• রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
    ৬ আশ্বিন ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ১৫:২৭

বাংলাদেশে করোনায় মৃত্যুশূন্য দিন পাঁচ শতাংশের নিচে নেমেছে শনাক্তের হার

দেশকন্ঠ ডেস্ক : বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় কোন মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। তবে এসময়ে নতুন ১৪৪ জনের শরীরে এই ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত করোনায় মৃত্যু-সংখ্যা ২৯ হাজার ৩১২ জন এবং শনাক্ত ব্যক্তির সংখ্যা ২০ লাখ ৮ হাজার ৬৪৪ জনে পৌঁছেছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর শনিবার (১৩ আগস্ট) করোনা বিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় তিন হাজার ৩৫৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ সময় শনাক্ত-হার ছিল ৪ দশমিক ২৯ শতাংশ। মোট পরীক্ষায় শনাক্ত-হার ১৩ দশমিক ৬৯ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যু-হার এক দশমিক ৪৬ শতাংশ।
 
এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন আরও ৪৫৬ জন। এ নিয়ে দেশে মোট সুস্থ ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯ লাখ ৫০ হাজার ৮৪৩ জনে। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯৭ দশমিক ১২ শতাংশ। বাংলাদেশ সরকারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০২০ ও ২০২১ সালে করোনাভাইরাস মহামারিতে বাংলাদেশে ২৯ হাজারের কম মানুষ মারা গেছে। তবে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমান- দেশে করোনায় প্রকৃত মৃতের সংখ্যা এক লাখ ৪১ হাজার; যা সরকারি গণনার চেয়ে প্রায় ৫গুণ বেশি।
 
ডব্লিউএইচও’র অনুমান অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি এবং ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর এর মধ্যে করোনা মহামারির সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সম্পৃক্ত মৃত্যুর সংখ্যা ছিল প্রায় ১ কোটি ৪৯ লাখ (পরিসীমা ১ কোটি ৩৩ লাখ থেকে ১ কোটি ৬৬ লাখ)। যা বর্তমান সরকারি পরিসংখ্যানের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি। গত বছরের শেষ পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী মাত্র ৫৪ লাখ মৃত্যুর কথা জানা যায়।
 
এই সংখ্যার মধ্যে সরাসরি করোনভাইরাসজনিত কারণে বা স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় মহামারির প্রভাবের জন্য দায়ী কারণগুলোর প্রভাবজনিত মৃত্যুও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। যেমন- হাসপাতালগুলো করোনা রোগীতে পূর্ণ থাকায় চিকিত্সা নিতে না পারায় অনেক ক্যান্সারের রোগী চিকিৎসা নিতে পারেনি।
 
তবে, লকডাউন এবং বাড়ি থেকে কাজ করার ফলে মোটর-যান দুর্ঘটনা বা পেশাগত আঘাতের মতো নির্দিষ্ট কিছু দুর্ঘটনার ঝুঁকি কম থাকার কারণে, মহামারি চলাকালীন মৃত্যুর আনুমানিক সংখ্যা প্রভাবিত হতে পারে। ডব্লিউএইচও’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেশিরভাগ মৃত্যু দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, ইউরোপ এবং আমেরিকায় ঘটেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতে করোনায় ৪৭ লাখ মৃত্যু হয়েছে। যা দেশটির সরকারি পরিসংখ্যানের ১০ গুণ এবং বিশ্বব্যাপী করোনায় মৃত্যুর প্রায় এক তৃতীয়াংশ।
 
নিউ ইয়র্ক টাইমস, এপ্রিলের মাঝামাঝি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল যে, ভারত সরকারের আপত্তির কারণে ডব্লিউএইচওর প্রতিবেদন প্রকাশে বিলম্ব হচ্ছে। তা না হলে এটি এপ্রিলের শুরুতে প্রকাশ পাওয়ার কথা ছিল। ভারত সরকার বলেছে, ডব্লিউএইচও’র নেয়া পদ্ধতিটি সম্পর্কে তাদের ‘উদ্বেগ’ রয়েছে। তবে, অন্যান্য গবেষণায় বিশ্বে করোনায় মৃত্যুর অনুমান ডব্লিউএইচও’র থেকেও বেশি।
 
