• মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪
    ১০ পৌষ ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ২২:৪১

আজ পবিত্র শবে বরাত

  • জাতীয়       
  • ১৮ মার্চ, ২০২২       
  • ১৩৬
  •       
  • ১৮-০৩-২০২২, ১২:০০:৪২

দেশকন্ঠ প্রতিবেদন : বছর ঘুরে আবারো আমাদের সামনে উপস্থিত মাহে লাইলাতুল বরাত। ইসলামি শরিয়তে ‘শবে বরাত’ এর গুরুত্ব অপরিসীম। যে সমস্ত বরকতময় রজনীতে আল্লাহ্পাক তাঁর বান্দাদের প্রতি রহমতের দৃষ্টি দান করেন, শবে বরাত তার মধ্যে অন্যতম। তাফসীর-হাদিস ও বিজ্ঞ আলিমদের পরিভাষায় যাকে শাবানের মধ্য রজনী নামে অভিহিত করা হয়। যে রাতটি হলো শাবান মাসের চৌদ্দ তারিখ দিবাগত রাত। পবিত্র শবে বরাত উম্মতে মুসলিমার নাজাত লাভের মাধ্যম। হযরত মোহাম্মদ (সা.) থেকে এ পর্যন্ত প্রায় দেড় হাজার বছরের ইতিহাসে এ রাত মুসলিম উম্মাহর কাছে ‘নাজাতের উসিলা ও পবিত্র’ হিসেবে গণ্য হয়ে আসছে। প্রিয় নবী (সা.), সলফে সালেহীন, ও বিজ্ঞ মনীষীগণ এ রাতটিকে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে পালন করেছেন। অনুরূপভাবে যুগে যুগে বিশ্ব মুসলিম উম্মাহ এই রাতকে পবিত্র শবে বরাত তথা সৌভাগ্যের রজনী হিসেবে নিবিড় এবাদত বন্দেগীর মাধ্যমে পালন করে আসছেন। শবে বরাত মূলত ফার্সি শব্দ। এটি আরবী শব্দ নয় বলে পবিত্র কোরানে হুবহু ‘শবে বরাত’ শব্দের উল্লেখ নেই। যেমনটি নেই নামাজ, রোজা, ফিরিস্তা ইত্যাদি। কিন্তু পবিত্র কোরানে সালাত, সওম ইত্যাদি দ্বারা যেমন নামাজ ও রোজা বুঝানো হয়েছে তদ্রুপ মহান আল্লাহ পাক সূরা দূখানের একটি আয়াতে ‘লাইলাতুল মোবারাকাহ” দ্বারা ‘শবে বরাত’ বুঝিয়েছেন বলে মোফাসসেরিনে কেরাম ও সলফে সালেহীনগণের অভিমত। শব অর্থ রাত, ‘বরাআত’ অর্থ মুক্তি, ভাগ্য। সুতরাং শবে বরাত অর্থ মুক্তি ও ভাগ্যের রাত। আরবীতে বরাআত এর আরেক অর্থ হলো বিচ্ছিন্নতা। যার সাথে অবস্থান অপছন্দনীয়, তার সঙ্গ হতে দূরে থাকা। [সূত্র: মুফরাদাতে ইমাম রাগেব, পৃষ্ঠা ৪৫]
 
