♦ অনিরুদ্ধ ব্রতচারী
ঢাকায় তো সেই কবে থেকে থাকছেন, কখনো কি লক্ষ্য করেছেন যে—
১. অফিস শুরুর এবং ছুটি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শুরু এবং ছুটি এই দুই সময় রাস্তা যানবাহন ও মানুষে পূর্ণ থাকে। রিকশা খালি পাওয়া যায় না, বাসে উঠায় দায় হয়, কার, মাইক্রোবাস প্রচুর রাস্তায় নেমে যায়।
২. ওই দুই সময় বাদে বাকি সময় রাস্তায় মানুষ ও যানবাহন কম থাকে। রিকশা কমে যায় মূলত অলস সময় কাটায়। বাস স্টপেজে দাঁড়ালে নড়েনা যাত্রী খোঁজে হেলপার গলা ফেটে চিৎকার করে যাত্রী ডাকে। তবুও বাস টেম্পু ফাঁকা থাকে। খুব কম কার মাইক্রো চলে।
৩. দেখা যাচ্ছে প্রয়োজনের তুলনায় রিকশা, বাস, টেম্পু বেশি বলা যায়। কারণ রিকশা অমুক ভাই তুমুক ভাই রাস্তায় নামিয়ে দিচ্ছে। অন্যান্য শহর বা গ্রাম থেকে কাজের আশায় আসা লোকেরাও সে সব রিকশা নিয়ে রাস্তায় নেমে যাচ্ছে। ফলে রিকশা অনেক অনেক বেড়ে গেছে।
৪. রিকশার সংখ্যা বেশি হবার ফলে এরা কোথাও জট পাকালে দেখা যায় লম্বা সারি হয়ে যায়। তখন হেঁটে গেলে রিকশার আগেই যাওয়া যায়। যেখানে হেঁটে যাওয়া যায় সেখানে কি রিকশার প্রয়োজন আছে?
৫. বাস শুধু মেইন রাস্তা দিয়ে বিরাট লম্বা রুট করে চলে (যেমন গুলিস্তান টু মানিকগঞ্জ), ফলে যাত্রীকে বাস ধরতে বাসা থেকে রিকশা বা টেম্পুতে বাস স্ট্যান্ডে এসে বাস ধরতে হয়। ফলে রিকশা প্রয়োজন হয়েছে।
৬. ধরুন শ্যামলী থেকে রাইফেল স্কয়ার পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ বাস চালু করা যায় এবং বাস পাড়ার ভিতর দিয়ে এ গলি সে গলি (মেইন রাস্তা বাদ) দিয়ে যায় (কোথাও একমুখী, কোথাও উভয় দিকে) তাহলে আপনি বাসার পাশে বা বাসা থেকে ১/২ মিনিটের রাস্তা হেঁটে গিয়ে বাসে উঠে গন্তব্যে পৌঁছে যাবেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাওয়া খুব সুবিধা হবে। এরকম হলে রিকশার প্রয়োজন হবে না। (একটা বাসে যদি ৪০ জন যাত্রী উঠে তাহলে ২০ টি রিকশা লাগবে না, প্রাইভেট কার লাগবে না।)
৭. এরপর চিন্তা করুন রাস্তায় কোন রিকশা নেই ফলে রাস্তার গতি আছে ( রিকশা থাকলে যানবাহনের গতি খুব ধীর হয়ে যায়)। এবং কোথাও কোন ব্যাপক জট ও জ্যাম দেখতে পাবেন না। লাইফ গতি পাবে। ফলে মেইন রাস্তায় যানবাহনের চাপ কমে যাবে। যানজট অনেক কমে যাবে।
৮. রিকশার মাধ্যমে একেকটা পরিবারের আয় রোজগার হচ্ছে । অস্বীকার করছি না কিন্তু তাই বলে বিশৃংখলা কি চান? শহরে লোক সমাগম কমাতে হবে। শহরের উপকূলে এ ধরনের মানুষের জন্য সাশ্রয়ী বাসস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে । যেখান থেকে এসে শহরের ভিতরের কাজ বা প্রয়োজন মিটাবে।
৯. গ্রাম বা অন্য শহর থেকে মাইগ্রেন্ট হয়ে আসা বেকার ও আশ্রয়হীন লোকদের কর্মসংস্থান আছে এমন এলাকায় যেতে দিতে হবে। যে এলাকায় কর্মসংস্থান নেই সে এলাকায় অবস্থান নিষেধ করতে হবে।
১০. এই উদ্যোগ স্থানীয় নগর কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করবে। দুনিয়ায় অনেক শহর আছে যেখানে শহরের বাইরের অধিবাসী প্রবেশ করলে বা কোথাও অবস্থান করলে পুলিশকে সব তথ্য দিতে হয়।
১১. নগর কর্তৃপক্ষ এবং নগরের অধিবাসীদের উচিত নিয়মের মধ্যে দয়া দেখানো। তাহলে নাগরিক জীবন ভালোভাবে চলবে।
১২. নগরের জন্য যারা ট্যাক্স দেয় এবং ভোট দেয় তাদের সুবিধা, অসুবিধা নগর কর্তৃপক্ষের আগে বিবেচনা করা উচিত। তাহলে ভালো নাগরিক জীবন উপহার দিতে পারবে নগর কর্তৃপক্ষ।
দেশকণ্ঠ/আসো