এই বিষয়ে গবেষণার মধ্যে, ল্যানসেটে প্রকাশিত গবেষণা সম্ভবত সবচেয়ে প্রভাবশালী। এতে বলা হয়, ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর এর মধ্যে বিশ্বব্যাপী ১ কোটি ৮২ লাখ অতিরিক্ত মৃত্যু হয়েছে। প্রভাবশালী ইনস্টিটিউট অফ হেলথ মেট্রিক্স অ্যান্ড ইভালুয়েশন (আইএমএইচই) এর একটি দলের পরিচালিত সমীক্ষা বলছে, করোনায় বাংলাদেশে মৃত্যুর সংখ্যা চার লাখ ১৩ হাজার, যা সরকারি পরিসংখ্যান থেকে ১৫ গুণ বেশি। সে সময়, একজন বাংলাদেশের একজন সরকারি কর্মকর্তা এটিকে ‘অনুমানমূলক’ বলে উড়িয়ে দিয়েছিলেন।
 
ডব্লিউএইচও-এর অনুমানে ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ২৪ মাসের মধ্যে বয়স ও লিঙ্গের ভিত্তিতে অতিরিক্ত মৃত্যুহার অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তারা নিশ্চিত করে যে, বিশ্বব্যাপী, নারীদের তুলনায় পুরুষদের মৃত্যের সংখ্যা বেশি ছিল (পুরুষ ৫৭ শতাংশ ও নারী ৪৩ শতাংশ ) এবং প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে এ হার বেশি ছিল। ডব্লুএইচও’র ডেটা, অ্যানালিটিক্স এবং ডেলিভারির সহকারি মহাপরিচালক ডা. সামিরা আসমা বলেছেন, “অতিরিক্ত মৃত্যুর পরিমাপ মহামারির প্রভাব বোঝার জন্য একটি অপরিহার্য উপাদান। মৃত্যুর প্রবণতার পরিবর্তন, সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীদের মৃত্যুহার কমাতে এবং কার্যকরভাবে ভবিষ্যতের সঙ্কট রোধে নীতি নির্দেশক তথ্য প্রদান করে। অনেক দেশে ডেটা সিস্টেমে সীমিত বিনিয়োগের কারণে, অতিরিক্ত মৃত্যুর প্রকৃত মাত্রা প্রায়ই লুকিয়ে থাকে।”
 
ডব্লিউএইচও’র করা পরিসংখ্যানের পদ্ধতিগুলো সংস্থাটির ‘টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজরি গ্রুপ ফর কোভিড-১৯’- এর মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। এটির সহ-সভাপতি অধ্যাপক ডেবি ব্র্যাডশ ও ডক্টর কেভিন ম্যাককরম্যাক। ডব্লিউএইচও বলেছে, বাংলাদেশে, বিশেষ করে ২০২০ সালের জুন-জুলাই-আগস্ট সময়ের মধ্যে, অতিরিক্ত মৃত্যুর হার প্রথমবার বৃদ্ধি পেয়েছে। ডব্লিউএইচও অনুমান করেছে, সাধারণ পরিস্থিতিতে প্রত্যাশিত মৃত্যুর চেয়ে, অতিরিক্ত ৩০ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে।
 
মহামারির প্রথম বছর শেষে বাংলাদেশে ৪৬ হাজার ৪১ জন মানুষের অতিরিক্ত মৃত্যু হয়েছিল। দ্বিতীয় বছর, এপ্রিল ১৪ হাজার ২৭৬ জনের, জুনে ১৩ হাজার ১৩ জনের, জুলাইয়ে ২০ হাজার ৩০ জনের এবং আগস্টে ১৮ হাজার ৯১৫ জনের অতিরিক্ত মৃত্যু হয়। ডব্লিউএইচও’র হিসাব অনুযায়ী, ২০২১ সালের ডিসেম্বর নাগাদ বাংলাদেশে অতিরিক্ত মৃত্যুর সংখ্যা এক লাখ ৪০ হাজার ৭৬৪ জনে পৌঁছেছে।
দেশকন্ঠ/রাসু

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।