দেশকন্ঠ প্রতিবেদন : আসন্ন রমজান উপলক্ষে দুধ-ডিম ও মাংসের দাম গণমানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। এসব খাদ্য পণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করার মাধ্যমে বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে সংশ্লিষ্ট অংশীজনের সমন্বয়ে একটি সফল মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার মাধ্যমে দুধ-ডিম-মাংস এসব খাদ্যের উর্ধ্বগতি রোধ করতে করণীয় সম্পর্কে জানতে এই সভাটির আয়োজন করা হয়।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদার সভাপতিত্বে মত বিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত সচিব এস এম ফেরদৌস আলম, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. দেবাশীষ দাস, পরিচালক (বাজেট ও প্লানিং), পরিচালক (সম্প্রসারণ) কৃষিবিদ দীপক রঞ্জন রায়, পরিচালক (উৎপাদন) ডা. মোঃ রেয়াজুল হক (জসিম) সহ প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উর্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ। বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিলের সভাপতি মো. মশিউর রহমান, বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশনের (বিডিএফএ) সভাপতি মোঃ ইমরান হোসেন, অ্যাডভান্স এনিমেল সাইন্স লিমিটেড-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. এম এম খান, বিডিএফএ সাধারন সম্পাদক শাহ এমরান বিনিময় সভায় অংশগ্রহন করেন।
অনুষ্ঠানে সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় ও করনীয় সম্পর্কে অতিথিবৃন্দরা বলেন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর পবিত্র রমজান উপলক্ষে খামারী সংগঠনের সহযোগিতায় ন্যায্যমূল্যে ভ্রাম্যমাণ বিক্রির মাধ্যমে বিগত পবিত্র রমজান মাসে দুধ, ডিম ও মাংসের দাম গণমানুষের ক্রয়ক্ষমতার সীমানায় রাখতে সক্ষম হয়েছে। এবারও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর এ ধারাটি অব্যাহত রাখতে সক্ষম হবে বলে আশা প্রকাশ করেন বক্তারা। বক্তারা বলেন খামারী, ভোক্তা, বিক্রেতা এবং সরবরাহকারী সকলেই যাতে যাতে ন্যায্যমূল্য পান সে দিকটির প্রতি বিশষ নজর দিতে হবে। ভোক্তাকে যেন অতিরিক্ত মূল্যে পণ্যগুলি ক্রয় করতে না হয় সেই বিষয়গুলোর দিকে সরকারী তদারকি বৃদ্ধি করতে হবে। আসন্ন রমজান মাসে এসব পণ্য কোন অসাধু চক্র বা ব্যক্তি সাপ্লাই চেইনে যাতে বিঘ্ন ঘটাতে না পারে সে বিষয়গুলির দিকে লক্ষ্ রাখা জরুরি। সাধারণ মানুষ যেন ভোগান্তির মুখে না পড়ে সেজন্য তারা বিভিন্ন মতামত ব্যক্ত করেন।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উর্ধতন কর্মকর্তাগণ বলেন, প্রাণিজ পণ্যের জোগানে কোন ঘাটতি নেই। বৈশ্বিক করোনা সংকটে উৎপাদন খরচ বাড়লেও সরবরাহ নিশ্চিত করার যথেষ্ট যোগান ও মজুদ রয়েছে। এসময় বক্তারা বলেন, গত বছরে করোনাকালীন সময়ে ভ্রাম্যমান ব্যবস্থার মাধ্যমে দুধ-ডিম-মাংস বিক্রয় করে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছিল প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। সেসময় পণ্যগুলি ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে রাখতে সমর্থ হয়েছিল ড্লিএস। বিশেষ করে বন্দরনগরী চট্টগ্রামে ভ্রাম্যমাণ টিম-এর মাধ্যমে এ ধরনের কার্যক্রমটি ভোক্তা সাধারণের মাধ্যমে ব্যাপক সাড়া ফেলছিল বলে বক্তারা উল্লেখ করেন। চট্টগ্রামের ন্যায় রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে সেই এ ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করলে দুধ-ডিম-মাংসের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখা সম্ভব হবে বলে জানান সভায় অংশগ্রহনকারী স্টেক হোল্ডাররা। এ ধরনের কার্যক্রম গুলি বেশি বেশি করে মিডিয়ার মাধ্যমে প্রচার করলে অসাধু ব্যবসায়ীরা তাদের অশুভ তৎপরতা থেকে সরে আসবে।
বর্তমান প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক (উৎপাদন) ডা. রেয়াজুল হক-এর উপর এ ধরনের কার্যক্রমটি পরিচালনার দায়িত্বটি দেয়া যেতে পারে বলে মত প্রকাশ করেন বক্তারা। উদ্যোগটি বাস্তবায়ন শ্রমসাধ্য হলেও বরাবরের মতই ডিএলস প্রস্তুত বলে মনে করে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের। এজন্য সকল স্টেকহোল্ডারদের আন্তরিক সহযোগগিতা কামনা করেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উর্ধতন কর্মকর্তারা। মতবিনিময় সভায় মাংস বিক্রেতা সমিতির সভাপতি, ছাগল-ভেড়া বিক্রেতা সমিতির প্রতিনিধি হিসেবে সাধারণ সম্পাদক বেঙ্গল মিট, মিল্ক ভিটা আড়ং ডেইরির প্রতিনিধিরা উপস্থিত থেকে তাদের জোরালো মতামত ব্যক্ত করেন।
দেশকণ্ঠ/রাসু