• সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
    ৯ পৌষ ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ০১:২৭
টার্গেট ২০২৪ সাল

বিশ্বকাপের দলই তৈরি হয়নি বাংলাদেশের?

মোয়াজ্জেম হোসেন রাসেল
একটা বিশ্বকাপ খেলে আরেকটা টার্গেট করে বসে আছে বাংলাদেশ। চলমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগেই এমনটা জানিয়েছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। বাংলাদেশের লক্ষ্য নাকি ২০২৪ বিশ্বকাপ। সে হিসেবে চলমান আসরে কোন লক্ষ্য থাকার কথাও নয়। মাঠের ক্রিকেট অন্তত সেটাই প্রমাণ করছে।
 
নিউজিল্যান্ডের ত্রিদেশিয় সিরিজে চারটি ম্যাচের সবকটিতে পরাজিত হওয়ার পর বিশ্বকাপের প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচেও একই অবস্থায়। এবার আফগানিস্তানের কাছে হারটা ৬২ রানের বড় ব্যবধানে। কিউইদের মাটিতে যেমন করে পরীক্ষা চালানো হয়েছিল দল নিয়ে, এখন সেটি বিমানে চেপে চলে গেছে অস্ট্রেলিয়াও। কিন্তু কোন উন্নতি হচ্ছেনা টাইগার ক্রিকেটে। বিশেষ করে বিশ্বকাপের জন্য একটা দল তৈরি করতে পারেনি টিম ম্যানেজমেন্ট। নির্বাচকরাও বলছেন একেক সময় একেক কথা। এছাড়া বাংলাদেশের সেরা একাদশ কোনটা সেটাও পরিস্কার নয়। কারণ সবচেয়ে বেশি পরীক্ষা নিরিক্ষা চালানো হয়েছে ওপেনিং পজিশন নিয়ে। অন্ততঃপক্ষে চারজনকে দিয়ে চেষ্টা করিয়েও কোন ফল পাওয়া যায়নি। ঘুরেফিরে পুরনো নামগুলোই মনে করিয়ে দিতে চাইছেন কেউ কেউ। কারণ টি-টোয়েন্টি মানেই এখন বড়বেশি হতাশার নাম বাংলাদেশের জন্য। বলতেই হচ্ছে, কী আনুষ্ঠানিক ম্যাচ, কী প্রস্তুতি ম্যাচ-কিছুতেই যেন কিছু হচ্ছে না বাংলাদেশের। বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচে আফগানদের দেওয়া ১৬১ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে টেনেটুনে ৯৮ রান করে তারা। 
 
ব্রিসবেনের অ্যালান বোর্ডার স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে আফগানরা অধিনায়ক নবীর ১৭ বলে ৪১ রান ও ইব্রাহিম জাদরানের ৩৯ বলে ৪৬ রানে আফগানদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৭ উইকেটে ১৬০ রান। তাড়া করতে নেমে ফজল হক ফারুকী, মুজিব-উর-রহমানদের বোলিং তোপে বাংলাদেশ গুটিয়ে গেছে মাত্র ৯৮ রানে। শুরুতে ভালো কিছুর আভাস থাকলেও সেটা মিলিয়ে গেছে খুব দ্রুতই। লিটন দাসকে নিয়ে শঙ্কা থাকায় ইনিংস উদ্বোধন করেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও মেহেদী হাসান মিরাজ। কিন্তু ভাল কিছুর দেখা মেলেনি। তাইতো প্রশ্ন উঠেছে, এমন ব্যাটিং বিপর্যয়ের ব্যাখ্যা কী? অস্ট্রেলিয়ার উইকেটে নতুন বলে সুইং থাকবে। আফগানিস্তান দলে সুইংয়ে দক্ষ কেবল বাঁ-হাতি ফজল হক ফারুকি। তিনিই ধসিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইন আপ। ৩ ওভার হাত ঘুরিয়ে মাত্র ৯ রান দিয়ে শান্ত-সাকিবকে বোল্ড করেছেন। লেগ বিফোর হয়ে আফিফ হোসেন গোল্ডেন ডাক মেরেছেন। ফারুকির করা ইনিংসের তৃতীয় ওভারে রীতিমতো ধুঁকছিলেন ওপেনার মেহেদি মিরাজ। পঞ্চম বলে একমাত্র রানটি আসে লেগ বিফোরে। রান ঘাটতি পূরণ করতেই সম্ভবত ব্যাট চালানোর পূর্ব প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলেন ওপেনার শান্ত। বাঁ-হাতিদের বিপক্ষে খুবই শক্তিশালী ফারুকি। ভেতরে সুইং করাতে পটু। 
 
