• বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫
    ২৭ ফাল্গুন ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ১৫:১৫

রংপুর সিএমএইচে বিনামূল্যে ছানি অপারেশন সেনাবাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা

  • সারাদেশ       
  • ০৫ মার্চ, ২০২৫       
  • ১৬
  •       
  • ০৫-০৩-২০২৫, ২০:২৩:১৭

পথরেখা  অনলাইন : রংপুর সেনানিবাসের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) বিনামূল্যে ছানি অপারেশন করায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে গিয়ে চারজন দরিদ্র চক্ষু রোগী আজ বুধবার আবেগপ্রবণ ও অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬৬ পদাতিক ডিভিশনের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) এবং রংপুর এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল মোহাম্মদ কামরুল হাসান আজ সিএমএইচে খোঁজখবর নিতে গেলে এ হৃদয়স্পর্শী দৃশ্যের অবতারণা হয়।

সিএমএইচের কমান্ড্যান্ট কর্নেল ডা. এ কে এম জহিরুল হোসেন খান এবং এর চক্ষু বিশেষজ্ঞ লেফটেন্যান্ট কর্নেল ডা. মো. মুরাদ হোসেন, ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তারা এবং স্থানীয় সাংবাদিকরা এসময় উপস্থিত ছিলেন। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এর আগে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬৬ পদাতিক ডিভিশন গত ২০ ফেব্রুয়ারি নগরীর শীতল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আয়োজিত বিনামূল্যে চক্ষু সেবা ও চিকিৎসা শিবিরে ১৬৯ জন পুরুষ এবং ১৬৭ জন মহিলাসহ ৩৩৬ জন চক্ষু রোগীকে বিনামূল্যে চিকিৎসা প্রদান করে।

জিওসি মেজর জেনারেল মোহাম্মদ কামরুল হাসান ওইদিন সিএমএইচ এবং রংপুর মেডিকেল কলেজের সহযোগিতায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬৬ পদাতিক ডিভিশন কর্তৃক আয়োজিত বিনামূল্যে চক্ষু সেবা ও চিকিৎসা শিবিরের উদ্বোধন করেন। ওই শিবিরে সিএমএইচ থেকে তিনজন এবং রংপুর মেডিকেল কলেজের দুইজনসহ মোট পাঁচজন চক্ষু বিশেষজ্ঞ, নার্স, টেকনোলজিস্ট এবং সহকারীদের সঙ্গে নিয়ে চক্ষু রোগীদের পরীক্ষা করে বিনামূল্যে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও ওষুধ প্রদান করেন।

পরবর্তীতে ওই ক্যাম্প থেকে ১৭ জন রোগীকে সিএমএইচে বিনামূল্যে চক্ষু অস্ত্রোপচারের জন্য নির্বাচিত করা হয়।চক্ষু বিশেষজ্ঞ লেফটেন্যান্ট কর্নেল ডা. মো. মুরাদ হোসেন তার টিম সদস্যদের সঙ্গে মঙ্গলবার সিএমএইচে প্রথম ধাপে নির্বাচিত চারজন রোগীর সফলভাবে ছানি অস্ত্রোপচার করেন।

এই চারজন রোগী হলেন- রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছ এলাকার আক্কাস আলী (৬২), সদর উপজেলার শ্যামপুর গ্রামের ইয়াছুব আলী (৬৫) এবং মিঠাপুকুর উপজেলার জায়গিরহাট গ্রামের মেহেরুন নাহার (৬০) এবং লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার আবতার আলী (৬০)।

আজ বুধবার মেজর জেনারেল মোহাম্মদ কামরুল হাসান সিএমএইচ পরিদর্শনকালে চারজন চক্ষু রোগীর সঙ্গে কথা বলেন, তাদের সুস্থতা এবং সিএমএইচে ছানি অস্ত্রোপচারের পর তাদের চোখের স্বাস্থ্যের অবস্থা সম্পর্কে খোঁজখবর নেন।
চারজন রোগীই বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, জিওসি, সিএমএইচ কর্তৃপক্ষ, চিকিৎসক, নার্স এবং অন্যান্য কর্মীদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

এ সময় মেহেরুন নাহার জিওসিকে বলেন, তিনি ভালোভাবে কানে শোনেন না। তখন জিওসি তাৎক্ষণিকভাবে সিএমএইচ কর্তৃপক্ষকে তার কান পরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা ও ঔষুধ প্রদানের জন্য নির্দেশনা দেন।এসময় জিওসি বলেন, ‘মাঠ পর্যায়ের জনগণের কাছে স্বাস্থ্যসেবাসহ মানবিক সেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্য আমরা একই ধরণের মানবিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব ইনশাআল্লাহ।’ আলাপকালে লেফটেন্যান্ট কর্নেল ডা. মো. মুরাদ হোসেন বলেন যে চারটি ছানি অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে এবং রোগীদের ছাড়পত্র দেয়ার আগে সিএমএইচের অস্ত্রোপচার পরবর্তী পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।

রংপুরের সিএমএইচের কমান্ড্যান্ট কর্নেল ডা. একেএম জহিরুল হোসেন খান জানান, অন্যান্য নির্বাচিত রোগীদেরকে প্রস্তুত করার পরে তাদের পরবর্তী চিকিৎসা ও অস্ত্রোপচার পর্যায়ক্রমে করা হবে। কারণ তাদের মধ্যে কেউ কেউ ডায়াবেটিস এবং অন্যান্য অসুস্থতায় ভুগছেন। দরিদ্র রোগী মেহেরুন নাহার বলেন, তিনি একজন বিধবা এবং তিন কন্যার মা, চরম দারিদ্র্যের কারণে তার ডান চোখের চিকিৎসা এবং অস্ত্রোপচার করার কোনও উপায় ছিল না।

তিনি বলেন, ‘অন্যদের কাছ থেকে জেনে আমি গত ২০ ফেব্রুয়ারি নগরীতে বিনামূল্যে চক্ষু সেবা শিবিরে আমার চোখ পরীক্ষা করতে এসেছিলাম। সিএমএইচে ছানি অস্ত্রোপচারের পর আমি এখন ভালোভাবে দেখতে পাচ্ছি। এর জন্য আমি সর্বশক্তিমান আল্লাহ এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’

হতদরিদ্র রোগী আক্কাস আলী, যিনি আগে অটোরিকশা চালিয়ে নিজের পরিবারের জীবিকা নির্বাহ করতেন, তিনি বলেন যে মাইকিং এ ঘোষণা শুনে গত ২০ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা শিবিরে তার চোখ পরীক্ষা করতে এসেছিলেন।

তিনি বলেন, ‘দৃষ্টিশক্তি কম থাকার কারণে আমি অটোরিকশা চালানো ছেড়ে দিয়েছি। ফলে, আমাকে চরম দারিদ্র্যের মধ্যে পড়তে হয়েছে। এখন সিএমএইচে ছানি অস্ত্রোপচারের পর সবকিছু দেখতে পেয়ে আমি খুব খুশি।’এজন্য তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং সিএমএইচ কর্তৃপক্ষকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
পথরেখা/এআর

 

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।