• রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
    ৬ আশ্বিন ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ১৫:২৪
মেজর শাহাবউদ্দিন চাকলাদার [অব.]

আমার দেখা হকির ১৮ বছর : পঞ্চম পর্ব

খেলা মানেই অনিশ্চিত ফলা ফল। আমাদের এই অনিশ্চয়তা খুব সীমাবদ্ধতার গণ্ডির মাঝে আবদ্ধ। দেশের শ্রেষ্ঠ তিনটি খেলা আমার সময় ছিল ফুটবল, হকি এবং তারপর ক্রিকেট। আমার সময় বলতে ১৯৬৮ থেকে ১৯৯০ সাল। এখন পাশা উল্টেছে। আজ ক্রিকেট, ফুটবল এবং তার বহুপরে হকির অবস্থান। এই ধূসর হয়ে যাওয়া হকির এক সময়ের অন্যতম একজন ছিলাম আমি। আমার হকি আত্মজীবনী ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হচ্ছে অনলাইল পোটাল দেশকণ্ঠে। 

১৬ জুলাই ২০২২ প্রকাশ হলো মেজর শাহাবউদ্দিন চাকলাদারের [অব.] ধারাবাহিক লেখার পঞ্চম পর্ব। 


জিম করবেট তার ‘ম্যান ইটারস অব কুমায়ূন’- বইটিতে শিরারি হিসাবে নিজের মান্যতা বজায় রেখেছেন। তার পশু শিকারের প্রতিটি আগ্নেয়াস্ত্র অত্যাধুনিক আর আর্জান সর্দার গ্রাম গঞ্জের হাতে তৈরি বন্দুক দিয়ে বিশ্ব ত্রাস রয়েল বেংগল টাইগার মেরেছেন। মনে রাখতে হবে প্রচারেই পরিচিতি। আর্জান সর্দার প্রচারে কখনই না থাকাতে প্রতিদ্বন্দ্বী হতে পারেন নাই। হয় না। তবে আব্বা সবাইকে নিয়েই স্বন্ধ্যে বেলাতে বসতেন, বাসাতে শিপু ফুপু প্রতি সন্ধ্যা বিভিন্ন ধরনের নাস্তা দিয়ে সাজিয়ে দিতেন। কত গল্পই হতো। আব্বা বলতেন মজতবা আলি তার লেখাতে খাওয়ার ব্যাপারে বিশেষভাবে উল্লেখ করতেন। এতে পাঠক নিজের খাদ্যাভাসের সাথে লেখকের রুচির মিল খোঁজার সুযোগ পেত। শিপু ফুপু একদিন নাস্তার সময় বড় পটলের ভিতর চিংড়ি ভূনা ভড়ে দিয়ে টেবিলে দিলে আব্বা খুব প্রশংসা করেছিলেন। আব্বা যখন শ্রীনগরের সাব রেজিস্টার তখন আমরা ছোট হলেও অনেক স্মৃতি জাগানিয়া ঘটনা চোখ বুজলেই দেখতে পাই।

 
বাসাটা‘র সামনে একটা পুকুর তার পাশাপাশি আরো দুটো পুকুর। মধ্যের পুকুর অনেকটাই লম্বা একেবারে বড় রাস্তা পর্যন্ত। আমাদের বাসার সামনেই বড় একটা ষাঁড় চলে ফিরে বেড়াত। বড় নিরিহ। আমরা এটার পিঠে বসতাম। রং ছিল হাল্কা সাদা। এটাকে স্থানীয়রা খোদাই ষাঁড় বলে। কেউ মানত করে ছেড়ে দিয়েছে। একদিন বড় রাস্তায় লাল রঙয়ের আর একটি ষাঁড় আসল। আমাদের ষাঁড়টা তেড়ে গিয়ে প্রায় আধ ঘণ্টা শিংয়ে শিংয়ে লড়াই পর আগুন্তক ষাঁড়টা রনে ভংগ দিয়ে পালালো। যুদ্ধের পর এর কাছে গিয়ে দেখি সামনের পায় আর গলার কাছে বেশ চিড়ে গেছে। তবে ও জিতেছে এটা আমাদের খুব খুশি করেছিল।
 