আর সেভাবেই নিঁখুত লেন্থের বল ছুঁড়লেন। সামান্য পা তুলে ক্রস ব্যাটে শট খেলতে গিয়ে বোল্ড শান্ত। পরের ওভারে একই চিত্র। স্পিনার মুজিব উরে সুবিধা করতে পারছিলেন না মিরাজ-সৌম্য। তবু প্রথম ৪ বলে আসে ৩ রান। পঞ্চম বলে রক্ষণাত্মক খেলতে গিয়ে ব্যর্থ হন সৌম্য। ইমপ্যাক্ট ব্যাটিং দেখাতে গিয়েই সম্ভবত ওভারের শেষ বলে উইকেট থেকে বেরিয়ে খেলতে যান তিনি। তার আত্মহত্যার পাশে লেখা ‘স্টাম্পিং’। ফারুকিকে মনে হয়েছে পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিন এক বোলার। পঞ্চম ওভারের শেষ দুই বলে সাকিব ও আফিফকে ফিরিয়ে বাংলাদেশের ইনিংসের ডানা ছেঁটে দেন ফারুকি। শান্তর আউটের মতো গুড লেন্থে বল ফেলে একইভাবে সুইং করান তিনি। একটু লাফিয়েও ওঠে। সাকিব ‘প্লে লেট’ অপশন বেছে নিয়েও বোল্ড হন। আর আফিফ ফুল লেন্থের বলটা বুঝতেই পারেননি। পুরো ম্যাচেই যেন একই চিত্র লক্ষ্য করা গেছে। টি টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশের দুর্বলতা নতুন কিছু না। আর তার অন্যতম কারণ ধুমধারাক্কা মেজাজে ব্যাটাররা ব্যাটিং করতে না পারা। 
 
স্কটল্যান্ড, নামিবিয়ার মতো আইসিসির সহযোগী দলগুলো যেখানে মারমুখি ব্যাটিং করে যাচ্ছে সেখানে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের সঙ্গে তাল মিলাতে ব্যর্থ টাইগার ব্যাটাররা। প্রথম ম্যাচের পর বাংলাদেশ দলের অলরাউন্ডার মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত বলেন, ’টি-টোয়েন্টি তে ১৩৫ স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করার মতো কেউ আমাদের কখনোই ছিল না। এই জায়গায় আমাদের উন্নতি করা খুবই প্রয়োজন। আমাদের কোচিং স্টাফ থেকে সবাই অনেক চেষ্টা করছেন। এখন ডেলিভার করার পালা। আমাদের টপ অর্ডাররা শীঘ্রই সেটা করবে বলে আমি বিশ্বাস করি। ইনশাআল্লাহ আমরা বিশ্বকাপে ভালো করবো’। কিন্তু ভাল করার প্রতিশ্রুতি দেয়ার পর বিশ্বাসটাও করতে পারছিলেন না কেউ। কোচিং কনসালটেন্ট হিসেবে শ্রীধরন শ্রীরাম টি-টোয়েন্টি দলের দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই চলছে দলের নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা। গত পরশুও তার ব্যতিক্রম হয়নি। লিটন দাসকে বিশ্রাম দেয়ায় তিন ম্যাচ পর ওপেনিংয়ে ফেরানো হয় মেহেদী হাসান মিরাজকে। তার সঙ্গী নাজমুল হোসেন শান্ত। এই দু’জনের ব্যর্থতা দিয়ে শুরু। শেষ মুহূর্তে মোসাদ্দেক ২৯ রান করে দলের কিছুটা হলেও মান রক্ষা করেন। কেন এই ম্যাচেও পরীক্ষা-নিরীক্ষা? ম্যাচ শেষে এমন প্রশ্নে নির্লিপ্ত উত্তর জাতীয় দলের নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নুর, ‘আমরা এখনই কিছু বলতে পারছিনা।’ এরপর মুচকি হাসিতে রেখে গেলেন অপার রহস্য! হয়তো তিনিও বুঝতে পারছেন না বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ম্যাচে আসার পরও কেন এত এত পরীক্ষা। সেখানে পুচকে দলও বাংলাদেশের কাছে হয়ে যাচ্ছেন বড় একটা পরীক্ষা। বিশ্বকাপে কি অপেক্ষা করছে সেই সংশয় কিন্তু থেকেই যাচ্ছে।
দেশকণ্ঠ/আসো

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।