• সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
    ৯ পৌষ ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ২১:২৯

প্রোটিয়াদের বিপক্ষে জয়ই লক্ষ্য বাংলাদেশের

মোয়াজ্জেম হোসেন রাসেল : বৃষ্টির শঙ্কা মাথায় নিয়ে আজকে দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নামছে বাংলাদেশ দল। অতি প্রয়োজনীয় সময়ে নেদারল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ে টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপ মিশন শুরু করেছে বাংলাদেশ। এর আগে টানা পরাজয়ের মধ্যে থেকে একরকম হাপিয়ে উঠেছিলেন খেলোয়াড়রা। সে কারণেই পথম জয়ের পর একটু শান্তির আশায় সিডনি অপেরা হাউজে ঘুরতে বেড়িয়েছিলেন সাকিব আল হাসানের দল। উইনিং মোমেন্টে থেকেই আজ দক্ষিন আফ্রিকার বিপক্ষে খেলতে নামছে লাল সবুজ প্রতিনিধিরা। প্রোটিয়ারা প্রথম ম্যাচে বৃষ্টি কারণে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচ থেকে এক পয়েন্ট পেয়েছে। ইংল্যান্ডকে ৫ রানে হারিয়ে অঘটন ঘটিয়েছে আয়ারল্যান্ড। যদিও এই ম্যাচে মাঠে নামার আগে কিছুটা নির্ভার শ্রীধরণ শ্রীরামের। এর আগে জয়ের স্বস্তি নিয়েই মঙ্গলবার সিডনিতে পা রেখেছে দল। ২৭ অক্টোবর সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। হোবার্টের মেঘলা আবহাওয়া থেকে সিডনির রৌদ্রোজ্জ্বল পরিবেশে এসে ফুরফুরে মেজাজে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা, ঘুরে বেড়িয়েছেন শহরের দর্শনীয় স্থাপনাগুলোতে। এই ম্যাচ দিয়ে বাংলাদেশ দলের ভেতরকার গুমোট পরিবেশ কেটেছে অনেকটাই। হোবার্ট থেকে সিডনিতে পা রেখে ঘুরতে বেরিয়েছিলেন লিটন দাস, নাজমুল হোসেন শান্ত, ইয়াসির রাব্বি, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতরা।
 
টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে শান্তকে নেওয়ার পর থেকেই সমালোচনা চলছে দল নির্বাচন নিয়ে। হোবার্টে ২০ বলে ২৫ রান করা শান্ত সেসবকে পাত্তা দিচ্ছেন না বলেই জানিয়েছেন গণমাধ্যমে। টি-টুয়েন্টির মাপকাঠিতে ইনিংসটা খুব যুৎসই কিছু নয়, তবে আশাবাদী শান্ত মিক্সড জোনে সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘সামনের ম্যাচে আরও ভাল হবে ইনশাল্লাহ। আমাকে নিয়ে সমালোচনা খুব গুরুত্বপূর্ণ নয়, আমরা ম্যাচ জিতেছি এটাই গুরুত্বপূর্ণ।’ ম্যাচ জিতলেও ব্যাটিংটা স্বস্তি দেয়নি। খেলা শেষে অধিনায়ক সাকিব আল হাসানও পুরস্কার বিতরণীতে এসে বলেছেন নিজের উদ্বেগের কথা, ‘আমরা ১০টা রান কম করেছি।’ তাসকিন আহমেদও ম্যাচপরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন ১০-১৫টা রান কম করার কথা। ১৪৪ থেকে আরেকটু বাড়িয়ে হয়তো ১৬০ রান করতে পারত বাংলাদেশ, তবে সিডনিতে এই রানটাও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে করা যাবে কীনা তা নিয়ে দুশ্চিন্তা কম নয়। কারণ সিডনিতে তো আর বাস ডি লিডি, ফ্রেডেরিক ক্লাসেনরা বোলিং করবেন না! দক্ষিণ আফ্রিকার পেস আক্রমণ বিশ্বেরই অন্যতম সেরা। তারা সবসময়ই সমীহ জাগানিয়া হিসেবে পরিচিত।
 
