দেশকন্ঠ প্রতিবেদন : মেট্রোরেলের নির্মাণকাজের জন্য রাজধানীর মিরপুর সড়কের বেহাল দশা। খানাখন্দ ভরা সড়কটিতে প্রতিনিয়ত সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। ভুক্তভোগীরা বলছেন, সড়কের খানাখন্দের কারণে প্রতিনিয়ত ঘটছে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা। রিকশায় উঠলে এবড়ো থেবড়ো রাস্তার কারণে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ। সকাল, দুপুর ও রাতে সবসময়ই সড়কটিতে সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। এছাড়া কয়েক মিনিটের পথ পার হতে মাঝে মাঝে সময় লাগছে এক থেকে দেড় ঘণ্টা। ২৪ মে দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত মিরপুরের বেগম রোকেয়া সরণীর ১২ নম্বর থেকে শেওড়াপাড়া ঘুরে এমন চিত্র চোখে পড়ে। সরেজমিনে দেখা যায়, সড়কের কাজীপাড়া বাসস্ট্যান্ড থেকে কৃষিবিদ ভবন পর্যন্ত পশ্চিম পাশের লেন বন্ধ। ফলে এক পাশ দিয়ে দুই দিকের যানবাহন চলাচল করায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া শেওড়াপাড়া মনিপুর স্কুল থেকে শুরু করে শামীম সরণী পর্যন্ত সড়কের পশ্চিম পাশ বন্ধ রয়েছে মেট্রো রেল ও সড়ক সংস্কারের কাজের জন্য। ফলে ওই অংশে এক পাশ দিয়ে উভয় দিকের যানবাহন আসা-যাওয়া করছে। একারণে এই পথের কোথাও গাড়ি একটু দাঁড়ালেই সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। একমুখী এই সড়কের অবস্থা বেহাল। খানাখন্দে ভরা সড়কের ওই অংশে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।
কাজীপাড়ার বাসিন্দা মো. ইব্রাহিম বলেন, এক বছরেরও বেশি সময় ধরে এখানকার সড়কের বেহাল দশা। বন্ধ সড়কে খানাখন্দ হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে গর্তসহ রাখা হয়েছে মেট্রোরেলের সংস্কার কাজের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ। ফলে এলাকার বাসিন্দারাসহ সড়কটি দিয়ে চলাচলকারীদের অসহনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। মেট্রোরেলের কাজ শেষ হচ্ছে না, আর আমাদের কষ্টও শেষ হচ্ছে না। অনেক প্রতিবেশী এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন। শেওড়াপাড়ার স্থায়ী বাসিন্দা শিশির আহমেদ বলেন, মেট্রোরেলের কাজের কারণে বিগত এক থেকে দেড় বছর যাবত আমরা অসহনীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছি। শেওড়াপাড়ার যে অংশে সড়ক বন্ধ রয়েছে এর বিপরীত পাশ দিয়ে দুই দিকের যানবাহন যাতায়াত করছে। আর যে পাশ দিয়ে যানবাহন যাতায়াত করছে সড়কের সেই অংশের অবস্থাও ভাল নয়। বিভিন্ন স্থান খানাখন্দে ভরা। প্রতিদিনই এই অংশে ঘটছে দুর্ঘটনা। বেশিরভাগ সময়ই মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনায় পড়ছে। এছাড়াও সড়কে খানাখন্দের কারণে রিকশার ঝাঁকিতে বয়স্ক ব্যক্তিরা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। সড়কের বেহাল দশার কারণে অসুস্থ রোগীদের এই পথ দিয়ে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া যাচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, মিরপুর সড়কের বেহাল দশা হওয়ায় অনেকেই পথ ব্যবহার করতে চায় না। এই পথে চলাচলে যাত্রীদের মাঝে সৃষ্টি হয়েছে অনীহা। এলাকার অনেক বাসিন্দা বাড়িঘর ছেড়ে অন্য এলাকায় চলে যাচ্ছেন। বিশেষ করে শেওড়াপাড়া এলাকার বাড়িওয়ালারা ভাড়াটিয়া সংকটে পড়ছেন। এলাকার অনেক বাসা এখন খালি থাকছে। তিনি বলেন, মেট্রোরেলের কাজ শেষ হয়েও হচ্ছে না। দিনকে দিন বেড়েই চলেছে দুর্ভোগ। বর্ষাকাল আসলেই এই সড়কে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা আর যানজট। বিকল্প পরিবহনের বাসচালক মো. বাপ্পি বলেন, এ সড়কের বেহাল দশার কারণে আমরা আগে যেখানে মিরপুর থেকে মতিঝিল দিনে ৫ থেকে ৬বার আসা যাওয়া করতাম, এখন ৩ থেকে ৪ বারের বেশি সম্ভব হয় না। জ্যামের কথা আর কি বলব? সকাল, দুপুর ও রাত- সবসময় জ্যাম লেগেই থাকছে।
দেশকন্ঠ/অআ