দেশকন্ঠ প্রতিবেদন : গ্রীষ্মের সবজি বলতে মূলত কুমড়ো, লাউ, উচ্ছে বা করলা, ঝিঙে, চিচিঙ্গা, পটল, ঢেঁড়শকে বোঝায়। এই শাকসবজি ফাল্গুন-চৈত্র মাস থেকে শুরু করে আশ্বিন মাস পর্যন্ত চাষ করা যায়। তবে আগাম চাষ করতে পারলে বাজারমূল্য বেশি পাওয়া যায়। এবার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ৬ জেলায় ৪৯ হাজার ৯৬৬ হেক্টর জমিতে গ্রীষ্মকালীন সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। জেলার সাতমাইলসহ বিভিন্ন মাঠজুড়ে গ্রীষ্মকালীন সবজির সমারোহে সবুজ হয়ে উঠেছে। বাজারে গ্রীষ্মকালীন সবজির দাম ভালো পাওয়ায় চাষির মুখে খুশির ঝিলিক মিলছে।
যশোর আঞ্চলিক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের এপ্রিল মাসের শুরু থেকে গ্রীষ্মকালীন সবজির আবাদ শুরু হয়েছে। চলতি মৌসুমে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ৬ জেলা-যশোর, ঝিনাইদহ,মাগুরা, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুরে ৪৯ হাজার ৯৬৬ হেক্টর জমিতে গ্রীষ্মকালীন সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে এবং উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১০লাখ ৪৮ হাজার ৫৩২ মেট্রিক টন। এর মধ্যে যশোর জেলায় গ্রীষ্মকালীন সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে। এ জেলায় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩লাখ ৩৯ হাজার ৭৫০ মেট্রিক টন। ঝিনাইদহ জেলায় সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে। এ জেলায় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১লাখ ৯৭ হাজার ৩৭০ মেট্রিক টন। মাগুরা জেলায় সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ হাজার ৫২৫ হেক্টর জমিতে। এ জেলায় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬৫ হাজার ২১৩ মেট্রিক টন। কুষ্টিয়া জেলায় সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে। এ জেলায় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১লাখ ৭৬ হাজার ৪০০ মেট্রিক টন।চুয়াডাঙ্গা জেলায় সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৮ হাজার ৬১১ হেক্টর জমিতে। এ জেলায় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১লাখ ৬৩ হাজার ৬০৯ মেট্রিক টন এবং মেহেরপুর জেলায় গ্রীষ্মকালীন সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ হাজার ১৮০ হেক্টর জমিতে। এ জেলায় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১লাখ ৬ হাজার ১৯০ মেট্রিক টন।
যশোর সদরের সাতমাইল এলাকার একাধিক সবজি চাষি জানান, বিঘা প্রতি জমিতে বিভিন্ন প্রকার সবজি চাষে তাদের খরচ হয় ২০ হাজার থেকে ২৫ হাজার টাকার মতো।একবিঘা জমিতে তারা কমপক্ষে ৫০ থেকে ৭০হাজার টাকার সবজি বিক্রি করে থাকেন।
বাজার সূত্রে জানা যায়,বর্তমানে খুচরা বাজারে এক কেজি বেগুন ৫০-৫৫টাকা, ধুন্দল প্রতিকেজি ২৫টাকা, ,লাল শাক ও সবুজ শাক প্রতিকেজি ৫০-৬০টাকা,বরবটি শিম প্রতিকেজি ৩৫-৪০টাকা,ঝিঙ্গে প্রতিকেজি ৩০টাকা,উচ্ছে প্রতিকেজি ৩০-৩৫টাকা,মিষ্টি কুমড়া প্রতিকেজি ২৫-৩০টাকা,ক্ষিরাই প্রতিকেজি ২৫-৩০টাকা, পটল প্রতিকেজি ৩০টাকা, কচু সাইজভেদে ২০-২০টাকা, ডাটা প্রতি আটি ২০টাকা এবং লাউ সাইজভেদে ৩০টাকা থেকে ৩৫টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
যশোর আঞ্চলিক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো: রফিকুল ইসলাম বাসসকে জানান,যশোরসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ৬ জেলা সবজি উৎপাদনের জন্য উর্বর ভূমি । এখানকার উৎপাদিত সবজির চাহিদা সর্বত্র রয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চলতি মৌসুমে গ্রীষ্মকালীন সবজির বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে তিনি জানান।
গ্রীষ্মকালীন সবজিতে আছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, আয়রন, জিঙ্ক, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, মিনারেল ও ভিটামিন এ, সিসহ নানান উপাদান। যা মৌসুমি রোগ প্রতিরোধসহ শরীর সুস্থ রাখতে বেশ কার্যকার।
দেশকন্ঠ/রাসু