এই রাতের মর্যাদা উল্লেখ করে তাফসিরকারক আল্লামা ইসমাইল হাক্কী (রাহ.) তাফসীরে রুহুল বয়ানে বলেছেন, শবে কদরের মতই এই রাতে সৃষ্টি তথা বান্দাহর (অন্যান্য) প্রতি আল্লাহর সৌন্দর্যের বরকত আরশের প্রতিটি কণা হতে ভূতলের গভীরে পৌঁছে। [রহুল বয়ান: ৮ম খণ্ড, পৃষ্ঠা ৪০১] তিনি বলেন, এই রাতকে লাইলাতুর রহমতও বলা হয়েছে। এর কারণ হচ্ছে- এ রাতে আল্লাহর বিশেষ রহমত নাযিল হয়। তিনি আরো বলেন, লাইলাতুল বরাত এ জন্য বলা হয় যে, খাজনা আদায়কারী খাজনা পাওয়ার পর যেভাবে ছাড়পত্র দিলে খাজনা দানকারী সব ধরনের শাস্তি হতে মুক্তি পায়, অনুরূপভাবে এ রাতে বান্দা গুনাহ মুক্ত হয়ে সকল পাপের সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করে নিজেকে মুক্ত করে। [তাফসীরে রহুল বয়ান: ৪ খণ্ড, পৃষ্ঠা ৪০৪] শবে বরাত সম্পর্কে সুনানে ইবনে মাযা শরীফে হযরত আবু মুসা আশআরী (রা.) বর্ণনা করেছেন- রাসুল (সা.) বলেছেন, আল্লাহ রাব্বুল আলামিন মধ্য শাবানের রাতে তার দৃষ্টির প্রতি (রহমতের) দৃষ্টিপাত করেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষপোষণকারী ব্যতিত সকলকে ক্ষমা করে দেন। হযরত ওসামা ইবনে যায়দ (রা.) বলেন, আমি প্রশ্ন করলাম হে আল্লাহর রসূল আপনি শাবান মাসে যত বেশি রোযা রাখেন, জন্য কোন মাসে আপনাকে এত বেশি রোজা রাখতে দেখিনা এর কারণ কি? তখন রাসূল (সা.) এরশাদ করলেন এ মাস রজব ও রমজানের মাঝামাঝি। এ মাস সম্পর্কে মানুষ গাফেল বা উদাসীন রয়েছে। এ মাসে আল্লাহর কাছে বান্দার আমল উঠানো হয়। আমি পছন্দ করি আমার আমলসমূহ তখন এমন অবস্থায় উঠানো হোক যে, আমি রোযাদার। [কানযুল উম্মাল দুররে মানসূর: ৭ম খণ্ড, ৪০১পৃষ্ঠা]
 
শবে বরাতের রোযা রাখা অধিকতর সাওয়াবের কাজ। হাদিসে আছে, যখন শা’বানের চৌদ্দ তারিখ দিনগত রজনী আসবে। তোমরা রাতে নামাযের জন্য দাঁড়াবে (রাত জেগে ইবাদত করবে) আর দিনে রোযা রাখবে। [ইবনু মাজাহ্: খণ্ড ১ম, পৃষ্ঠা ৪৪৪] শবে বরাতে নফল ইবাদত-বন্দেগী করা অতি উত্তম। যত বেশী ইবাদত, যিকির-আযকার, তেলাওয়াতে কোরান হবে তত বেশি ভাল ও সাওয়াব পাওয়া যাবে। তবে এই মহিমান্বিত রাতে কোনোভাবেই রাস্তাঘাটে আনন্দ উৎসব, অহেতুক ঘোরাঘুরি ও আতশবাজি ইত্যাদি করা উচিত নয়। এতে পবিত্রতাতো নষ্ট হবেই, যে ব্যক্তি এসব অপকর্মে লিপ্ত থাকে তিনি অভিশপ্ত হন। যত সম্ভব একাগ্রচিত্তে নফল নামাজ পড়া, কোরআন তেলাওয়াত, জিকির-আজকার, প্রিয় হাবিবের প্রতি দরুদ পড়া, কান্নাকাটি করে নিজের গুনাহ মাফ করানো, অন্যের মাগফিরাতের জন্য দোয়া করা, সর্বোপরি মহান আল্লাহ পাক ও তাঁর প্রিয় হাবিবের সন্তুষ্টি অর্জন করার মধ্যেই শবে বরাতের সার্থকতা। মহান আল্লাহ পাক আমাদের ইসলামী শরিয়ত মতে খালেস নিয়্যতে এবাদত বন্দেগীর মাধ্যমে শবে বরাত পালন ও উত্তম আমলের তওফিক দিন। আমিন।
দেশকন্ঠ/অআ

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।