দেশকন্ঠ প্রতিবেদন : তিনদিন ধরে উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিপাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার নাসিরনগর সদর, বুড়িশ্বর, ভলাকূট, কুন্ডা, গোয়ালনগর, গোকর্ণ ও পূর্বভাগ, চাপরতলাসহ কয়েকটি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের অন্তত দেড় হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এতে করে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছে পরিবারগুলো। বাড়ির উঠান ও চারপাশে পানি উঠার কারণে রান্নার চুলা ও টয়লেট এবং টিউবওয়েলগুলো পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে করে বিশুদ্ধ খাবার পানি ও নিরাপদ খাদ্যের সংকটে পড়েছে পরিবারগুলো। গ্রামের বিভিন্ন সড়কও তলিয়ে গেছে ঢলের পানিতে। এছাড়া বিদ্যালয়ের আঙিনায় পানি উঠার ফলে ২৫টি বিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যক্রম সাময়িক স্থগিত করা হয়েছে। ২১ জুন দুপুরে সরেজমিন ভলাকূট ইউনিয়নের ভলাকূট গ্রামের পশ্চিম পাড়ায় গিয়ে দেখা গেছে, অর্ধশত পরিবার পানিবন্দি হয়ে আছে। বাড়ির ভেতরে পানি না ঢুকলেও বাড়ির উঠানে পানি উঠেছে। নিম্নাঞ্চলের বাড়িগুলোর রান্না-ঘর ও টিউবওয়েল এবং টয়লেট তলিয়ে গেছে।
মারফত আলী নামে এক ব্যক্তি জানান, তার বাড়ির চারপাশে পানি জমেছে। ঘর থেকে বেরও হতে পারছেন না। পরিবার নিয়ে তিনদিন ধরে বন্দিদশায় আছেন বাড়িতে। কেউ কোনো সহায়তা নিয়ে আসেনি তার বাড়িতে। ঘরে যা খাবার আছে, তাও পর্যাপ্ত নয়। আরেক পানিবন্দি সায়েরা বেগম জানান, বাড়ি থেকে যেদিকেই চোখ যায়, সেদিকেই শুধু পানি। হাট-বাজারের জন্যও ঘর থেকে বের হওয়া যাচ্ছে না। চুলায় আগুন জ্বলছে না। টিউবওয়েল পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় দূর থেকে পানি এনে খেতে হচ্ছে। এদিকে, উপজেলার বুড়িশ্বর ইউনিয়নের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরগুলোতেও পানি উঠেছে। ফলে তাদেরকে আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া পানি উঠার কারণে উপজেলার ২৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। নাসিরনগর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা মোনাব্বর হোসেন বলেন, প্রায় দেড় হাজার পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। তাদের জন্য ৩৩ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ পেয়েছি। দ্রুত এগুলো দুর্গতদের কাছে সরবরাহ করা হবে। এছাড়া দুর্গতদের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণের জন্য ৪ লাখ ৬৮ হাজার ২৫০ টাকা বরাদ্দ পেয়েছি। আমরা নিয়মিত তাদের খোঁজ-খবর নিচ্ছি। মনিটরিং টিম গঠন এবং কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। এছাড়া পানি উঠার কারণে উপজেলার ২৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম সাময়িক স্থগিত করা হয়েছে।
দেশকন্ঠ/অআ