বাসার সামনে যে পুকুর তারপরই ফুটবল মাঠ। প্রতিদিন বিকেলে ফুটবল খেলা হতো, ছোট হলেও বাবার হাত ধরে মাঠে যেতাম। একদিন মাঠে যেতে দেখি বেশ বড় একটা সাপ রাস্তা পার হচ্ছে। আব্বার সাথে আরো ২/৩ জন তার একজন একটা বড় ঢিল নিয়ে সাপটাকে মারতেই ঢিলটা সাপটার কোমড়কে কাছে লাগল, কোমড় ভেংগে যাওয়াতে সাপ ঐ একই যায়গায় ফনা তুলে এ পাশ ও পাশ দুলতে লাগল। আস্তে আস্তে আব্বার পাশে দশ/বারো জন জমা হয়েছিল। আব্বা এরপর একটা লাঠি দিয়ে সাপটাকে মেরে তারপর মাঠে খেলতে গেলেন। তবে একবার বাবা মাকে সাপের কামড় থেকে বাঁচাতে সাপকে গুলি করেছিল। এটা করে ছিল শ্রীনগরে পোস্টিংয়ের আগে চিলমারিতে।
 
চিলমারি, ভরতখালি, ডোমার শুরুতে আব্বার পোস্টিং হয়। আব্বা ছিলেন ডক্টর মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ খুব প্রিয় ছাত্র। মোহাম্মদ শহীদউল্লাহ যেমন জ্ঞানী ছিলেন তেমনি ইসলাম নিয়ে ছিল অগাধ পাণ্ডিত্ব। তিনি চমৎকার ওয়াজ করতেন। বাবা বহুবার ডা. শহীদউল্লাহকে তার পোস্টিং এলাকাতে দাওয়াত দিয়ে ওয়াজের জন্য নিয়ে এসেছেন। ডা. শহীদউল্লাহর ছেলে সফিউল্লাহ ছিলেন বাবার ঘনিষ্ঠ বন্ধুও। একবার ডোমারে ডা. শহীদউল্লাহ ওয়াজ করতে এসেছেন, থাকবেন আমাদের বাসাতেই, সংগের আর সবাই ডাক বাংলোয়ে। বাবা একটা হাতী এনেছেন তাতে ডা. শহীদউল্লাহ যাবেন। সবাই উঠেছেন হাতীর পিঠে, হাতী প্রায় দাঁড়িয়েছে এমন সময় স্কুলের হেড মাস্টার হাতীর লেজ ধরে উঠতে বেশ কবার চেষ্টা করতে করতে হাতী পা তে ঝাড়া দিতেই ৭/৮ হাত দূরে গিয়ে পড়লেন এবং ব্যথা পেলেন। 
 
আব্বা ছিলেন সলিমুল্লা হলের আবাসিক ছাত্র। প্রভোস্ট ছিলেন ডক্টর হাসান। তিনি  বাবার খেলাকে প্রশংসা করতেন। ঐ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দলের সাথে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় দল প্রীতি ফুটবল খেলতে ঢাকা এসেছিল। সিদ্ধার্থ শংকর রায় ঐ দলের সদস্য ছিলেন। তিনি পরে কোলকাতার জনপ্রিয় মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন।
 
যদিও বিভিন্ন ধর্ম সবসময় পরস্পর সম্মান নিয়েই পাশাপাশি চলেছে। তবে আব্বা যখন বিশ্ব বিদ্যালয়ের শেষ ধাপে তখন রায়ট হয়েছিল। দুই ধর্ম পরস্পরের প্রতি চূড়ান্ত আগ্রাসি হয়েই হত্যা প্রচেষ্টা শুরু হয়, পেশোয়ার থেকে মিনা পেশোয়ারি এবং তার দল এ রায়টে অংশ নিয়েছিল, এ যোগদানে হোসেন শহীদ সরোয়ার্দির প্রচ্ছন্ন ইংগিত ছিল বলে ধারণা করা হয়। আব্বা সবসময়ই খেলাকে প্রাধান্য দিতেন, এই রায়ট চলাকালীন সময়েও তিনি ওয়ারী ক্লাবের জার্সি পরে অনুশীলনে যেতেন, খেলোয়াড়দের প্রতি উগ্রপন্থিরাও আগ্রাসি না থাকাতে বাবার অনুশীলন চলত। তবে যখন রায়ট চরম আকার নেওয়ার পর অন্যদের অনুরোধে অনুশীলন বন্ধ করেছিলেন। ...চলবে
দেশকন্ঠ/আসো
 

  মন্তব্য করুন
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।