দেশকণ্ঠ প্রতিবেদন : ২৩ জুলাই; সকাল সাড়ে ৯টায় বাস ছেড়েছিল প্রেস ক্লাব থেকে। উদ্দেশ্য গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়াস্থ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন এবং পদ্মা সেতু পরিভ্রমণ। হয়েছে দুটোই। সঙ্গে হিরণ্যকান্দির শতবর্ষী আম গাছ দর্শণে খুঁজে নিয়েছি বাড়তি প্রণোদনা। আয়োজক মুন্সীগঞ্জ-বিক্রমপুর সাংবাদিক ফোরাম, ঢাকার কার্যনির্বাহী কমিটি। স্বপ্নের পদ্মা সেতু হয়ে শীততপ নিয়ন্ত্রিত সেন্টমার্টিন মাত্র দেড়ঘণ্টায় পৌঁছেছিল গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীর সাম্পান রেস্টুরেন্টে। যেখানে আগে-ভাগেই মধ্যাহ্ন ভোজের আয়োজন করা হয়েছিল।
তখন সাড়ে এগারটা মাত্র। ঠিক এ সময়ে শাহ আলম খুঁজে পেলো শতবর্ষী আমগাছ খবর। গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীর হিরণ্যকান্দি গ্রামে সেই ঐতিহ্যের আম দেখতে ছুটলাম আমরা। শতবর্ষী আম গাছ দর্শণ থেকে বাদ পড়েন নি আমাদের সঙ্গে যাওয়া সাংবাদিক সমাজের চার অভিভাবকও। সেখানে পাক্কা দেড় ঘণ্টা কাটিয়ে দিলাম। তারপর দুপুরে খাবার শেষ করে আমরা ছুটলাম জাতির পিতার সমাধি সৌধে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করতে। সন্ধ্যায় জাতির পিতার জন্মভূমি গোপালঞ্জ প্রেস ক্লাবের নেতৃবৃন্দের আহ্বানে আমরা সবাই যোগ দিলাম প্রাণবন্ত মত বিনিময় সভায়। সভায় শেষ হতে হতে প্রায় সাতটা।
এবার ঢাকায় ফেরার পালা। গাড়ি ছুটল কখনো ১০০; কখনো ১১০ কিলোমিটার গতির। ড্রাইভার তালেবের নিপুন দক্ষতায় শো শো শব্দে ছুটল সেন্টমার্টিন। রাতের পদ্মা সেতুও উপভোগ করলাম সবাই। রাত পৌনে দশটায় ঢাকার মুখে আটকে গেল বাস। যথারীতি যানযট। অতঃপর ফিরে আসা। এমন এক সফরের কথা মনে থাকবে সবারই। বিশেষ করে মনে থাকবে শতবর্ষী আমতলায় আচারের দোকানী মঞ্জু বেগমের সহজিয়া কিন্তু কথার কথা বলার ইস্পাত দৃঢ় কথা। মঞ্জু বেগম সরাসরি জানিয়েছেন, ‘পদ্মা সেতু আমার কপাল খুইলে দিছে। আপনেরা সরকারী চাকরি করে কত টাকা কামান। মাসে এখন আমার ইনকাম আপনাদের চাইতেও বেশি। আমি আপনাদের মত শিক্ষিত না এটা ঠিক, তবে মূর্খ না।‘
দিন ব্যাপী এই সফরে উপস্থিত ছিলেন মুন্সীগঞ্জ-বিক্রমপুর সাংবাদিক ফোরাম, ঢাকার প্রধান উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন সভাপতি ওমর ফারুক, প্রধানমন্ত্রী সাবেক প্রেস সচিব, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও যুগান্তর সম্পাদক সাইফুল আলম, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের নির্বাহী সদস্য নূরে জান্নাত সীমা, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি বহুমুখী সমবায় সমিতির সভাপতি এবং মুন্সীগঞ্জ-বিক্রমপুর সাংবাদিক ফোরামের কার্যনির্বাহী সদস্য এস এম আবুল হোসেন, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও মুন্সীগঞ্জ-বিক্রমপুর সাংবাদিক ফোরামের কার্যনির্বাহী সদস্য রাজু আহমেদ, মুন্সীগঞ্জ-বিক্রমপুর সাংবাদিক ফোরাম সভাপতি আরিফ সোহেল, সাধারণ সম্পাদক সাহাদাৎ রানা, সিনিয়র সহ-সভাপতি রাশেদ আহমেদ, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হাসান আরিফ ও শাহ আলম খান, কোষাধ্যক্ষ শাহজাহান স্বপন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক লাভলি হক লাবণ্য, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক ইমরান-উজ-জামান, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য নাছির উদ্দিন আহমেদ জুয়েল এবং রুমেল খান।
শেষ কথা —‘ছবি কথা বলে’। ঘটেছেও তাই। নানা জনের মোবাইল ক্যামেরা ছবির জন্য হাত ঘুরেছে বারবার হীরার কাছেই। পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে জাতির পিতার সমাধি সৌধে পরিভ্রমণের স্মৃতিময় এই সফরের অসাধারণ কিছু ছবি ফ্রেমবন্দি করেছেন গাজী টিভির সিনিয়র নিউজ প্রোডিউসার শামসুদ্দিন হীরা। আসলেই ‘হীরা’ সফল আয়োজনের বর্ণময় জ্যোতি ছড়িয়েছে বহুগুণ ক্যামেরার কারুকাজে।
দেশকণ্ঠ/আসো