দেশকন্ঠ প্রতিবেদন : আগামী ১০০ বছরের জন্য মেট্রোরেল করা হচ্ছে। এর সুফল পেতে হলে সংশ্লিষ্ট বিভাগের সমন্বয়ের বিকল্প নেই। মেট্রোরেল চালু হলে এর নিচের রাস্তা, ড্রেন, শাখা রোড, রাস্তার লাইট, পরিবেশ এগুলো সবই কিন্তু সঠিকভাবে ব্যবস্থাপনা করতে হবে। ফুটপাতটা যথেষ্ট প্রশস্ত হতে হবে। তা না হলে সেখানে যাত্রীরা ব্যাগ বা জিনিসপত্র নিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে চলাচল করতে পারবে না। ল্যান্ডিং স্টেশনে পাবলিক স্পেসটা খুব জরুরি। এগুলো নিশ্চিত করতে হবে। ১৫ জুন রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এমআরটি লাইন-৬ এর অগ্রগতি ও সম্ভাবনা সংক্রান্ত সেমিনার এবং এমআরটি লাইন-১ এর নিকট লাইসেন্স হস্তান্তর অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম এসব কথা বলেন।
মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কল্যাণে আগামী ২৫ জুন স্বপ্নের পদ্মা সেতু চালু হবে। ১৮০ দিন পরেই চালু হবে মেট্রোরেল। মেট্রোরেল চালু হলে ঢাকার যোগাযোগ ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে। আমাদের মনে রাখতে হবে, মেট্রোরেলকেন্দ্রিক যে জীবন ব্যবস্থা গড়ে উঠবে তার সঙ্গে খাপ খাইয়ে আমাদের পরিকল্পনা করতে হবে। স্টেশনকেন্দ্রিক যে অর্থনৈতিক বলয় গড়ে উঠবে তার সঠিক পরিকল্পনা করে সেখানে জনসাধারণের কাজে লাগাতে হবে। ডিএনসিসি মেট্রোরেলের সর্বোচ্চ সুফল পেতে পদক্ষেপ নিচ্ছে জানিয়ে মেয়র বলেন, মিরপুর ১২ থেকে ফার্মগেট হয়ে বাংলামোটর পর্যন্ত এমআরটি ৬ এর নিচ দিয়ে সাড়ে ১০ কিলোমিটার রাস্তায় বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ডিএনসিসি প্রকল্প গ্রহণ করতে যাচ্ছে। ২০২৩ থেকে ২০২৬ সালে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। আইসিএম প্রকল্পে রয়েছে: গণপরিবহন অবকাঠামো নির্মাণ, ফুটপাত নির্মাণ, ট্র্যাফিক ব্যবস্থাপনা ও নিরাপত্তা, রোকেয়া সরণিতে বাসের অগ্রাধিকার সুবিধা, বাস-বে, যাত্রী ছাউনি, আধুনিক টিকেট কাউন্টার, এমআরটির সাথে সংযোগ সড়কের উন্নয়ন, ইলেকট্রিক বাস চালু, সাইকেল লেইন, ট্র্যাফিক ব্যবস্থাপনা, ডিজিটাল ট্র্যাফিক সিগনাল, সেন্ট্রাল ট্র্যাফিক কন্ট্রোল সেন্টার, পার্কিং সুবিধা এবং জনগণকে রোড ব্যবহারে শিক্ষা প্রদান কার্যক্রম।
ডিএনসিসি মেয়র আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ঢাকা শহরে বিপুল সংখ্যক মানুষ চলে আসছে। যত বেশি কানেকশন আমরা করতে পারবো ততই কিন্তু মানুষ ঢাকা শহরে কাজ সেরে আবার নিজেদের বাড়িতে চলে যাবে। ঢাকায় নৌযান চলাচলে গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, আমাদের প্রাকৃতিক সমাধান করতে হবে। ঢাকার চারপাশে নদী আছে, শহরের ভেতরে আছে খাল। এগুলোর মাধ্যমে নৌযান চলাচলের ব্যবস্থা করলে যানজট নিরসন হবে। এমআরটি লাইন-১ বাস্তবায়ন সম্পর্কে ডিএনসিসি মেয়র বলেন, এমআরটি লাইন-৬ এর অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে এমআরটি লাইন-১ নির্মাণের পূর্বে যে বিষয়সমূহ বিবেচনায় রাখা জরুরি সেগুলো হলো- ফুটপাতে পথচারীদের অবাধ চলাচল নিশ্চিত কল্পে ফুটপাতের উপরে কোনও অবস্থাতেই এমআরটি লাইনের ল্যান্ডিং নির্মাণ করা যাবে না। মেট্রোরেল লাইন নির্মাণ কাজ চলাকালে যানবাহনের স্বাভাবিক চলাচল নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিকল্প রাস্তা নির্মাণ করতে হবে এবং ফুটপাতের প্রয়োজনীয় রক্ষণাবেক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে। মেট্রোরেল লাইন নির্মাণ কার্যক্রম শুরু করার পূর্বেই উক্ত এলাকার পানি নিষ্কাশনের বিকল্প ব্যবস্থা চালু করতে হবে। ইন্টিগ্রেটেড করিডোর ব্যবস্থাপনার সংস্থান রাখতে হবে। সকল শাখা সেকেন্ডারি ও টারসিয়ারি সড়ক হতে এমআরটি স্টেশনের একটি কার্যকরী সংযোগ নিশ্চিত করতে হবে। আলোচ্য প্রকল্পের সাথে শুরুতেই Transit Oriented Development (TOD) এর সংস্থান রাখতে হবে। এমআরটি প্রকল্পের নির্মাণ কাজ চলাকালে সড়কে চলাচলকারী যানবাহন ও পথচারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে; জনসাধারণের স্বাভাবিক চলাচল নিশ্চিত করার নিমিত্তে প্রকল্পের নির্মাণ কাজ চলাকালে সড়ক বাতিগুলো অবশ্যই সচল রাখার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস এবং সংসদ সদস্য রওশন আরা মান্নান।
দেশকন্ঠ/অআ