দেশকন্ঠ প্রতিবেদন : সাত জেলা নিয়ে বিশাল হাওর বিস্তৃত। এর মধ্যে নেত্রকোণায় হাওরাঞ্চলে এবার ৪০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। নেত্রকোণা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, প্রায় এক লাখ ৮০ হাজার কৃষক এই আবাদে যুক্ত। হাওরের একক ফসল বোরো ধানের প্রধান শত্রু হয়ে দাঁড়ায় আগাম বন্যা। ‘বানের’ জল রুখতে তাই ফসল রক্ষা বাঁধই প্রধান ভরসা। সেই বাঁধ সংস্কারের কাজ নিয়ে প্রতি বছর নানা অভিযোগ থাকলেও এবার ‘কিছুটা স্বস্তি মিলছে’ বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।কারণ এবার খুব ভালোভাবে বাঁধ সংসাকার করা হয়েছে।
হাওড় এলাকা পুরোটাই এক ফসলি। পুরো হাওরের বোরো ফসল রক্ষায় জেলায় প্রায় ৩৬০ কিলোমিটার ফসল রক্ষা ডুবন্ত বাঁধ রয়েছে। বাঁধ তলিয়ে গেলে মানুষের দুর্দশার সীমা-পরসীমা থাকে না। তাই বাঁধ নিয়ে শঙ্কা বোরো ফসল না তোলা পর্যন্ত কাটে না কৃষকের।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী এম এল সৈকত বলেন, এ বছর ১৮৩ কিলোমিটার ফসল রক্ষা বাঁধের সংস্কারকাজ করা হয়েছে। ২৩ কোটি ছয় লাখ টাকা ব্যয়ে ১৬৫টি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) মাধ্যমে এই কাজ হয়েছে। “গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর বাঁধ সংস্কারকাজে হাত দেয় পাউবো। গত ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে মাটি কাটার কাজ সম্পন্নের পাশাপাশি বেশিরভাগ বাঁধের পাশে ঘাস ও গাছ লাগানোর কাজও শেষ করা হয়। যেসব স্থানে ঘাস লাগানো বাকি ছিল তাও পরে শেষ করা হয়েছে।”
নির্বাহী প্রকৌশলীর দাবি, “এবার সময়মতো বাঁধ সংস্কার হওয়ায় মাটি শক্ত অবস্থানে আছে। আগাম বন্যা হলেও পানির তোড়ে ভাঙবে না। আশা করছি, বড় ধরনের বিপর্যয় না ঘটলে কৃষক ফসল ঘরে তুলতে পারবেন।“
‘ধানের দেশ’ হাওর থেকে দেশের খাদ্য ভাণ্ডারের একটি বড় জোগান আসে। এখন হাওরের যেদিকে তাকানো যায় শুধু সবুজ আর সবুজ। অনেক ধানেই শীষ ছাড়তে শুরু করেছে। বাতাসে দোল খাচ্ছে সেই শীষ। কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদের নিয়মিতই খোঁজ নিতে যেতে হয় হাওরে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক এফ এম মোবারক আলী বলেন, “আমরা নিয়মিতই হাওরে যাচ্ছি, ফসলের গোছা দেখছি। বাঁধের কাজ করেছে পাউবো। এই প্রথম মনে হয়, এই অংশে ভাল কাজ হয়েছে।”
“বৈশাখের সাধারণ ঢলে হয়তো কিছু হবে না। তবে ভারী বর্ষণ, পাহাড়ি ঢলে আগাম বন্যা হলে ভিন্ন বিষয়। কাজের মান ভাল মনে হইছে। কৃষকরাও বলছে, তাদের বাড়ির সামনের বাঁধের কাজ ভাল হইছে। তাদের মধ্যে দুঃশ্চিন্তা এবার কম মনে হইছে”, বলেন উপ-পরিচালক।
দেশকন্ঠ/রাসু