• মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪
    ১০ পৌষ ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ২২:৫০

পাকিস্তানিদের নির্মম হত্যাযজ্ঞকে ‘জেনোসাইড’ হিসেবে স্বীকৃতি

  • জাতীয়       
  • ২৬ মার্চ, ২০২২       
  • ৯৯
  •       
  • ২৬-০৩-২০২২, ১০:১১:৫৭

দেশকন্ঠ প্রতিবেদন : একাত্তরে বাংলাদেশের মানুষের ওপর পাকিস্তানিদের নির্মম হত্যাযজ্ঞকে ‘জেনোসাইড’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘জেনোসাইড ওয়াচ’। গত ফেব্রুয়ারিতে তারা এই  স্বীকৃতির খবর জানায়। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষকরা বলছেন, বিশ্বব্যাপী এখন প্রচারণার মাধ্যমে বিষয়টি আরও বেশি করে জানানোর কাজটি করতে হবে।
 
পাকিস্তানিদের শোষণ বঞ্চনার ইতিহাস এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশের মানুষের মুক্তি সংগ্রামের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে জেনোসাইড ওয়াচ বলেছে, জেনোসাইড ওয়াচ এই স্বীকৃতি দিচ্ছে যে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বাঙালিদের ওপর যেসব অপরাধ করেছে, তার মধ্যে ছিল ‘জেনোসাইড, মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং যুদ্ধাপরাধ’।
 
গবেষকরা বলছেন, বাংলাদেশে সংঘটিত জেনোসাইড-এর আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের যাত্রাপথ অনেক দীর্ঘ। সেই যাত্রাপথে প্রথম পর্বের স্বীকৃতিসূচক বিবৃতি ও ঘোষণা দিয়েছে আমেরিকাভিত্তিক দুটি সংগঠন - লেমকিন ইনস্টিটিউট ফর জেনোসাইড প্রিভেনশন এবং জেনোসাইড ওয়াচ। এই স্বীকৃতি আদায়ের যাত্রা পথে এগিয়ে অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে বাংলাদেশ সরকারকে এ বিষয়ে একটি কার্যকর রোডম্যাপ (যথাযথ পরিকল্পনা) তৈরি করতে হবে। শহীদ সাংবাদিক সিরাজুদ্দীন হোসেনের ছেলে তৌহীদ রেজা নূর এই স্বীকৃতির জন্য গত বছরের ডিসেম্বরে জেনোসাইড ওয়াচের কাছে আবেদন করেছিলেন। তার আবেদনের প্রেক্ষিতেই এ স্বীকৃতি আসে। তিনি বলেন, আমাদের পররাষ্ট্র নীতিতে এ বিষয়ে পরিষ্কার গাইডলাইন থাকতে হবে। যার আলোকে দেশে দেশে আমাদের কূটনীতিকরা অন্যান্য দেশের সরকার, রাজনৈতিক দল, বিভিন্ন সংগঠন, বিশিষ্ট ব্যক্তি এবং সাধারণ জনতাকে এ বিষয়ে সঠিক বার্তা দেবেন, উদ্বুদ্ধ করবেন বাংলাদেশের এই অভিযানে সামিল হতে। বিভিন্ন দেশে বসবাসরত বাংলাদেশের মানুষকে যুক্ত করার জন্য নানা উদ্যোগও গ্রহণ করতে হবে।
 
জেনোসাইড বিষয়ক গবেষণা হওয়া খুব জরুরি উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, প্রচারণার জন্য প্রয়োজনীয় প্রণোদনা/ফান্ড দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। গণমাধ্যমের অনেক বড় ভূমিকা রয়েছে এক্ষেত্রে। জেনোসাইড এবং এর স্বীকৃতি বিষয়ে সঠিক বার্তা প্রদানের জন্য খুব কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে গণমাধ্যম। প্রচারণা ও সচেতনতামূলক ইভেন্টের পরিকল্পনা করতে হবে। মনে রাখা দরকার যে, আমরা বর্তমানে স্বীকৃতি আদায়ের যে দুর্গম ও দীর্ঘ পথ তার একেবারে সূচনা লগ্নে আছি। তাই এ ব্যাপারে কাজ করার জন্য সমাজকে প্রথমে তৈরি করতে হবে। সমাজকে প্রস্তুত করতে সরকারের দিক থেকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে। দেশের সচেতন, নিবেদিতপ্রাণ ব্যক্তিদের সহযোগিতা ও ভূমিকা অত্যন্ত জরুরি। আশা করি রাষ্ট্র বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে— বলেন তৌহীদ রেজা নূর।
 
উল্লেখ্য, ২৫ মার্চে জাতিসংঘের সকল সদস্য দেশকে পাকিস্তানি বাহিনীর করা সেসব অপরাধকে ‘জেনোসাইড, মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং যুদ্ধাপরাধ’ হিসেবে স্বীকার করে নিতে আহ্বান জানানো হয়েছে। পাশাপাশি সেই জেনোসাইডে নেতৃত্বদাতাদের মধ্যে যারা এখনও জীবিত, তাদের বিচারের মুখোমুখি করতে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে জেনোসাইড ওয়াচের ঘোষণায়। ৫০ বছর আগের সেসব ঘটনার জন্য বাংলাদেশকে ক্ষতিপূরণ দিতে পাকিস্তান সরকারের প্রতি আহ্বান এসেছে সেখানে।
 
প্রসঙ্গত, বাঙালির মুক্তির আন্দোলনের শ্বাসরোধ করতে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে এ দেশের নিরস্ত্র মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামের সেই অভিযানের প্রথম প্রহরে ঢাকায় চালানো হয় গণহত্যা। নয় মাসের যুদ্ধে ত্রিশ লাখ শহীদের আত্মদান, আড়াই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানি এবং জাতির অসাধারণ ত্যাগের বিনিময়ে ১৬ ডিসেম্বর অর্জিত হয় চূড়ান্ত বিজয়। বিশ্বের মানচিত্রে বাংলাদেশ নামের একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটে।
 
এর আগে ২০১৭ সালে একাত্তরের ২৫ মার্চে রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বর্বর হত্যাযজ্ঞে নিহতদের স্মরণে ‘গণহত্যা দিবস’ পালনের প্রস্তাব জাতীয় সংসদে গৃহীত হয়। প্রায় সাত ঘণ্টা আলোচনার পর সংসদে সর্বসম্মতভাবে প্রস্তাবটি গ্রহণ করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদসহ ৫৬ জন সংসদ সদস্য এই আলোচনায় অংশ নেন
দেশকণ্ঠ/রাসু

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।