• সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
    ৯ পৌষ ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ২০:৪৪

ওয়েস্ট ইন্ডিজের পর সফলতম দল এখন ইংল্যান্ড

স্পোর্টস রিপোর্টার : একটা সময় ক্রিকেট বিশ্ব শাষন করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেই দিনে ভাটা পড়েছে। ১৯৭৫ ও ১৯৭৯ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ জিতে অনন্য হয়ে আছে ক্যারিবীয়রা। এছাড়া ক্রিকেটে সংক্ষিপ্ত সংস্করণ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেরও দুটি শিরোপা জিতেছে ক্রিস গেইল, ডারেন সামিরা। দুটি ওয়ানডে বিশ্বকাপ ও সমান সংখ্যক টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা জয়ী দেশটি এবার মূল পর্বেই খেলতে পারেনি। প্রথম পর্ব থেকে বাদ পড়ে নিকোলাস পুরানের দলটি। এবার উইন্ডিজ দলের সমমান হয়েছে ইংল্যান্ড, সেটি দুটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের মাধ্যমে। ২০১৯ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ জয়ের পর ইংলিশরা জিতল ২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা। বিশেষ করে ওয়ানডের পর টানা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপাজয়ী দলটির নাম এখন ইংল্যান্ড। সাফল্যের কারণে সফল দলেরও তকমাও লেগে গেছে দলটির। অথচ জস বাটলারের দলটি সুপার টুয়েলভে আয়ারল্যান্ডের কাছে পরাজিত হয়েছিল। এই ম্যাচটাই নাকি বিশ্বজয়েল মূল মন্ত্র বলছেন দলটির ক্রিকেটাররা। বিশ্বকাপ জয়ের জন্য অন্যতম ফেভারিটই ধরা হয়েছিলো তাদের। ফেভারিট তকমারত যথার্থতা প্রমাণ করেই ফাইনালে উঠে এসছে ইংল্যান্ড। মাঝে বৃষ্টি আইনে আয়ারল্যান্ডের কাছে ৫ রানে হেরে অঘটনের শিকার হলেও বাকি ম্যাচগুলোতে একচ্ছত্র আধিপত্য দেখিয়েই ফাইনালে পাকিস্তানের বিপক্ষে শিরোপার লড়াইয়ে নামছে জস বাটলারের ইংল্যান্ড। টুর্নামেন্টজুড়ে দারুণ খেলার ধারাবাহিকতা ধরে রেখেই ফাইনালের মঞ্চে উঠে এসেছে ইংলিশরা। 
 
এবারের টি-টোয়েন্টি র‌্যাংকিংয়ের সেরা আট দল আগেই সুপার টুয়েলভ নিশ্চিত করেছিল। সুপার টুয়েলভের আট দলের সঙ্গে প্রথম রাউন্ডের সেরা চার দল যোগ দেয়। সুপার টুয়েলভে দুই গ্রুপে ১২ দলের লড়াইয়ের পর সেরা চার দল সেমিতে উঠে। সেমির লড়াইয়ে জিতে এবার বিশ্বকাপের সেরা দুই দল হিসেবে ফাইনালের মঞ্চে ইংল্যান্ড ও পাকিস্তান। এই জয়ে সবচেয়ে বড় অবদান বেন স্টোকস নামের একজনের। ভারতের মাটিতে ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠেছিল ইংল্যান্ড। ফাইনালে প্রতিপক্ষ সেমিফাইনালে স্বাগতিক ভারতকে হারানো চ্যাম্পিয়ন গানে নাচতে থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ৪ উইকেটে হেরে যায় ইংল্যান্ড। প্রথমে ব্যাট করে জো রুটের অর্ধশতকে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৫৫ রান সংগ্রহ করে ইংল্যান্ড। ১৫৬ রানের টার্গেটে ব্যাট করে ২ বল হাতে রেখে ৪ উইকেটের জয়ে দ্বিতীয়বারের মতো শিরোপা জয়ের উৎসবে মাতে ক্যারিবিয়ানরা। ১৫৬ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ১৯ ওভার শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৩৭ রান সংগ্রহ করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শেষ ওভারে জয়ের জন্য শেষ ওভারে ১৯ রান প্রয়োজন হয় ক্যারিবিয়ানদের। শেষ ওভারে বোলিংয়ে আসেন ইংলিশ অলরাউন্ডার বেন স্টোকস। ব্যাট হাতে স্ট্রাইকে ছিলেন ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার কার্লোস ব্রাথওয়েট। অনেকেই ধরেই নিয়েছিলেন ম্যাচটা জিততে চলছে ইংল্যান্ড। 
 