যার মধ্যে কাগিসো রাবাদা, লুঙ্গি এনগিদি, আইনরিখ নরকিয়াদের সামলেই রান করতে হবে সিডনিতে। জিম্বাবুয়ের সঙ্গে ম্যাচটা বৃষ্টিতে শেষ না হওয়ায় পয়েন্ট ভাগাভাগি করতে হয়েছে প্রোটিয়াদের। সিডনিতে তাই পূর্ণ পয়েন্টের জন্যই ঝাঁপাবে দক্ষিণ আফ্রিকা। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মাত্র ৩ ওভারেই ৫১ রান তুলে নিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা, বিধ্বংসী হয়ে উঠেছিলেন কুইন্টন ডি কক। দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং লাইনআপটাও লম্বা। রাইলি রুশো, এইডেন মার্করাম, ডেভিড মিলার, ত্রিস্তান স্টাবসরা টি-টুয়েন্টির ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে নিয়মিত মুখ। দেড়শোর ওপর স্ট্রাইক রেটে রান করেন নিয়মিত। দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়ে ওয়ানডে সিরিজ জিতে আসার আত্মবিশ্বাসটা টোটকা হিসেবে হয়তো কাজে দেবে বাংলাদেশের জন্য। লুঙ্গি-রাবাদাদের বিপক্ষে খেলেই ম্যাচ জিতিয়েছিলেন সাকিব, ইয়াসিররা। সিডনিতে ম্যাচটা শুরু স্থানীয় সময় দুপুর ২টায়। তাতে হয়তো উইকেটে আদ্রতা কমই থাকবে। এই মাঠে আগের ম্যাচেই ডেভন কনওয়ের দারুণ ব্যাটিংয়ে ২০০ রান করেছিল নিউজিল্যান্ড, এরপর অস্ট্রেলিয়া অলআউট হয় মাত্র ১১১ রানে। যদিও ম্যাচটা ছিল দিনরাতের, এই ম্যাচ থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে দলে বাড়তি একজন বামহাতি স্পিনার খেলাতে পারে বাংলাদেশ। 
 
কারণ মিচেল স্যান্টনারকে সেদিন ৩ উইকেট দিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। সিডনি মাঠের স্কয়ারের দিকে বাউন্ডারি বেশ ছোট, মাত্র ৬৮ মিটার আর মিডউইকেটে ৭৪ মিটার। বোলারদের জন্য রান আটকানো বেশ কঠিন। বিশেষ করে প্রতিপক্ষে যদি মিলার, রুশোর মতো ব্যাটসম্যানরা থাকেন। তবে ছোট বাউন্ডারি সুবিধাজনক হতে পারে বাংলাদেশের জন্যও। পাওয়ার হিটিং নয়, স্বাভাবিক খেলাটা খেললেই তো এই দূরত্ব পার করতে পারার কথা আফিফ, লিটনদের। মাত্র ৪ দিন আগেও যে দলটিকে ঘিরে ছিল নানা সমালোচনা, যাদের কাছ থেকে টি-টুয়েন্টি ফরম্যাটে ভালো পারফর্মেন্স দেখার বিষয়ে ছিল শঙ্কা, এখন সেই পরিস্থিতি নেই। একটা জয়ে পুরোপুরি বদলে গেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। নেদারল্যান্ডের বিপক্ষে এবার টি-টুয়েন্টি বিশ^কাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ৯ রানের জয়ের পর বাংলাদেশ দলকে ঘিরে আবার প্রত্যাশার ফানুস উড়তে শুরু করেছে। তাই দ্বিতীয় ম্যাচে একেবারে ‘নতুন’ এক বাংলাদেশ দল খেলতে নামবে এবার। সেজন্য প্রথমবার বাংলাদেশ দল এসেছে সিডনিতে। এখানেই ১৪০ বছরের পুরনো সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে শক্তিশালী দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সুপার টুয়েলভ পর্বে লড়াই সাকিবদের। প্রাথমিক রাউন্ড পেরোনোর পর টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপ মঞ্চে প্রথম জয় পেয়ে উজ্জীবিত বাংলাদেশ দল সিডনি পৌঁছেছে। এই জয় টানা ব্যর্থতার বৃত্তে বন্দি দলে তাই আবার স্বস্তির সুবাতাস বইছে। উজ্জীবিত ডাচদের হারাতে গিয়ে দুর্দান্ত বোলিং-ফিল্ডিংয়ের প্রদর্শনী দেখিয়েছেন সাকিবরা। যদিও ব্যাটিং নিয়ে আক্ষেপ থেকেই গেছে, কিন্তু ওপেনিং জুটি অনেক দিন পর সন্তুষ্টি দিয়েছে। সাকিব ও লিটন দাস ডাচদের বিপক্ষে ব্যাট হাতে সফল না হতে পারলেও ম্যাচটি জিতে বিশ^কাপে শুভ সূচনা হয়েছে। 
 
আর তাই এখন প্রোটিয়াদের বিপক্ষে দারুণ কিছু করার রসদ হিসেবে অন্তত আত্মবিশ্বাসটা পেয়েছে বাংলাদেশ। এছাড়া বোলিং-ফিল্ডিং যদি প্রথম ম্যাচের মতোই করতে পারেন ক্রিকেটাররা এবং সঙ্গে যোগ হয় ভাল ব্যাটিং শৈলী, সেক্ষেত্রে চরম অনিশ্চয়তায় ভরপুর টি-টুয়েন্টি ক্রিকেটে আরেকটি সাফল্য ধরা দিতেই পারে টাইগারদের। এখন বৃষ্টির শঙ্কা মাথায় নিয়ে ম্যাচটা যদি শেষ না হয় তাহলে রাভ হবে বাংলাদেশেরই। কারণ জয় যেখানে নিশ্চিত নয় সেখানে এক পয়েন্ট পাওয়াটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
দেশকণ্ঠ/আসো
 
 
 

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।