দেশকন্ঠ প্রতিবেদন : সন্ধ্যার পরই বন্ধ হয়ে যায় মাদারীপুরের শিবচরের বাংলাবাজার ঘাট। ফলে শরীয়তপুরের জাজিরার মঙ্গলমাঝির ঘাটে বাড়তে থাকে গাড়ির চাপ। কিন্তু এ ঘাটে ফেরি কম থাকায় ৭-৯ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে বিভিন্ন যানবাহনকে। এমন পরিস্থিতিতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার যাত্রী ও চালকদের। মঙ্গলমাঝির ঘাট কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর থেকে এ ঘাট দিয়ে ফেরি চলাচল শুরু হয়। বর্তমানে নৌপথটিতে দিনে তিনটি এ টাইপের ফেরি, দুটি ডাম্প ফেরি ও একটি ছোট ফেরি চলাচল করছে। আর রাতে শুধু তিনটি এ টাইপের ফেরি চলাচল করছে। তখন ডাম্প ফেরি দুটি ও ছোট ফেরি বন্ধ রাখা হয়। দিনে রাতে মিলে নৌপথটিতে ৬০০ থেকে সাড়ে ৭০০ যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে ঘাটটিতে পণ্যবাহী ও ব্যক্তিগত গাড়ির চাপ বেড়েছে। বর্তমানে পদ্মা নদী পার হতে প্রতিদিন অন্তত ১০০০-১২০০ গাড়ি আসছে। কিন্তু ফেরি কম থাকায় ৭-৯ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে যানবাহনকে। ১৭ এপ্রিল সন্ধ্যায় মঙ্গলমাঝির ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, পণ্যবাহী ও ব্যক্তিগত গাড়ির জট সৃষ্টি হয়েছে। ঘাট থেকে পদ্মা সেতুর পুনর্বাসন সাইট পর্যন্ত দুই কিলোমিটার এলাকায় ব্যক্তিগত গাড়ি আর গনির মোড় পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার এলাকায় পণ্যবাহী গড়ির জট লেগে আছে। গাড়ি চালক সুমন আহম্মেদ গিয়াস বলেন, বরিশাল থেকে দুপুরে রওনা হয়েছি। মাছ নিয়ে ঢাকায় রাতের বাজার ধরার কথা ছিল। কিন্তু রাত ২টায়ও ফেরি পাবো না। দ্রুত পৌঁছাতে না পারলে মাছ পচন ধরবে। ব্যক্তিগত গাড়ির চালক শামীম খান বলেন, বিকেল সাড়ে ৪টায় ঘাটে আসি। এখনো ফেরিতে উঠতে পারিনি। এভাবে প্রতিদিনই অপেক্ষার পর ফেরি পাওয়া যায়। গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়ি।
মঙ্গলমাঝির ঘাটে দায়িত্বরত ট্রাফিক সার্জেন্ট মেহেদী হাসান বলেন, ঈদকে সামনে রেখে বিকেল ৪টার পর ঘাটে গাড়ি বাড়তে শুরু করে। এ ঘাটটি ছোট, এছাড়া ফেরি চলাচল করে কম। গাড়ি ও যাত্রীদের শৃঙ্খলা রাখতে আমরা কাজ করছি। মঙ্গলমাঝির ঘাট ও মাদারীপুরের বাংলাবাজার ঘাটের ব্যবস্থাপক মো. সালাউদ্দিন বলেন, পদ্মা সেতুর নিরাপত্তার কারণে রাতে বাংলাবাজার ঘাট থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকে। তাই বিকল্প মঙ্গলমাঝির ঘাটে গাড়ির চাপ বেড়েছে। এ ঘাটে ফেরি বাড়ানোর কথা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি। ফেরি বাড়ানো হলে আশা করি গাড়ির চাপ কমবে। মাদারীপুরের বাংলাবাজার ও মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া নৌপথ দিয়ে শরীয়তপুরসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী যানবাহন ফেরি পারাপার হয়। ওই নৌপথে ফেরি চলতে গিয়ে ২০২১ সালের ২০ জুলাই পদ্মা সেতুর একটি পিলারের সঙ্গে ধাক্কা লাগে রো রো ফেরির। নদীতে তীব্র স্রোত থাকায় ফেরিগুলো পদ্মা সেতুর সঙ্গে কয়েক দফা ধাক্কা লাগে। এমন পরিস্থিতিতে ১৮ আগস্ট থেকে ওই নৌপথে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। তখন থেকে শরীয়তপুরসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ চরম বিপাকে পড়েন। এরপর নদীর স্রোত কমে গেলে ওই নৌপথে দিনের বেলা স্বল্প পরিসরে ফেরি চলাচল শুরু হয়। জরুরি সেবা নিশ্চিত করতে শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় মঙ্গলমাঝির ঘাট এলাকায় ২৫ আগস্ট নতুন করে একটি ফেরি ঘাট নির্মাণ করে বিআইডব্লিউটিসি ও বিআইডব্লিটিএ। নাব্য সংকটের কারণে দীর্ঘদিন ওই পথে ফেরি চালু করা যায়নি।
দেশকন্ঠ/অআ