দেশকন্ঠ প্রতিবেদন : রাজধানীতে যানজট নিরসনে চেয়ারম্যানবাড়ি সংলগ্ন সেতু ভবন ও বিআরটিএ ভবন ভেঙে ফেলার অনুরোধ জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম। নাগরিকদের সুবিধার্থে কারওয়ান বাজারের বিজিএমইএ ভবন ভাঙা গেলে ওই দুটি ভবন কেন ভাঙা যাবে না, সে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। ১৪ মে গুলশানে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের নগর ভবনে ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে তিনি এ প্রশ্ন উত্থাপন করেন। মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার দুই বছর পূর্তি উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ডিএনসিসি। ডিএনসিসির মেয়র বলেন, ‘মহাখালীতে ঢাকা-ময়মনসিংহ রোডে সেতু ভবন ও বিআরটিএ ভবন গলার কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ ভবন দুটির কারণে সড়কটি পাশে চওড়া করা যাচ্ছে না। এ ভবন দুটির কারণে মহাখালী উড়াল সড়কে উঠতে যান চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে, দিনভর এ সড়কে যানজট লেগে থাকে। সেখানে ইউটার্ন নির্মাণ করেও সুফল মিলছে না। তাই, ভবন দুটি ভেঙে ফেলা জরুরি। রাজধানীর যানজট নিরসনে ডিএনসিসি ১১টি ইউলুপ নির্মাণ করার পরও তার সুফল মিলছে না কেন, এমন প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, ‘ইউলুপ নির্মাণের পরিকল্পনা বা প্রকল্পটি ডিএনসিসির প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের ছিল। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছি। কিন্তু সড়ক পর্যাপ্ত চওড়া না হওয়ায় বানানো ইউলুপগুলো তেমন কাজে আসেনি। বিশেষ করে, চেয়ারম্যান বাড়ি সংলগ্ন একটি ইউলুপ ও মহাখালী বাস টার্মিনাল এলাকার ইউলুপটির সুফল মেলেনি।’ মেয়র বলেন, ‘চেয়ারম্যানবাড়ি সংলগ্ন ইউলুপটি কাজে না আসার সবচেয়ে বড় কারণ সড়কের জায়গায় নির্মাণ করা হয়েছে সেতু ভবন ও বিআরটিএ ভবন। এখন এই দুটি ভবনের জন্য সড়কটি চওড়া করা যাচ্ছে না। ফলে, ইউলুপ করার পরও গাড়ি ঘুরতে পারছে না। মহাখালী উড়াল সড়কে গাড়ি উঠতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তাই, আমি সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ করবে দ্রুত সময়ের মধ্যে নিজ উদ্যোগ ভবন দুটি ভেঙে ফেলার জন্য।’
তিনি বলেন, ‘ঢাকার যানজট কমাতে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা আছে। স্বল্প মেয়াদি পরিকল্পনার মধ্যে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলো থেকে হকারদের সরিয়ে দিয়ে তাদের জন্য নির্দিষ্ট সময় ও নির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণ করে দেওয়া হবে। এতে কোনো মোড়েই গাড়ির জটলা লাগবে না। এছাড়া, ঢাকার প্রতিটি স্কুলে শিক্ষার্থীদের জন্য স্কুল বাস চালু করে ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্কুল বাসের ব্যবস্থা করবে, তাদের স্কুলের হোল্ডিং ট্যাক্স কমিয়ে দেওয়া হবে।’ দুই বছর আগে সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে নির্বাচনে যা যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তার কতটা বাস্তবায়ন হয়েছে? এ প্রশ্নের জবাবে আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমি যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, তা যথাযথ বাস্তবায়নের জন্য কাজ করছি। আমি মেয়র পদকে ক্ষমতা মনে করি না, এটা দায়িত্ব মনে করি। তিনি আরও বলেন, ‘মেয়র নির্বাচনের কিছু দিন পরেই দেশে করোনা মহামারি ছড়িয়ে পড়ে। পাঁচ মাস লকডাউনসহ নানা বিধিনিষেধ ছিল। কিন্তু, আমরা বসে থাকিনি। ৭৬ হাজার পরিবারে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিয়েছি। প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতায় মহাখালী কাঁচাবাজারকে ডিএনসিসি করোনা হাসপাতালে রূপ দিয়েছি। এটি এখন দেশের সবচেয়ে বড় করোনা হাসপাতাল। এখানে ২২০টি আইসিইউ শয্যা আছে।’ আজ থেকে ডিএনসিসির নতুন ১৮টি ওয়ার্ডে অবকাঠামো উন্নয়নে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কাজ শুরু করেছে, জানিয়ে মেয়র বলেন, ‘নগর পরিকল্পনাবিদদের নিয়ে ডিএনসিসির নতুন ১৮টি ওয়ার্ডের অবকাঠামো উন্নয়নে একটি মাস্টারপ্ল্যান নিয়েছে। সে প্ল্যান অনুযায়ী কাজ শুরু হয়েছে। সম্প্রতি এ কাজের জন্য ৪ হাজার কোটি টাকার একটি প্রকল্প প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দিয়েছেন।
দেশকন্ঠ/অআ