দেশকন্ঠ প্রতিবেদন : রাজধানীর নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে সোমবার ১৮ এপ্রিল মধ্যরাতে নিউমার্কেট এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কয়েক দফায় ছোড়া হয় টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট। রাত সাড়ে এগারোটার পর সংঘর্ষ শুরু হলেও দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে রাত আড়াইটা পর্যন্ত। এ সময় রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করে ব্যবসায়ীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশকে বেশ বেগ পেতে হয়। অভিযোগ পাওয়া যায়, রাত ১১টার দিকে নিউমার্কেটে ঢাকা কলেজের তিন শিক্ষার্থী কাপড় কিনতে গেলে দোকানীর সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। এ সময় তিন শিক্ষার্থীকে মারধর করে ব্যবসায়ীরা। পরে ঢাকা কলেজের আবাসিক শিক্ষার্থীরা নিউমার্কেট এলাকায় এসে ভাংচুর চালায়। শুরু হয় দু'পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ। দফায় দফায় চলে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। দু'পক্ষের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া চলার সময় বেশ কয়েকজন আহত হয়। এসময় ইটপাটকেলের আঘাতে আহত হয় পুলিশের কয়েক সদস্য। বিভিন্ন দিক থেকে বৃষ্টির মতো ছোড়া হয় ইট-পাটকেল। প্রাথমিকভাবে চন্দ্রিমা মার্কেটের ব্যবসায়ী-কর্মচারীদের সঙ্গে এ ঘটনার সূত্রপাত হলেও পরে আশপাশের বিভিন্ন মার্কেটের ব্যবসায়ী ও কর্মচারীরা এসে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা ঢাকা কলেজের ক্যাম্পাসের ভেতরে অবস্থান নেয়। আর ব্যবসায়ীরা রাস্তায় অবস্থান করে। এদিকে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, চটপটি খাওয়ার পর টাকা না দেওয়ার কারণে বাগবিতণ্ডার শুরু হয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের ৩/৪ জন শিক্ষার্থীর। বাগবিতণ্ডার জেরে হাতহাতি হয়। পরবর্তী সময়ে এ ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা এসে হামলা চালায়।
পুলিশের রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের বলেন, রাতে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীদের একটি ইস্যু নিয়ে সংঘর্ষ শুরু হয়। ঘটনা জানার সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। মোতায়েন করা হয় অতিরিক্ত পুলিশ। ঘটনাস্থলে পুলিশ আসার পর দেখা যায় ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী ও নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীরা মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। ইট-পাটকেল লাঠিসোটা নিয়ে সংঘর্ষ চলছে। আমরা আমাদের মতো পদক্ষেপ নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করি। শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের ভিতরে চলে যায় এবং নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীরা সড়কে অবস্থান করলেও পরে তারা সড়ক ছেড়ে চলে যায়। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে হারুন অর রশীদ বলেন, পুলিশের উপর শিক্ষার্থীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেছে। এ ঘটনায় পুলিশ সদস্যরা আহত হয়েছে। প্রাথমিকভাবে আহতদের সংখ্যা সম্পর্কে কিছু জানা সম্ভব হয়নি। এ ঘটনা খতিয়ে দেখা হবে। ঘটনার সূত্রপাত কিভাবে হয়েছে—ঘটনা তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মামলার প্রয়োজনীয়তা উঠে আসলে মামলা দায়ের করা হবে। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আগুনের ঘটনায় কোনও ক্ষয়ক্ষতি যদি হয়ে থাকে আর ব্যবসায়ীরা যদি অভিযোগ দায়ের করে তাহলে অবশ্যই এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দেশকন্ঠ/অআ