দেশকণ্ঠ প্রতিবেদক : ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ডিজিটাল যুগের জন্য ‘ডিজিটাল’ সংযুক্তির মহাসড়ক নির্মাণ করতে হবে। ডিজাটাল বাংলাদেশের জন্য ডিজিটাল সংযুক্তি অপরিহার্য, এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই মহাসড়ক তৈরিতে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের ভূমিকা সর্বোচ্চ।
ডিজিটাল যুগের জন্য ডিজিটাল সংযুক্তির ওপর গুরুত্ব আরোপ করে মন্ত্রী বলেন, ডিজিটাইজেসনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও রয়েছে, সেটি হচ্ছে ডিজিটাল অপরাধ। মোস্তাফা জব্বার বলেন, ডিজিটাল সংযুক্তি এবং ডিজিটালাইজেশনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ‘ডিজিটাল অপরাধ’ দ’ুটি কাজই ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের। এজন্য এ বিভাগ ও এর আওতাধীন সকল প্রতিষ্ঠানকে ডিজিটাল সংযুক্তির পাশপাশি সাইবার অপরাধ দমনেও সর্বশক্তি দিয়ে কাজ করতে হবে। টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী ২৪ মার্চ সচিবালয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ আয়োজিত ‘চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা ও ফাইভ-জি প্রযুক্তি সম্প্রসারণে করণীয়’ শীর্ষক এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো. খলিলুর রহমানের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে বিটিআরসি’র চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শরীফ উদ্দিন অন্যান্যের মধ্যে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মাহবুব-উল-আলম, যুগ্ন সচিব খোন্দকার মো. আব্দুল হাই, বিটিআরসি‘র মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাসিম পারভেজ ও বিটিসিএল’র ব্যাবস্থাপনা পরিচালক ড. রফিকুল মতিন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব মো. আসলাম হোসেন অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন,‘রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী আমাদের দায়িত্ব আমাদেরকেই পালন করতেই হবে। দায়িত্ব পালনে সামান্যতম অবহেলার সুযোগ নেই। যথাসময়ে যথাযথ কাজটি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে করতে পেরেছি বলেই আমরা প্রযুক্তিতে পিছিয়ে নেই। তাছাড়া, ফাইভ-জি প্রযুক্তি চালু করে আমরা প্রমাণ করতে পেরেছি যে আমরা পারি।’
যেখানে যে পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজন, তা সময়-মতো মিটাতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ভূমিকা গ্রহণের নির্দেশনা দিয়ে মোস্তাফা জব্বার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টি সম্পন্ন প্রজ্ঞাবান নেতৃত্বে ২০১৬ সালে ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরামে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ধারনা প্রকাশিত হওয়ার আট বছর আগেই ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি ঘোষিত হযেছে।
‘আমরা প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শিল্প বিপ্লবে শরীক হতে পারিনি’ এ কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, তবে, শ’-শ’ বছরের পশ্চাদপদতা অতিক্রম করে ঠিকই চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে উন্নত দেশের সমান্তরালে চলার সক্ষমতা দেখিয়েছি। বাংলাদেশ এখন পঞ্চম শিল্প বিপ্লবের জন্য সম্পূর্ণভাবে তৈরি বলেও তিনি উল্লেখ করেন। দেশের শতকরা ৭০ ভাগ তরুণ জনগোষ্ঠীকে ডিজিটাল যুগের উপযোগী মানব সম্পদ হিসেবে গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদেরকে প্রাগৈতিহাসিক শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে অবশ্যই বেরিয়ে আসতে হবে’। ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশের অগ্রদূত মোস্তাফা জব্বার এ সময় বলেন, ‘আমরা ফাইভ-জি সংযোগ দিচ্ছি, কিন্তু এর (৫জি প্রযুক্তির) যথাযথ প্রয়োগের ক্ষেত্র সংশ্লিষ্ট মোবাইল অপারেটরদেরই (মোবাইল কোম্পানী) নিশ্চিত করতে এবং এর প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে জনগণকে অবহিত করার দায়িত্বও তাদেরকে নিতে হবে।
তিনি বলেন, ‘এক সময় আমরা বাড়ি-বাড়ি গিয়ে জনগণকে কম্পিউটারের প্রযোজনীয়তা সম্পর্কে বুঝিয়েছি। এখন জনগণকে ৫জির প্রয়োজনীয়তা বোঝাতে হবে। একই সাথে ৫জি কোথায় কিভাবে প্রয়োগ হবে সেটিও দেখিয়ে দিতে হবে। অনুষ্ঠানে মন্ত্রী ডিজিটাল ডাকঘর প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বাংলাদেশ ডাক অধিদপ্তরকে ডিজিটাল যুগের উপযোগী করে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ডাক বিভাগের বিশাল অবকাঠামো যথাযথভাবে কাজে লাগাতে হবে। সময়ের প্রেক্ষাপটে ডিজিটাল বাণিজ্যের জন্য ডাক বিভাগ হবে সবচেয়ে দরকারী একটি প্রতিষ্ঠান এবং সে লক্ষ্যে কাজ চলছে বলেও মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
দেশকণ্ঠ/আসো