দেশকন্ঠ প্রতিবেদন : খাদ্য উপযোগী পোকামাকড় চাষে খ্যাতি আছে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশ থাইল্যান্ডের। রাজধানী ব্যাংককসহ ছোটবড় বিভিন্ন শহরে একদিকে যেমন স্ট্রিটফুড হিসেবে জনপ্রিয়তার শীর্ষে আছে বিভিন্ন পোকামাকড় ভাজা, তেমনি পোকামাকড় চাষে কোটি কোটি ডলারের বিনিয়োগও রয়েছে দেশটিতে। সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখেই এবার ঝিঁঝি পোকার তৈরি বার্গার এনেছে থাইল্যান্ডভিত্তিক জনপ্রিয় চেইন ফাস্টফুড রেস্তোরাঁ বাউন্স বার্গার। বার্গারে যে মাংসের বড়াটি থাকে, সেটি বানাতে গরু, ভেড়া, ছাগল, শুকর, মুরগি বা মাছ ব্যবহৃত হয়। কিন্তু বাউন্স বার্গার রেস্তোরাঁ যে বার্গারটি বাজারে এনেছে, সেটির বড়া বানাতে ব্যবহার করা হয়েছে ঝিঁঝি পোকা।
রেস্তোরাঁটির অংশীদার পুপিপাত থিয়াপাইরাত এই বার্গার বাজারে আনার উদ্দেশ্য সম্পর্কে এএফপিকে বলেন, ‘রাস্তার পাশের স্ট্রিটফুড ব্যবসায়ীদের অনেকেই ঝিঁঝি পোকা ভাজা সয়া সস দিয়ে ক্রেতাদের পরিবেশন করেন, কিন্তু এই পোকা যে কেবল এই পদ্ধতিতেই খাওয়া সম্ভব— ব্যাপারটি এমন নয়।’ ‘এই পোকা দিয়ে বার্গারের বড়া বানানো যায়, বেকারি ও সফট কুকিজে ব্যবহার করা যায় এমনকি ফ্রেঞ্চফ্রাইয়ের সঙ্গে আমরা সে কেচাপ খাই, তাতেও এটি ব্যবহার করা সম্ভব।’ তবে ব্যাংককের স্ট্রিটফুডের দোকানগুলোতে যেভাবে ঝিঁঝিঁ পোকা ভাজা হয়, বার্গার তৈরিতে ব্যবহৃত ঝিঁঝিঁ পোকার প্রক্রিয়াজাতকরণ পদ্ধতি কিছুটা ভিন্ন বলে জানিয়েছেন থিয়াপাইরাত।
‘স্ট্রিটফুডের দোকানগুলোতে পুরো পোকাটিকেই ভাজা হয়। তবে বার্গার তৈরির ক্ষেত্রে পোকার পাখা-পাসহ অন্যান্য শক্ত অংশ বাদ দিয়ে কেবল মাংসল অংশটি রাখা হয়। এই ব্যাপারটি অনেকটা মাংস বা মাছের বড়া বানানোর সময় সেখান থেকে হাড়-কাঁটা ফেলে দেওয়ার মতোই।’ বাউন্স বার্গার রেস্তোরাঁর এই উদ্যোগ থাইল্যান্ডে আগত বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষণ করবে বলেও আশা করছেন অনেক রেস্তোরাঁ মালিক। পবন থেডথং নামের এক রেস্তোরাঁ মালিক এএফপিকে বলেন, ‘আমিষের সবচেয়ে কার্যকর উৎস হলো পোকামাকড়; এমনকি পশু-পাখির মাংসের থেকেও এটি উপকারী। কারণ পশু-পাখির মাংসে ক্ষতিকর কোলেস্টোরেল ও চর্বি থাকে, পোকা-মাকড়ে থাকে না।
‘কিন্তু আমরা খেয়াল করেছি, থাইল্যান্ডবাসীর কাছে পোকামাকড় ভাজা বেশ জনপ্রিয় স্ট্রিটফুড হলেও বেশিরভাগ বিদেশি পর্যটক এসবের দিকে ফিরেও তাকান না। সম্ভবত আস্ত পোকামাকড় ভাজা দেখতে তারা অভ্যস্ত নন, এ কারণেই এমন ঘটে।’ ‘আমার মনে হয়, পোকামাকড় দিয়ে যদি বার্গার বা এই জাতীয় খাবার বানানো যায়, সেক্ষেত্রে দেশীয়দের পাশাপাশি বিদেশি পর্যটকদের কাছেও বিকল্প এই আমিষের উৎস আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে।’
দেশকন্ঠ/অআ