দেশকন্ঠ প্রতিবেদন : আমের স্বল্পতা এবং লোকসানের কারণে চালুর ১১ দিনের মাথায় বন্ধ হয়ে গেল জেলার একমাত্র ফল ও সবজি বহনকারী ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেন। যদিও কর্তৃপক্ষ লোকসানের কারণে ট্রেনটি বন্ধ হয়নি বলে দাবি করেছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর রেল স্টেশন থেকে চলতি বছরের ১৩ জুন ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন উদ্বোধন করা হয় এবং ২৩ জুন সর্বশেষ ট্রেনটি ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে গেছে। ২৪ জুন রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করে রহনপুর রেলওয়ে স্টেশনের সহকারী স্টেশন মাস্টার আল মামুন বলেন, শুক্রবার থেকে ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেনে আর আম পরিবহন করা হবে না। সর্বশেষ ২৩ জুন এই স্টেশন থেকে ট্রেনটিতে ৩ হাজার ১৮৫ কেজি আম পরিবহন করা হয়। তিনি আরও বলেন, রহনপুর রেল স্টেশন থেকে মোট ২৯ হাজার ৫৪৩ কেজি আম পরিবহন করা হয়েছে। এখান থেকে রাজস্ব আয় হয়েছে ৩৮ হাজার ৯৬১ টাকা। চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেল স্টেশন সূত্রে জানা যায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেল স্টেশন থেকে চলতি বছর ৪৫ হাজার ৬২৪ কেজি আম পরিবহন করেছে ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন। এখান থেকে আয় হয়েছে ৬১ হাজার ৪৬৯ টাকা। চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেল স্টেনের সহকারী স্টেশন মাস্টার ওবাইদুল্লাহ বলেন, ‘তৃতীয়বারের মতো গত ১৩ জুন ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেনের যাত্রা শুরু হয়। সর্বশেষ ২৩ জুন এই ট্রেনটি আম পরিবহন করে। ২৪ জুন থেকে এ ট্রেনটি আর চলবে না বলে আমাদের জানানো হয়েছে।
এদিকে রেলওয়ের একাধিক সূত্র জানায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর থেকে রাজশাহী হয়ে প্রথম দিনে ৩৩ হাজার কেজি আম পরিবহন করেছে ট্রেনটি। এ থেকে আয় হয়েছে মাত্র ৩৮ হাজার টাকা। কিন্তু ট্রেনটির একদিনের খরচ ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। ফলে লোকসান হয়েছে ৮২ হাজার টাকা। করোনায় আমের সরবরাহ কম থাকায় গত বছরও প্রায় তিনগুণ লোকসান গুনতে হয়েছিলে ট্রেনটিকে। ফলে এক সপ্তাহ পরে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল ট্রেনটি। আর এ বছর আমের সিজনের মধ্যভাগে ট্রেনটি চালু হওয়ায় এবারও চালুর মাত্র ১১ দিনের মাথায় বন্ধ করে দেওয়া হলো ট্রেনটি। একটি সূত্র জানায়, এ বছর এমনিতেই আমের সঙ্কট। তার ওপর দেরিতে ট্রেনটি চালু হওয়ায় ব্যাপক লোকসানের কারণে বন্ধ হয়ে গেছে আম পরিবহন সেবাটি। চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বার অ্যান্ড কর্মাস এর পরিচালক মো. শহিদুল ইসলাম জানান, এ বিশেষ ট্রেনে আম ছাড়াও লিচু, মৌসুমী ফল, ডিমসহ সব ধরনের কৃষিপণ্যও কম খরচে ঢাকায় নেওয়া যায়। এ পরিবহনে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ঢাকায় আম নিতে খরচ পড়ে ১ দশমিক ৩১ টাকা। কুরিয়ার সার্ভিসে একটন আম ঢাকায় নিতে খরচ পড়ে ২০ হাজার টাকা। আর ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেনে খরচ পড়ে মাত্র এক হাজার ১১৭ টাকা। এরপরও ট্রেনটি জনপ্রিয় হতে না পারাটা দুঃখজনক। তিনি ট্রেনটিকে জনপ্রিয় করে তুলতে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করার পাশাপাশি চাষিদের আরও এগিয়ে আসার অনুরোধ জানান। এ ব্যাপারে রাজশাহী রেলওয়ের কর্মকর্তা (পশ্চিম) শহিদুল ইসলাম বলেন, আম স্বল্পতার জন্য ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেনটি বন্ধ হয়ে গেছে। এ ট্রেনে লোকসানের বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, যেহেতু এটি একটি সেবামূলক সার্ভিস তাই লোকসানটা মূখ্য বিষয় নয়। মূলত আমের স্বল্পতায় এর প্রধান কারণ।
দেশকন্ঠ/অআ