দেশকন্ঠ প্রতিবেদন : গরুর খামারে যখন আগুন জ্বলছিল তখন মনে হচ্ছিল আমি বেঁচে থেকেও যেন মরে গেছি। চারদিক কেমন যেন অন্ধকার হয়ে যাচ্ছিল। সারারাত ঘুমাতে পারেনি আমি। নিজেকে সান্ত্বনা দেওয়ার মত শক্তি আমি খুঁজে পাচ্ছিলাম না। এভাবেই কষ্টের কথাগুলো বলছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত গরু খামারি মো. সলেমান আলী। তিনি উপজেলার কসবা ইউনিয়নের আখিলা গ্রামের বাসিন্দা।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তার গরুর খামারে আগুন লেগে পুড়ে মারা যায় ২৬টি গরু। পরদিন শুক্রবার সকালে বাড়ির পাশে দুই কাঠা জমিতে গরুগুলোকে পুঁতে ফেলা হয়। এতে প্রায় ৩০ লাখ টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি সলেমানের। সলেমান আলী বলেন, খামারে ২৭টি গরু ছিল। সবাই ভেবেছিল সবগুলোই মারা গেছে। কিন্তু আগুন নেভানোর পর একটি ছোট গরু জীবিত পাওয়া গেছে। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, আমার আয়-রোজগারের একমাত্র সম্বল ছিল গরুর খামারটি। গত ১০ বছর থেকে এ গরুর খামারই আমার সংসারে এনেছে সচ্ছলতা। আমার পরিবারে প্রায় ১০-১২ জন সদস্য রয়েছে যাদের সব খরচ চলতো এ গুরুর খামার থেকে। কিন্তু আধাঘণ্টার আগুনে আমার সব স্বপ্ন ভঙ্গ করে দিয়েছে। এখন আমার সংসার চলবে কেমন করে?
কসবা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম জাকারিয়া জাগো নিউজকে বলেন, সলেমান আলী একজন গরীব মানুষ। তার খামারে এ অগ্নিকাণ্ড মেনে নেওয়ার মতো না। তার খামারে আগুনের খবর পেয়ে খোঁজ-খবর নিয়েছি। পরিবারটিকে আগের অবস্থানে ফিরিয়ে আনা যায় কি না এজন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। নাচোল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শরীফ আহম্মদ জাগো নিউজকে বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে নগদ ১০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। আমি নিজে গিয়ে তাদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছি। চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোস্তাফিজুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের সাহায্যের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বেঁচে যাওয়া একটি গরুর চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। ১৭ মার্চ সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে খামারের গরুকে মশার কামড় থেকে বাঁচাতে খড়কুটা দিয়ে আগুন জালিয়ে ধোঁয়া তৈরি করে নামাজ পড়তে যান সলেমান। নামাজ শেষে ফিরে খামারে আগুন দেখতে পান। এতে ২৬ গরুর মৃত্যু হয়।
দেশকন্ঠ/অআ