তবে বেন স্টোকসের পর পর তিন বলে তিন ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচ শেষ করে দেন ব্রাথওয়েট। হাতের নাগালে থাকা ম্যাচ ছিটকে যায় ইংল্যান্ডের কাছে থেকে। শেষ ৩ বলে ১ রান প্রয়োজন হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজের। শেষ বলেও ছক্কা হাঁকিয়ে চ্যাম্পিয়ন গানের সঙ্গে পুরো ক্যারিবিয়ান দলের সঙ্গে নাচতে থাকেন ব্রাথওয়েট। অন্যদিকে এমন বেধড়ক মার খেয়ে হতাশায় মাথায় হাত দিয়ে মাঠেই বসে পড়েন স্টোকস। এরপর সতীর্থরা এসে তাকে সান্ত্বনা দেন। সেই ম্যাচে শেষ ওভারে বোলিংয়ে এসে হয়েছিলেন খলনায়ক। এরপর অবশ্য তার স্টোকস পাপমোচন করেন ২০১৯ সালে ঘরের মাটিতে অনুষ্ঠিত ওয়ানডে বিশ্বকাপে। ২০১৯ সালের বিশ্বকাপের ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অনবদ্য ইনিংস খেলে ইংল্যান্ডকে প্রথমবারের মতো ওয়ানডে বিশ্বকাপ এনে দেন বেন স্টোকস। ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের দেওয়া ২৪২ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে চাপে পড়ে যায় ইংল্যান্ড। তবে স্টোকসের হার না মানা ৯৮ বলে ৮৪ রানের ওপর ভর করে ম্যাচ টাই করে ইংল্যান্ড। শেষ পর্যন্ত সুপার ওভারে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো ওয়ানডে বিশ্বকাপের স্বাদ পায় ইংল্যান্ড। তবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে হারের ক্ষত থেকেই গিয়েছিল স্টোকসের মনে। আর তাই এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে ব্যাট হাতে দলকে শিরোপা এনে দিলেন স্টোকস। অথচ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে তাকে নেওয়ায় তুমুল বিতর্ক হয়েছিল। কারণ জাতীয় দলে থাকার মতো ফর্মও তার ছিলনা।
 
ইংল্যান্ড টেস্ট অধিনায়ক বেন স্টোকসকে ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের বিশ্ব আসরে নেওয়াটা মানতে পারেননি দেশটির বেশিরভাগ সাবেক ক্রিকেটাররা। কেউ কেউ তো বলেছিলেন, স্টোকস এবার ইংল্যান্ডকে ডোবাবে। কিন্তু সেই স্টোকসের ব্যাটই ফাইনালে ভাসিয়ে তুলল ইংল্যান্ডকে। অপরাজিত ইনিংস খেলে ২০১৯ সালের পর আবারও ইংল্যান্ডকে বিশ্বকাপ এনে দিলেন এই তারকা অলরাউন্ডার। তিন বছরের মধ্যে দুটি বিশ্বকাপ জিতল ইংল্যান্ড। ২০১৯ সালে নিউজিল্যান্ডকে বিতর্কিত আইনে হারিয়ে তারা ওয়ানডে বিশ্বকাপ জিতেছিল। ওই ম্যাচে ২৪২ রান তাড়া করতে নেমে ৭৬ রানে চার উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল ইংল্যান্ড। সেখান থেকে হাল ধরেন স্টোকস এবং জস বাটলার। ৯৮ বলে অপরাজিত ৮৪ রানের ইনিংস খেলে স্টোকস দলকে নিয়ে যান জয়ের বন্দরে। স্কোর লেভেল হওয়ার পর সুপার ওভারেও দুই দলের স্কোর সমান ছিল। শেষে বেশি বাউন্ডারি মারার বিতর্কিত আইনে চ্যাম্পিয়ন হয় ইংল্যান্ড। এবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালেও বেন স্টোকসের অবদান অনস্বীকার্য। যদিও ম্যাচ এবং সিরিজসেরা হয়েছেন স্যাম কারেন। কিন্তু স্টোকসের ৪৯ বলে ৫ চার ১ ছক্কায় ৫২ রান ইংল্যান্ডের জন্য বিশেষ কিছু। ছোট টার্গেট তাড়ায় নেমে ৪৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল ইংল্যান্ড। বল হাতে আগুন ঝরাচ্ছিলেন পাকিস্তানের পেসাররা। সেই অবস্থা থেকে দলের হাল ধরে ম্যাচ শেষ করে আসেন স্টোকস। তার হাত থেকেই আসে উইনিং শট। এর আগে বল হাতেও নিয়েছেন ৩২ রানে ১ উইকেট। প্রকৃত অলরাউন্ডার বুঝি একেই বলে। দলকে বিপদের মুখ থেকে উদ্ধার করতেই যেন সিদ্ধহস্ত তারা।
দেশকণ্ঠ/আসো
 

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।