তি করে মাল নিয়ে আসে রেলস্টেশনে।

বেনাপোল থেকে যশোর যাওয়াতকারী রেল যাত্রী আনারুল ইসলাম জানান, আমি প্রতিদিন ব্যবসার কাজে যশোর থেকে বেনাপোল যাতায়াত করে থাকি। আসা যাওয়ার পথে যে ভাবে মহিলা চোরাচালানীরা ভারতীয় কম্বলসহ অন্যান্য মালামাল নিয়ে ওঠে তা কল্পনা করা যায় না। আগে এসব মালামাল আমদানি করে আনা হতো। সরকারও রাজস্ব পেতো। সরকার এসব মালামালের মূল্য ও ডিউটি বাড়িয়ে দেওয়ায় চোরাই পথে আসছে। এতে সরকারও রাজস্ব হারাচ্ছে। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কঠোর হলে চোরকারবারীদের তৎপরতা কমবে বলে তিনি জানান।

বেনাপোল রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার সাইদুজ্জামান জানান, আমরা যাত্রীদের ভালো সেবা দিতে কাজ করছি। চোরাচালান প্রতিরোধের জন্য রেল পুলিশ রয়েছে। এটা তাদের কাজ।

এ ব্যাপারে বেনাপোল রেলওয়ে ফাঁড়ির দায়িত্বে নিয়োজিত এসআই মনিরুল ইসলাম জানান, রেলওয়ের যাত্রীদের নিরাপত্তাসহ আইন শৃঙ্খলা রক্ষ, রেললাইনের দুই পাশে ১০ ফিটসহ রেলের সকল স্থাপনায় সংঘটিত অপরাধ বাংলাদেশ রেলওয়ে পুলিশ দেখভাল করে থাকে। ট্রেনে অভিযান চালানো হচ্ছে। চোরাচালানরোধে রেল পুলিশকে সতর্ক থাকার জন্য বলা হয়েছে।
পথরেখা/এআর

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।