দেশকন্ঠ প্রতিবেদন : বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের মধ্যেই খুশির খবর রাজ্যবাসীর জন্য। পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ সীমান্তের জিরো পয়েন্টে দু’দেশের নাগরিকদের সুবিধার জন্য চালু হতে চলেছে ৬টি সীমান্ত হাট। এমনটাই সূত্রের খবর। জানা গেছে, বাংলাদেশের সরকারের কাছ থেকে দীর্ঘদিনের প্রস্তাব ছিল মেঘালয় ও ত্রিপুরার সীমান্তের মতো পশ্চিমবঙ্গেও চালু হোক সীমান্ত হাট। এ নিয়ে মঙ্গলবার বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের প্রাক্কালে বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির সঙ্গে এক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আলোচনাও করেন। এরপরেই জানা গেলো সীমান্ত হাটের অনুমোদন মিলেছে। এই মুহূর্তে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে চারটি সীমান্ত হাট রয়েছে। মেঘালয় সীমান্তে কালীচরণ ও বালাটে দুটি এবং ত্রিপুরা সীমান্তে শ্রীনগর ও কমলাসাগরে দুটি হাট রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের প্রথম সীমান্ত হাটটি শুরু হতে চলেছে মালদা ও বাংলাদেশের রাজশাহী সীমান্তের জিরো পয়েন্টে। সূত্র মারফত আরও জানা গেছে, মালদা ছাড়াও আর ৫টি সীমান্ত হাট পশ্চিমবঙ্গে চালু করা হবে। এই সীমান্ত হাটগুলো চালু করার জন্য ইতোমধ্যে ভারত সরকারের তরফে ইন্দো-বাংলা সীমান্তে জিরো পয়েন্ট চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, উত্তর ২৪ পরগনা বসিরহাট সীমান্তের ঘোজাডাঙা ও বাংলাদেশের সাতক্ষীরা, বেনাপোল-পেট্রাপোল সীমান্তবর্তী এলাকা, নদীয়া গেদে-চুয়াডাঙার দর্শনা সীমান্ত ও উত্তরবঙ্গের হিলি সীমান্তের জিরো পয়েন্টকে চিহ্নিত করা হয়েছে সীমান্ত হাটের জন্য।
এই বিষয়ে নয়া দিল্লি ও ঢাকার মধ্যে প্রাথমিক পর্যায়ে আলোচনা হয়েছে। প্রথমে পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে মালদা সীমান্ত হাট তৈরি পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। আগামী ছয় মাসের মধ্যেই মালদার সীমান্ত হাট শুরু পরিকল্পনা রয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের। সূত্রের খবর, এ বিষয়ে রাজ্য সরকারের তরফে মিলেছে সবুজ সংকেত। বাজার তৈরির জন্য দুই দেশের জমিই অধিগ্রহণ করা হবে। জিরো পয়েন্ট লাগোয়া বাংলাদেশের ৭৫ মিটার জমি ও পশ্চিমবঙ্গের ৭৫ মিটার জমি অধিগ্রহণ করে যৌথভাবে তৈরি হবে সীমান্ত হাট। সীমান্ত হাটে পণ্য সম্ভার নিয়ে বিক্রি করতে পারেন দু’দেশের সীমান্তে থাকা গ্রামের বাসিন্দারা। ২০১০ সালের ২২ অক্টোবর ভারত ও বাংলাদেশ সরকার সীমান্তের দু’পারে বসবাসরত মানুষের বিকল্প অর্থনৈতিক ব্যবস্থা হিসেবে সীমান্ত হাট স্থাপন সংক্রান্ত সমঝোতাপত্র স্বাক্ষর করে। এরপর ৮ এপ্রিল ২০১৭ সালে সংশোধনীর মাধ্যমে পণ্যের তালিকা ও গ্রাহক পিছু খরচের মাত্রা বাড়ানো হয়। এটি সপ্তাহে এক দিন চালু থাকে। এই হাটে সীমান্ত এলাকায় উৎপাদিত কৃষকের কাঁচা সবজি ছাড়াও খাদ্য শস্য, মিষ্টি, মাছ, মাংস, ডিম যেমন বিক্রি হবে তেমনি প্লাস্টিকজাত সামগ্রী বিক্রি হবে। শুধ তাই নয়, জামা-কাপড়, শাড়িসহ একাধিক সামগ্রী বিক্রির সুপারিশ রয়েছে সরকারি তালিকায়। দুই দেশের সীমান্ত এলাকার পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে বসবাসকারী বাসিন্দারা এই বাজারে তাদের পণ্য সামগ্রী বিক্রি করতে পারবেন। ভারতীয় বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরণের হাট গড়ে তুলতে পারলে সীমান্তে অবৈধ চোরাচালান বন্ধ হয়ে যাবে। বিশেষত, গুরু পাচারে রাশ টেনে ধরা সম্ভব হবে।
দেশকন্ঠ/অআ